শনাক্তে নতুন রেকর্ড

আজাদী ডেস্ক

দেশে একদিনেই করোনা রোগী ৬৪৬৯ ২৪ ঘণ্টায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৯ জনের মৃত্যু | শুক্রবার , ২ এপ্রিল, ২০২১ at ৫:২৫ পূর্বাহ্ণ

দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্তে নতুন রেকর্ড হয়েছে। একদিনেই ৬ হাজার ৪৬৯ জনের মধ্যে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এছাড়া ২৪ ঘণ্টায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মৃত্যু হয়েছে আরও ৫৯ জনের। এর আগে গত বছরের ৩০ জুন দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছিল ৬৪ জনের। এদিকে নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৬ লাখ ১৭ হাজার ৭৬৪ জনে। আর গত এক দিনে মারা যাওয়া ৫৯ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট ৯ হাজার ১০৫ জনের মৃত্যু হল। এক দিনে শনাক্ত রোগীর এই সংখ্যা দেশে মহামারী শুরুর পর থেকে সর্বোচ্চ। বাংলাদেশে গত বছর ৮ মার্চ করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার এক বছর পর গত সোমবার প্রথমবারের মত এক দিনে পাঁচ হাজারের বেশি নতুন রোগী শনাক্তের খবর আসে। তার মধ্য দিয়ে দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছয় লাখ ছাড়িয়ে যায়। তিন দিনের মাথায় দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছয় হাজারও ছাড়িয়ে গেল। দৈনিক মৃত্যুর এই সংখ্যা মহামারী শুরুর পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসে প্রথম মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছিল সরকার, বুধবার তা নয় হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু। খবর বিডিনিউজের
টানা কয়েক দিন ধরে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হারও বেড়ে ২২ দশমিক ৯৪ শতাংশ হয়েছে যা গত ৯ আগস্টের পর সর্বোচ্চ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে গত এক দিনে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ২ হাজার ৫৩৯ জন
রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তাতে এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ৪৪ হাজার ৯৩৮ জন হয়েছে।
বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ১২ কোটি ৯০ লাখ পেরিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৮ লাখ ১৭ হাজার। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩৪তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৪০তম অবস্থানে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে মোট ২২৪টি ল্যাবে ২৮হাজার ১৯৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৪৬ লাখ ৯৮ হাজার ৭৭৪টি নমুনা। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৯৪ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ১৫ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৮ দশমিক ২১ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৭ শতাংশ। সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৫ লাখ ৫২ হাজার ৭৮৮টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ১১ লাখ ৪৫ হাজার ৯৮৬টি।
গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ৩৫ জন পুরুষ আর নারী ২৪ জন। তাদের মধ্যে ২ জন বাড়িতে মারা গেছেন। বাকীরা হাসপাতালে মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ৩০ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ১৩ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরে মধ্যে, ১১ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৪ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এবং ১ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল। মৃতদের মধ্যে ৪০ জন ঢাকা বিভাগের, ৫ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ২ জন রাজশাহী বিভাগের, ৪ জন খুলনা বিভাগের, ১ জন বরিশাল বিভাগের, ৫ জন সিলেট বিভাগের এবং ২ জন রংপুর বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৯ হাজার ১০৫ জনের মধ্যে ৬ হাজার ৮৪৭ জনই পুরুষ এবং ২ হাজার ২৫৮ জন নারী। তাদের মধ্যে ৫ হাজার ৯০ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ২ হাজার ২৪৮ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ১ হাজার ৩০ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৪৫৩ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১৭৯ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৬৭ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ৩৮ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম। মৃতদের মধ্যে ৫ হাজার ১৯২ জন ঢাকা বিভাগের, ১ হাজার ৬৪৫ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৫০৬ জন রাজশাহী বিভাগের, ৫৮৬ জন খুলনা বিভাগের, ২৭৪ জন বরিশাল বিভাগের, ৩২৫ জন সিলেট বিভাগের, ৩৭৪ জন রংপুর বিভাগের এবং ২০১ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনগরজুড়ে পুলিশের প্রচারণা
পরবর্তী নিবন্ধউখিয়ার কুতুপালং বাজারে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৩