শওকত ওসমান : অগ্রবর্তী আধুনিক মানুষ

| রবিবার , ১৪ মে, ২০২৩ at ৬:৪২ পূর্বাহ্ণ

শওকত ওসমান(১৯১৭১৯৯৮)। কথা সাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক। শওকত ওসমান ১৯১৭ সালের ২ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার সবলসিংহপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর প্রকৃত নাম শেখ আজিজুর রহমান। তবে লেখক নাম শওকত ওসমান। এ নামেই তিনি সাহিত্যিক পরিমণ্ডলে পরিচিতি। তিনি কলকাতার আলীয়া মাদ্রাসা থেকে প্রবেশিকা (১৯৩৩), সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে আইএ (১৯৩৬) ও বিএ (১৯৩৯) এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ (১৯৪১) পাস করেন। আই.এ পাস করার পর তিনি কিছুদিন কলকাতা করপোরেশন এবং বাংলা সরকারের তথ্য বিভাগে চাকরি করেন। এম.এ পাস করার পর তিনি গভর্নমেন্ট কমার্শিয়াল কলেজে (১৯৪১) লেকচারার পদে নিযুক্ত হন। ১৯৪৭ সালে তিনি চট্টগ্রাম কলেজ অব কমার্সএ যোগ দেন এবং ১৯৫৯ সাল থেকে ঢাকা কলেজে অধ্যাপনা করে ১৯৭২ সালে স্বেচ্ছায় অবসরে যান। চাকরি জীবনের প্রথমদিকে স্বল্পসময় তিনি কৃষক পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন। উপন্যাস ও গল্প রচয়িতা হিসেবেই শওকত ওসমানের মুখ্য পরিচয়; তবে প্রবন্ধ, নাটক, রম্যরচনা, স্মৃতিকথা ও শিশুতোষ গ্রন্থও তিনি রচনা করেছেন। বিদেশি ভাষার অনেক উপন্যাস, ছোটগল্প ও নাটক তিনি বাংলা ভাষায় অনুবাদ করেছেন। গ্রন্থ সম্পাদনার ক্ষেত্রেও তিনি কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য কয়েকটি রচনা হলো: উপন্যাস জননী (১৯৫৮), ক্রীতদাসের হাসি (১৯৬২), সমাগম (১৯৬৭), চৌরসন্ধি (১৯৬৮), রাজা উপাখ্যান (১৯৭১), জাহান্নাম হইতে বিদায় (১৯৭১), দুই সৈনিক (১৯৭৩), নেকড়ে অরণ্য (১৯৭৩), পতঙ্গ পিঞ্জর (১৯৮৩), আর্তনাদ (১৯৮৫), রাজপুরুষ (১৯৯২); গল্পগ্রন্থ জুনু আপা ও অন্যান্য গল্প (১৯৫২), মনিব ও তাহার কুকুর (১৯৮৬), ঈশ্বরের প্রতিদ্বন্দ্বী (১৯৯০); প্রবন্ধগ্রন্থ ভাব ভাষা ভাবনা (১৯৭৪), সংস্কৃতির চড়াই উৎরাই (১৯৮৫), মুসলিম মানসের রূপান্তর (১৯৮৬); নাটক আমলার মামলা (১৯৪৯), পূর্ণ স্বাধীনতা চূর্ণ স্বাধীনতা (১৯৯০); শিশুতোষ গ্রন্থ ওটেন সাহেবের বাংলো (১৯৪৪), মস্কুইটোফোন (১৯৫৭), ক্ষুদে সোশালিস্ট (১৯৭৩), পঞ্চসঙ্গী (১৯৮৭); রম্যরচনা নিজস্ব সংবাদদাতা প্রেরিত (১৯৮২) ইত্যাদি। অনূদিত গ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘বাগদাদের কবি’, ‘টাইম মেশিন’, ‘স্পেনের ছোটগল্প’, ‘পাঁচটি কাহিনি’ (লিও টলস্টয়), ‘পাঁচটি নাটক’ (মলিয়ার), ইত্যাদি। শওকত ওসমান বাংলা একাডেমি পুরস্কার, আকাদেমী সাহিত্য পুরস্কার, একুশে পদক, স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার সহ নানা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ১৯৯৮ সালের ১৪ মে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধচোখের জলে মাকে খুঁজি