শহীদ নূর হোসেন দিবস বাংলাদেশের একটি জাতীয় দিবস। ১৯৮৭ সালের এরশাদবিরোধী আন্দোলনে শহীদ নূর হোসেনের স্মরণে প্রতি বছর ১০ নভেম্বর দিনটি পালন করা হয়। নূর হোসেন পেশায় একজন অটোরিকশা চালক ছিলেন। আন্দোলনের সময় তিনি বুকে ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক’ এবং পিঠে ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ স্লোগান লিখে মিছিলে যোগ দেন এবং একপর্যায়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হন। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নূর হোসেন নিহত হওয়ার দিনটিকে পালন করে। দিনটিকে প্রথমে ঐতিহাসিক ১০ নভেম্বর হিসেবে পালন করা হলেও, বর্তমান সরকার দিনটিকে ‘নূর হোসেন দিবস’ হিসেবে পালন করে থাকে। নূর হোসেন (১৯৬১–১৯৮৭)। তাঁর পৈতৃক বাড়ি পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার ঝাটিবুনিয়া গ্রামে। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর তাঁর পরিবার স্থান পরিবর্তন করে ঢাকার ৭৯/১ বনগ্রাম রোডে আসে। পিতা মুজিবুর রহমান ছিলেন পেশায় অটোরিকশা চালক। তাঁর মায়ের নাম মরিয়ম বিবি। অর্থনৈতিক অসচ্ছলতার কারণে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর নূর হোসেন পড়াশোনা বন্ধ করে গাড়ির ড্রাইভার হিসেবে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। নূর হোসেন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। তিনি ঢাকা জেলা আওয়ামী মটর চালক লীগের বনগ্রাম শাখার প্রচার সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। নূর হোসেনের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১৯৯১ সালে তার চতুর্থ মৃত্যুবাষির্কী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রথম দুই টাকা মূল্যের স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশিত হয়। প্রতি বছরের ১০ই নভেম্বর বাংলাদেশে ‘নূর হোসেন দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। এছাড়া তিনি যে স্থানে পুলিশের গুলিতে নিহত হন, তাঁর নামানুসারে সেই জিরো পয়েন্টের নামকরণ করা হয়েছে নূর হোসেন চত্বর। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ নূর হোসেনের একটি মুরাল রয়েছে। ১০ই নভেম্বর তাঁর মৃত্যুর কিছু সময় পূর্বে তোলা তাঁর গায়ে লেখাযুক্ত আন্দোলনরত অবস্থার ছবিটি বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের এক গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়।