লোহাগাড়ায় উপবৃত্তির টাকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৪শ শিক্ষার্থী। এজন্য প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের অবহেলাকেই দুষেছেন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। এ কারণে অভিভাবক-শিক্ষার্থীর মাঝে চরম ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে। দুই দফা সময় বৃদ্ধির পর গত ২৭ এপ্রিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবরে অনলাইনে শিক্ষার্থীদের তথ্য প্রেরণের শেষ দিন ছিল। এছাড়া ৩০ এপ্রিলের মধ্যে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হতে ‘প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট’- এ প্রেরণের দিন নির্ধারিত ছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে ওই তিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কোনো শিক্ষার্থীর তথ্য প্রেরণ করেনি।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো হল- চুনতি উচ্চ বিদ্যালয়, চরম্বা জামেউল উলুম মাদ্রাসা ও পশ্চিম কলাউজান খতিবিয়া দাখিল মাদ্রাসা। একাধিক অভিভাবক জানান, এ ব্যাপারে তারা ও তাদের সন্তানরা কিছুই জানেন না। সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা তাদেরকে কিছুই জানাননি। প্রতিষ্ঠান প্রধানের অবহেলার কারণে তাদের ছেলে-মেয়েরা উপবৃত্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এ ব্যাপারে তারা সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষে হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে চুনতি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাছির উদ্দিন বাবর বলেন, লকডাউন ও ইন্টারনেট সমস্যার কারণে সঠিক সময়ে শিক্ষার্থীদের তথ্য প্রেরণ করা সম্ভব হয়নি। পশ্চিম কলাউজান খতিবিয়া দাখিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মাওলানা ফজলুল হক বলেন, পাসওয়ার্ড হারিয়ে যাওয়ায় আইডিতে ঢুকতে না পারেননি। তাই শিক্ষার্থীদের তথ্য প্রেরণ করা যায়নি। নতুন পাসওয়ার্ডের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে। চরম্বা জামেউল উলুম আদর্শ মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. আবুল কাশেম উপবৃত্তির জন্য শিক্ষার্থীদের তথ্য প্রেরণ করা হয়েছে বলে লাইন কেটে দিয়ে মুঠোফোন বন্ধ করে রাখেন। পরে একাধিকাবার চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম জানান, প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানকে একাধিকবার নির্দিষ্ট সময়ে মধ্যে শিক্ষার্থীদের তথ্য প্রেরণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। উপজেলায় ৬৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩টি ছাড়া সবাই উপবৃত্তির জন্য শিক্ষার্থীদের তথ্য প্রেরণ করেছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানের অবহেলার কারণে উপবৃত্তি বঞ্চিত হচ্ছে ৩ প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৪শ শিক্ষার্থী। বাদ পড়া শিক্ষার্থীদের তথ্য প্রেরণের জন্য সময় বৃদ্ধি করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ কামনা করছেন।
গত ২৪ মার্চ প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা যায়, বর্তমান সরকার দেশের সাধারণ স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় ৬ষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি, টিউশন ফি এবং অন্যান্য সুবিধাদি প্রদানের লক্ষ্যে সকল উপবৃত্তি প্রকল্পসমূহকে একত্রিক করে ‘সমন্বিত উপবৃত্তি কর্মসূচি’ নামে ‘সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম’র একটি স্কিম হিসাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অধীন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের আওতায় বাস্তবায়ন করে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান উপবৃত্তির জন্য আবেদন করতে ইচ্ছুক সকল শিক্ষার্থীকে অনলাইন/অফলাইনে আবেদন ফরম সরবরাহ করে সঠিক তথ্যসহ ফরমটি পূরণ করার জন্য বুঝিয়ে বলবেন। কোনো শিক্ষার্থীকে আবেদন করতে নিরুৎসাহিত করা যাবে না। আবেদনপত্রের তথ্যের জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধান ও শ্রেণী শিক্ষক দায়ী থাকবেন। এন্ট্রিকৃত তথ্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা প্রতিনিয়ত মনিটরিং করবেন।












