লবণের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে লবণ চাষিদের ১৪ দাবি

পেকুয়া প্রতিনিধি | শনিবার , ১৯ এপ্রিল, ২০২৫ at ১১:১২ পূর্বাহ্ণ

লবণের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে লবণ চাষিদের ১৪ দফা দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি ও লিফলেট তুলে দেন শিল্প সচিবের হাতে লবণ শিল্প রক্ষায় আন্দোলনকারী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় শিল্প মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে শিল্প সচিব মোঃ ওবায়দুর রহমানের হাতে চাষিদের পক্ষে এসব দাবি তুলে দেন পরিবেশ বিষয়ক নাগরিক সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)র পেকুয়া উপজেলা কোঅর্ডিনেটর দেলওয়ার হোসাইন ও লবণ চাষি কল্যাণ সমিতির সভাপতি এডভোকেট শাহাব উদ্দিন। এদিন লবণ শিল্প সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের অংশগ্রহণে শিল্প মন্ত্রণালয়এর সচিব জনাব মোঃ ওবায়দুর রহমান সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেন, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালীতে বাংলাদেশের একমাত্র দেশীয় লবণ উৎপাদন কেন্দ্র। এর মধ্যে প্রায় ৯৫ শতাংশ লবণ উৎপাদন হয় কক্সবাজার জেলায়, অবশিষ্ট ৫ শতাংশ লবণ উৎপাদন হয় চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায়। বিসিক এর তথ্য মতে গত অর্থবছরে উৎপাদিত লবণ চাহিদা মিটিয়ে বর্তমানে আরও ২ লক্ষ ২২ হাজার মেট্রিক টন লবণ মজুদ আছে। চলতি মৌসুমে প্রাকৃতিক পরিবেশ অনুকূলে থাকায় লবণ উৎপাদন প্রক্রিয়া ভালোভাবেই চলছে। তারা বলেন, লবণ চাষিরা প্রতি কেজি লবণ উৎপাদন খরচ প্রায় ১৫ টাকা হলেও মাঠ পর্যায়ে প্রতি কেজি মাত্র ৩ টাকা ৫০ পয়সা দরে বিক্রি হচ্ছে। চাষিদের উৎপাদিত লবণ প্যাকেটজাত করে বিভিন্ন কোম্পানি প্রতি কেজি লবণ বাজারে ৪০৪৫ টাকায় বিক্রি করছে। মাঠ পর্যায়ে চাষিরা ন্যায্য মূল্য না পেয়ে লবণ চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের একমাত্র স্বনির্ভর লবণ শিল্প ধ্বংস প্রায় নিশ্চিত হবে।

এসময় চাষিদের পক্ষে ১৪টি বিভিন্ন দাবি তুলেন ধরেন বক্তারা। ১৪ দাবি মধ্যে রয়েছেলবণের ন্যায্য মূল্য, দালাল ও সিন্ডিকেটমুক্ত লবণ বিক্রির পরিবেশ সৃষ্টি করা, ডিজিটাল মিটার দ্বারা লবণের পরিমাপ নিশ্চিত করা, মৌসুমের আগে সরকার কর্তৃক লবণের দাম ও বর্গা জমির খাজনা নির্ধারণ করা, বৈদেশিক লবণ আমদানি বন্ধ করা, সরকার কর্তৃক চাষীদের কাছ থেকে লবণ ক্রয় করা, লবণ বোর্ড স্থাপন ও কক্সবাজার জেলায় সরকারিভাবে লবণ শিল্প কারখানা স্থাপন করা, দুর্যোগপূর্ণ সময়ে লবণ চাষিদের প্রণোদনা নিশ্চিত করা, লবণ চাষিদের সহজ শর্তে বিনা সুদে ঋণের ব্যবস্থা করা, লবণ চাষিদের সরকারিভাবে তালিকাভূক্তি করা, জমি মালিকরা যৌক্তিক কোন কারণ ছাড়া চাষির কাছ থেকে বর্গা জমি কেড়ে নেয়া, ওয়াকফ এস্টেট এর জমি মোতোয়াল্লি কর্তৃক চাষিদের সরাসরি জমি বর্গা দিতে হবে এবং কোন একক ব্যক্তিকে ইজারা না দেয়া এবং লবণ চাষ যোগ্য জমিতে কোন প্রকল্প স্থাপন না করা। এতে বিসিক চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত সচিব মোঃ সাইফুল ইসলাম, বাংলাদেশ লবণ চাষি কল্যাণ সমিতির সভাপতি এডভোকেট শাহাব উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক এজেএম গিয়াসউদ্দিন চৌধুরী, কক্সবাজার লবণ চাষি ও ব্যবসায়ী সংগ্রাম পরিষদ সভাপতি মোহাম্মদ জামিল ইব্রাহিম, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান খোকন, পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক নাগরিক সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)র পেকুয়া উপজেলা কোঅর্ডিনেটর দেলওয়ার হোসাইনসহ লবণ মিল মালিক সমিতির প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, লবণ বাজারজাত কোম্পানির প্রতিনিধিগন বক্তব্য রাখেন।

এ সময় কক্সবাজার জেলা প্রশাসক সালাহউদ্দিন, বিসিক উপমহাব্যবস্থাপক মোঃ জাফর ইকবাল ভূঁইয়াসহ লবণ শিল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমেধাবীরা সুনাগরিক হিসেবে দেশ গড়ায় ভূমিকা রাখবে
পরবর্তী নিবন্ধমাটি ও বালুবোঝাই ট্রাক চাপায় বেহাল সড়ক