গল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়টা ছিল স্বাগতিক শ্রীলংকার। আর সেটিও মাত্র ২৬৮ রানের। এবারে পাকিস্তানের সামনে তাই লক্ষ্য ছিল পাহাড় সমান। আর লক্ষ্য টপকাতে ইতিহাস গড়তে হতো বাবর আজমদের। শেষ পর্যন্ত সে ইতিহাস গড়েই জয় তুলে নিল পাকিস্তান ৩৪২ রানের পাহাড় ডিঙ্গিয়ে। আর পাকিস্তানের ইতিহাস গড়ার নায়ক ওপেনার আবদুল্লাহ শফিক। এক প্রান্ত আগলে রেখে খেললেন শেষ পর্যন্ত।
তার অপরাজিত ১৬০ রানের ইনিংসের উপর ভর করে ৪ উইকেটের ঐতিহাসিক জয় নিয়ে সিরিজ শুরু করল পাকিস্তান। অথচ গল আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে দুইশ রান তাড়া করার রেকর্ড ছিল না কোনো সফরকারী দলের। পাকিস্তান সেখানে তিনশর বেশি রানের লক্ষ্যে জিতে গড়ল ইতিহাস। পাকিস্তানের টেস্ট ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয় এটি। ২০১৫ সালে শ্রীলংকার মাটিতেই তারা গড়েছিল ৩৭৭ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড। এই জয়ে দুই টেস্টের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল বাবর আজমের দল। অবশ্য জয়ের ভিত আগের দিনই গড়ে ফেলেছিল পাকিস্তান। ম্যাচের পঞ্চম ও শেষ দিন তাদের প্রয়োজন ছিল ১২০ রান।
হাতে ছিল ৭ উইকেট। তবে শেষ দিনে লংকান স্পিনার প্রবাত জয়সুরিয়া চেষ্টা করেছিলেন পাকিস্তানকে রুখে দিতে। কিন্তু আবদুল্লাহ শফিকের দৃঢ়তায় হাসি ফোটে পাকিস্তানের মুখে।
ইনিংস শুরু করতে নেমে ১৬০ রান করে দলের জয় সঙ্গে নিয়ে মাঠ ছাড়েন শফিক। ৪০৮ বল ও ৫২৪ মিনিট স্থায়ী ইনিংসটি সাজান তিনি এক ছক্কা ও ৭ চারে। দুর্দান্ত এই পারফরম্যান্সের কারণে ম্যাচ সেরা হয়েছেন শফিক। ৬ টেস্টের ক্যারিয়ারে শফিকের এটা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। টপ অর্ডার এই ব্যাটসম্যানের আগের সেঞ্চুরিটি ছিল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অপরাজিত ১৩৬। চতুর্থ ইনিংসে শফিকের এই ইনিংস পাকিস্তানের হয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ।
গত মার্চে অধিনায়ক বাবর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলেছিলেন ১৯৬ রানের ইনিংস। আর ২০১৫ সালে ইউনিস খান করেছিলেন অপরাজিত ১৭১ রান। আগের দিনের ৩ উইকেটে ২২২ রান নিয়ে খেলতে নেমে রিজওয়ানের বিদায়ে ভাঙে ৭১ রানের জুটি। ৪০ রান করা পাকিস্তান কিপার-ব্যাটসম্যানকে ফেরান প্রবাথ জয়াসুরিয়া। লাঞ্চের আগে ও পরে দুই ওভার মিলিয়ে অভিষিক্ত আগা সালমান ও হাসান আলিকে হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে যায় পাকিস্তান। তবে এরপর শফিক এবং নওয়াজ মিলে আর কোন সমস্যা হতে দেয়নি। যদিও জয়ের জন্য যখন পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ১১ রান তখন হানা দেয় বৃষ্টি। এরপর খেলা শুরু হলে মোহাম্মদ নওয়াজ ও শফিকের ব্যাটে কোনো বিপদ ছাড়াই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় পাকিস্তান।