এইচএসসি পরীক্ষায় এবার চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অংশ নেওয়া ২৮২টি কলেজের মধ্যে শতভাগ পাস করেছে ১৩টি কলেজের শিক্ষার্থীরা। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ১২টি। সেই হিসাবে এ অঞ্চলে শতভাগ পাস করা কলেজের সংখ্যা গতবারের চেয়ে একটি বেড়েছে। অন্যদিকে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া কলেজগুলোর মধ্যে পাঁচটি কলেজের শিক্ষার্থীদের কেউ পাস করতে পারেনি। গত বছর এ সংখ্যা ছিল তিনটি। সেই হিসাবে এবার শূন্য পাস কলেজের সংখ্যা গতবারের চেয়ে দুটি বেড়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর রেজাউল করিম। এতে সভাপতিত্ব করেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর এ এম এম মুজিবুর রহমান। প্রকাশিত ফলাফল অনুযায়ী, শতভাগ পাস করা ১৩টি কলেজের মধ্যে প্রথম অবস্থানে আছে চট্টগ্রাম বন্দর মহিলা কলেজ। এ কলেজ থেকে ৩৮৭ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কলেজ। তাদের ৩৭১ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ক্যান্টনমেন্ট ইংলিশ স্কুল অ্যান্ড কলেজ। এ কলেজ থেকে অংশ নেয় ৩৪৬ জন শিক্ষার্থী। চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে হালিশহর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ। প্রতিষ্ঠানটির ২৫৯ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাস করেছে। তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছে কাপ্তাইয়ের বাংলাদেশ নৌবাহিনী স্কুল অ্যান্ড কলেজ। এ কলেজ থেকে পরীক্ষায় অংশ নেয় ১৬৮ জন। ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে বান্দরবানের লামার কোয়ান্টাম কসমো কলেজ। তাদের ৬৪ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাস করেছে। এরপর রয়েছে সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ। তাদের ৬০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। শতভাগ পাসের তালিকায় এরপরের অবস্থানে রয়েছে সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ। এ কলেজ থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ৫১ জন। নবম অবস্থানে রয়েছে রাঙামাটির জুরাছড়ি উপজেলার শলক কলেজ। তাদের ৫০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। দশম অবস্থানে রয়েছে আনোয়ারার কাফকো স্কুল অ্যান্ড কলেজ। তাদের ২২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাস করেছে। শতভাগ পাসের তালিকায় ১১তম অবস্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম মহানগরীর কোতোয়ালী থানাধীন সেন্ট্রাল পাবলিক কলেজ। তাদের ১৫ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাস করেছে। ১২তম অবস্থানে রয়েছে সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজ। এ প্রতিষ্ঠানের ১০ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাস করেছে। শতভাগ পাসের তালিকায় ১৩তম অবস্থানে থাকা প্রতিষ্ঠানটি হচ্ছে কঙবাজারের বিআইএম ল্যাবরেটরি (ইংলিশ মিডিয়াম) স্কুল অ্যান্ড কলেজ। প্রতিষ্ঠানটির ৯ শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শতভাগ পাস করেছে।
প্রকাশিত ফলাফল থেকে জানা যায়, এইচএসসি পরীক্ষায় চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীন অংশ নেওয়া ২৮২টি কলেজের মধ্যে পাঁচটি কলেজের শিক্ষার্থীদের কেউ পাস করতে পারেনি। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে তিনটি চট্টগ্রামের উপজেলার, দুটি চট্টগ্রাম নগরীর। উপজেলার মধ্যে একটি হচ্ছে হাটহাজারীর রহিমপুর আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। তাদের পাঁচজন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে অকৃতকার্য হয়েছে। এরপর রয়েছে রাউজানের মোহাম্মদপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ। এ প্রতিষ্ঠানের মাত্র একজন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয় এবং অকৃতকার্য হয়। এরপর রয়েছে কঙবাজারের চকরিয়া কমার্স কলেজ। এই প্রতিষ্ঠানটির সাতজন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে অকৃতকার্য হয়েছে। চট্টগ্রাম নগরীর মধ্যে একটি হচ্ছে হালিশহর সেন্ট্রাল কলেজ। এই কলেজের একজন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে অকৃতকার্য হয়েছে এবং অন্যটি পাঁচলাইশের চট্টগ্রাম জেলা কলেজ। এ কলেজের তিনজন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এদের মধ্যে কেউ কৃতকার্য হয়নি।
উল্লেখ্য, এইচএসসি পরীক্ষায় চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো সারা দেশেও শতভাগ পরীক্ষার্থীর ফেল করা এবং শতভাগ পরীক্ষার্থীর পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা এবার বেড়েছে। পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ৯ হাজার ১৯৭ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৫টির কোনো পরীক্ষার্থী পাস করতে পারেনি। আর সব শিক্ষার্থী পাস করেছে এমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১ হাজার ৩৮৮টি। গত বছর কেউ পাস করতে পারেননি এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ছিল ৪২টি। সেই হিসাবে এবার শতভাগ অনুত্তীর্ণ প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়েছে ২৩টি। অন্যদিকে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া সব শিক্ষার্থীই পাস করেছে, এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা গত বছর ছিল ৯৫৩টি। অর্থাৎ সারা দেশে শতভাগ পাস করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়েছে ৪৩৫টি।