লুট হওয়া ১৪টি অস্ত্র ফেরত না দিলে কেএনএফের সঙ্গে শান্তি আলোচনা নয়

বান্দরবানে শান্তি কমিটির নেতৃবৃন্দ

বান্দরবান প্রতিনিধি | রবিবার , ২১ এপ্রিল, ২০২৪ at ৭:২৪ পূর্বাহ্ণ

বান্দরবানের রুমায় কেএনএফ সোনালী ব্যাংকে ডাকাতির সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লুট করে নেওয়া ১৪টি অস্ত্র ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সঙ্গে শান্তি কমিটির সকল আলোচনা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে শান্তি রক্ষা কমিটি। গতকাল শনিবার দুপুরে বান্দরবান ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট অডিটোরিয়ামে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় শান্তি রক্ষা কমিটির নেতৃবৃন্দ এ ঘোষনা দেন।

বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের উদ্যোগে জেলার বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈ হ্লা। এ সময় বম সোশ্যাল কাউন্সিলের সভাপতি লালজার লম বম, ম্রো সোশ্যাল কাউন্সিলের সভাপতি রাংলাই ম্রো, মারমা এসোসিয়েশনের সভাপতি মংসিনু মারমা, ত্রিপুরা কল্যাণ সংসদের সভাপতি অ্যাডভোকেট খুশী রায় ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা কল্যাণ সংস্থার বান্দরবান অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক বিরলাল তঞ্চঙ্গ্যা, চাক সমাজ কমিটির সহসভাপতি উচাই হ্লা চাক, খেয়াং সম্প্রদায়ের ম্রাসা খেয়াং, চাকমা সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে সাংবাদিক বুদ্ধজ্যোতি চাকমা, শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির মুখপাত্র কাঞ্চন জয় তঞ্চঙ্গ্যাসহ ১২টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সভাপতি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈ হ্লা বলেন, পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে আনতে জীবনবাজি রেখে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফের সঙ্গে মুখোমুখি আলোচনায় বসেছে। আলোচনায় কেএনএফ যেসব দাবিদাওয়া রেখেছে, সেগুলো নিয়ে সরকার কাজ করছে। সরকার তাদের পুনর্বাসন করারও প্রস্তুতি নিয়েছে। কিন্তু শান্তি আলোচনাকালে কেএনএফ এভাবে ব্যাংক ডাকাতি, অস্ত্র ও অর্থ লুটপাটের ঘটনা ঘটাবে, সেটি ছিল কল্পনার বাইরে। ফলে ঘটনাটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চলে গেছে। তাদের এই অপরাধমূলক কার্যকলাপের কারণে বর্তমানে পাহাড় অশান্ত হয়ে উঠেছে। বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বম সম্প্রদায়সহ পাহাড়ের অন্যান্য জাতিগোষ্ঠী। তিনি বলেন, কেএনএফ যে স্বায়ত্বশাসন চেয়েছে, সেটি কখনো সম্ভব নয়। তারা যদি এভাবে অস্ত্র হাতে নিয়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাতে থাকে, তাহলে পরিস্থিতি কোনদিকে যাবে সেটি বলা মুশকিল। কেএনএফের প্রধান নাথাম বম আলোচনায় না আসলে কখনোই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। কেএনএফের বিপথগামী সদস্যদের শান্তির পথে ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠী নতুন নতুন প্রস্তাব দিয়েছে। তাই সেসব প্রস্তাবনা নিয়ে কেএনএফ সদস্যদের সাথে আলোচনার পথে এগিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দিয়েছে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি। তবে রুমায় সোনালী ব্যাংক ডাকাতির সময় কেএনএফ আইনশৃক্সখলা বাহিনীর লুট করে নেওয়া ১৪টি অস্ত্র ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত কেএনএফের সঙ্গে শান্তি কমিটির সকল আলোচনা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শান্তি রক্ষা কমিটি।

ম্রো সোশ্যাল কাউন্সিলের সভাপতি রাংলাই ম্রো রাষ্ট্রের সম্পদ পুলিশ ও আনসার বাহিনীর লুট করে নেওয়া ১৪টি অস্ত্র অবিলম্বে সরকারি বাহিনীর কাছে ফেরত দিতে কেএনএফের প্রতি আহবান জানান।

প্রসঙ্গত, গত ২ ও ৩ এপ্রিল রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতি, টাকা ও অস্ত্র লুট এবং ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণের ঘটনায় কেএনএফের সঙ্গে জড়িত ৬৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপাগলা মসজিদের দানবাক্সে মিলল ২৭ বস্তা টাকা
পরবর্তী নিবন্ধসৌরজগতেই ‘থাকতে পারে’ অজানা এক গ্রহ