দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম টেস্টের দলে নেই সাকিব। কিন্তু না থেকেও যেন প্রবলভাবে থাকলেন সাকিব আল হাসান। ক্যারিয়ারের শেষ টেস্ট খেলার আগের দিন এই সংবাদ সম্মেলনে হয়তো সশরীরেই থাকতেন তিনি। কিন্তু বদলে গেছে প্রেক্ষাপট। সাকিব এখন স্কোয়াডের বাইরে। দেশের ক্রিকেট আর দেশ থেকেই অনেক দূরে। তবু শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের সংবাদ সম্মেলন কক্ষে তার উপস্থিতি টের পাওয়া গেল বারবার। তার নাম এলো ঘুরেফিরে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শুরুর আগের দিন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর দীর্ঘ সংবাদ সম্মেলনে সাতটি প্রশ্ন ছিল সরাসরি বা পরোক্ষভাবে সাকিব–সংক্রান্ত। আরও নানাভাবে উঠে এলে তার নাম। বিদায়ী টেস্ট খেলতে সাকিব দেশে আসতে না পারায় হতাশার কথা বললেন শান্ত। এমন একজন অলরাউন্ডার না থাকলে একাদশ সাজানোয় গলদঘর্ম হওয়া, দলের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার কথাও তুলে ধরলেন অধিনায়ক। বললেন সাকিবের সম্ভাব্য বিকল্পের কথাও। এবার না হলেও দেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটারের বিদায় দেশ থেকে হওয়ার সম্ভাবনা এখনও দেখেন শান্ত। সাকিবকে নিয়ে পক্ষে–বিপক্ষে নানা কর্মসূচি–আন্দোলনে যা অবস্থা, তাতে গত কিছুদিনে দেশের ক্রিকেটীয় আবহে ক্রিকেট ব্যাপারটিই ছিল না। সেটি স্বীকার করেই শান্ত বললেন, তাদের চেষ্টা ছিল ক্রিকেটে মনোযোগ ধরে রাখার। শান্ত জানান সত্যি কথা বলতে কি, আমার মনে হয়,এটা আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। এসব নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করা মানে তাই সময় নষ্ট। যত বেশি সম্ভব খেলাটায় মনোযোগ রাখতে চাই। কারণ খুব গুরুত্বপূর্ণ দুটি টেস্ট ম্যাচ। আমার মনে হয়, ক্রিকেটাররা সেদিক থেকে খুব ভালোভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং চেষ্টা করছে সেটায় মনোযোগ রাখার। শুরুতে সাকিবকে নিয়েই মিরপুর টেস্টের বাংলাদেশ স্কোয়াড ঘোষণা করা হয়েছিল। দেশের সেরা তারকার বিদায় রাঙাতে নানা পরিকল্পনাও ছিল শান্তদের। সেটা আপাতত পাওনা রয়ে গেল বলেই মনে করেন অধিনায়ক। এটাতো পরিকল্পনাতে ছিলই। আমার মনে হয়, বিশ্বের সেরা ক্রিকেটারদের একজন তিনি। শুধু বাংলাদেশের বলব না, বিশ্বের সেরাদের একজন। তবে এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক, যে দেশ থেকে বিদায়টা হচ্ছেনা সাকিবের। আমি ব্যক্তিগতভাবে অনুভব করি ও আমাদের প্রতিটি ক্রিকেটার অনুভব করে যে, এটা পেন্ডিং থেকেই গেল। তবে এটা হওয়া উচিত ছিল। আমরা সবাই জানি এটা কেন হয়নি। এটা নিয়ে আসলে টেস্ট ম্যাচের আগের দিন বেশি কথা আর এগোতে চাই না। আমি চাই সবাই খেলাটায় মনোযোগ রাখুক। যে কোনো সংস্করণেই গত প্রায় দেড় যুগে যখন সাকিবকে পায়নি দল, তখনই দলের ভারসাম্যে টান পড়েছে ভালোভাবে। একই সঙ্গে বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান আর বিশেষজ্ঞ বোলার বাংলাদেশের ক্রিকেটেতো আর একজনও নেই। বিশ্ব ক্রিকেটেও বিরল। এই শেষ বেলায় এসেও সাকিবকে না পাওয়া মানে কতটা শূন্যতা, সেটি ফুটে উঠল অধিনায়কের কথায়। তিনি বলেন এখনও সমস্যা হচ্ছে কম্বিনেশন মেলাতে। অস্বীকার করার কিছু নেই। হয়তো এই জায়গাটি ঠিক করতে আমাদের আরও বেশ কিছুদিন সময় লাগবে। তবে এটা নিয়ন্ত্রণে নেই। আমাদের ওইভাবেই ম্যানেজ করতে হবে এবং যে ক্রিকেটাররা আছে সবার ওই সামর্থ্য আছে। যার যার ভূমিকা পালন করবে। আশা করব, যে কম্বিনেশন খেলবে, তারা সবাই যার যার জায়গা থেকে শতভাগ দেবে।