চ্যানেল আই–এর বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে প্রতারণা, চাঁদাবাজি, অর্থ আত্মসাৎ এবং প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ এনে মামলা করেছেন স্বর্ণ–কিশোরী অনুষ্ঠানের চেয়ারম্যান এবং চ্যানেল আই–এর সাবেক উপস্থাপিকা ফারজানা রশীদ ব্রাউনিয়া। গতকাল বুধবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে দায়ের করা এ মামলায় ব্রাউনিয়া অভিযোগ করেছেন, আসামিরা তার পাওনা মাসিক মজুরি দীর্ঘদিন ধরে পরিশোধ না করে প্রতারণা করেছেন এবং তাকে ৫০ কোটি টাকা চাঁদা দেওয়ার জন্য হুমকি দিয়েছেন। খবর বিডিনিউজের।
অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম হাসিবুল হক মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছেন এবং তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন, আওয়ামী লীগ নেতা জহির উদ্দিন মাহমুদ মামুন, মুকিত মজুমদার বাবু, আব্দুর রশিদ মজুমদার পারভেজ ও রিয়াজ আহম্মেদ খান।
ফারজানা রশীদ ব্রাউনিয়ার অভিযোগ, তিনি ২০১৪ সালে চ্যানেল আইতে ম্যানেজার (ইভেন্ট) হিসেবে যোগ দেন। তার মাসিক বেতন ছিল ১ লাখ টাকা। চ্যানেল আইয়ের জন্য তিনি ‘স্বর্ণ–কিশোরী’ নামে একটি অনুষ্ঠান পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেন, যা দেশে ও বিদেশে জনপ্রিয়তা পায়। কিন্তু ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময়ে তিনি শিক্ষার্থীদের সমর্থন করায়, কোনো নোটিস ছাড়াই তাকে চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়। চ্যানেল আই কর্তৃপক্ষ মৌখিকভাবে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, লিখিত বরখাস্ত আদেশ না হওয়া পর্যন্ত তার বেতন তাকে দেওয়া হবে। কিন্তু ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে আজ পর্যন্ত সেই পাওনা পরিশোধ করা হয়নি বলে ব্রাউনিয়ার ভাষ্য। মামলায় দাবি করা হয়েছে, ব্রাউনিয়ার বকেয়া বেতনের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৯ লাখ টাকা এবং উৎসব ভাতাসহ মোট ৭৯ লাখ টাকা তার পাওনা।
ফারজানা রশীদ ব্রাউনিয়া অভিযোগ করেছেন, গত ৭ সেপ্টেম্বর যখন তিনি তেজগাঁও থেকে বাসায় ফিরছিলেন, তখন ‘শাইখ সিরাজের নির্দেশে’ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা তার গাড়ি থামায় এবং ‘৫০ কোটি টাকা চাঁদা’ দাবি করে। তারা হুমকি দেয়, যে কোনো আইনি ব্যবস্থা নিলে তাকে ‘হত্যা করা’ হবে।
ব্রাউনিয়া তার আর্জিতে বলেছেন, শাইখ সিরাজ এবং অন্য আসামিরা আওয়ামী লীগের ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের সঙ্গে যুক্ত থেকে’ কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে কাজ করেছেন এবং স্বর্ণ–কিশোরী অনুষ্ঠানটি বন্ধ করে তার ক্যারিয়ারে ও আর্থিক জীবনে ক্ষতি সাধন করেছেন।
শাইখ সিরাজ ভারতীয় গোপন সংস্থা ‘র’ এর এজেন্টদের সঙ্গে মিলে ‘ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন’ এবং ‘অবৈধভাবে সম্পদ আত্মসাৎ’ করেছেন বলেও মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে। জানতে চাইলে শাইখ সিরাজ বলেন, এটা স্্েরফ মিথ্যা মামলা। হয়রানিমূলক ও বানোয়াট মামলা। আমরা আইনজীবীর মাধ্যমে এ নিয়ে কথা বলব।