শাটারে হাত রেখে দাঁড়িয়ে দোকানি

চোখ-কান খোলা রেখে বেচাবিক্রির চেষ্টা

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ২ জুলাই, ২০২১ at ৬:১৯ পূর্বাহ্ণ

শাটারে হাত রেখে দাঁড়িয়ে থাকেন। কাস্টমার আসলে বেচাবিক্রি করেন। চোখ থাকে রাস্তায়। পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেট দেখলে শাটার নামিয়ে দেন। চকবাজারের চক ফেন্সি নামের হাঁড়ি পাতিলের দোকানদার সরুজ মিয়ার নিত্য দিনের কাজে যোগ হয়েছে এ রুটিন। সীমিত লকডাউন পেরিয়ে কঠোর লকডাউন আসলেও তার দোকান বন্ধ হয়নি। কঠোর লকডাউনের প্রথম দিন তথা গতকাল বৃহস্পতিবারও শাটার হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে তাকে। শুধু সরুজ মিয়া নয়, এ চিত্র দেখা গেছে নগরজুড়ে। মূল রাস্তার চেয়ে অলিগলিতে বেশি দেখা গেছে এমন চিত্র।
সরুজ মিয়ার কথা হলো শাটার খোলা রাখলে বিপত্তি রয়েছে। পুলিশ ডিস্টার্ব করছে। ম্যাজিস্ট্রেটও এসে দোকান বন্ধ করতে বলেন। লকডাউন চলছে, দোকান কেন খুলছেন এমন প্রশ্নে বলেন, ‘ব্যবসা তো করতে হবে, না হয় খাবো কী? এমনিতে অনেক দিন ধরে ব্যবসার অবস্থা ভালো যাচ্ছে না। তাই চোখ কান খোলা রেখে বেচাবিক্রি কিছু করার চেষ্টা করি। তবে পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেট দেখলে শাটার নামিয়ে ফেলি।’ গুলজার মোড়, কাতালগঞ্জ, ডিসি রোড, দিদার মার্কেট, চট্টেশ্বরী মোড়সহ নগরীর বেশ কিছু এলাকা সরেজমিনে গিয়ে এ চিত্র দেখা যায়। বিশেষ করে অলি-গলির ভেতরের চিত্র ছিল চোখে পড়ার মত। পুলিশ আছে, আছে ম্যাজিস্ট্রেট, দোকানপাট বন্ধ। পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেট চলে যায় তো শাটার তোলা শুরু হয়। এইতো গেল শাটার খোলা, নামানোর গল্প।
শাটারের সামনে উৎসুক লোকজনকেও দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। তারা কেনাকাটা করবেন। অতি প্রয়োজনীয় নয়, এরপরও। বাড়ীর আসবাবপত্র কিনতে বের হওয়া একাধিক লোকের কাছে জানতে চাইলে তারা আজাদীকে বলেন, ভোক্তা শুধু মাছ, সবজি কেন্দ্রিক নয়। ভোক্তার কোনটা প্রয়োজনীয়, কোনটা অপ্রয়োজনীয় সেটা কিভাবে বুঝবেন!
ময়লা ফেলার ঝুড়ি নষ্ট হয়ে গেছে। সেটি কিনতে বের হয়েছি জানিয়ে কাতালগঞ্জের বাসিন্দা ইয়াসমিন আক্তার বলেন, বাড়িতে প্রতিদিনই ময়লা জমে। হঠাৎ দেখি ময়লার ঝুড়ি নষ্ট হয়ে গেছে। সেটি তো প্রয়োজনীয়। সেই প্রয়োজনের তাগিদে বাড়ি থেকে বের হওয়া। ময়লা নিয়ে তো বসে থাকা যায় না। একদিন পার হলেই তো দুর্গন্ধ ছড়াবে।

ত্রিশ বছর বয়সী আনোয়ারকে দেখা গেছে আম বিক্রি করছে। ‘মানুষের চাহিদা রয়েছে। চলছে আমের সিজন। আমগুলোও কয়েকদিন পার হলে নষ্ট হয়ে যাবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিক্রি করে ফেলতে হবে।’ জানতে চাইলে আজাদীকে জানালেন আনোয়ার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগরিবের সেবা বন্ধ, পরে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে চালু
পরবর্তী নিবন্ধবন্দরে বছরে ৩০ লক্ষাধিক কন্টেনার হ্যান্ডলিং