কচুর সুখ্যাতির জন্য মীরসরাই উপজেলার কয়েকটি গ্রাম দীর্ঘ কয়েক দশক থেকে বিখ্যাত। এ বছরও উপজেলার কচুয়া গ্রামসহ বিভিন্ন গ্রামে ফলন হয়েছে ব্যাপক। কেবল ১১ নম্বর মঘাদিয়া ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামে অর্ধশতাধিক চাষি এবার লতিরাজ জাতীয় কচু চাষ করে হয়েছেন লাখপতি।
মঘাদিয়া গ্রামের চাষি সাইফুল ইসলাম বলেন, তিনি গ্রামের কয়েকটি জমিতে কচু চাষ করেছেন। প্রতিটি জমিতে কচু চাষ ও পরিচর্যায় খরচ হয়েছে প্রায় বিশ হাজার টাকার মতো। কচু আর কচুর লতি বিক্রির পর লাখ টাকা আয় হয়েছে এবার। প্রতি বছরই কমবেশি কচু চাষ করেন তিনি।
একই গ্রামে আরো প্রায় ৫০ জন কৃষক কচু চাষ করে লাখপতি হয়েছেন বলে জানান অপর কৃষক দিদারুল আলম। এছাড়া পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের হাইতকান্দি, মিঠানালা, কাটাছরা, দুর্গাপুর, ওচমানপুর, হিঙ্গুলীসহ পুরো উপজেলার কয়েকশ চাষি কচু ও কচুর লতি চাষ করে লাভবান হয়েছেন। চাষিরা ভাদ্র-আশ্বিন দুই মাস ব্যস্ত থাকেন কচু তোলা আর বিক্রি নিয়ে। কচু চাষের গ্রামগুলোতে কচু কাটা, পরিষ্কার করা, লতি তোলা, সারি সারি আটি তৈরি করা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেন চাষিরা। আটি তৈরির পর সেখান থেকে সিএনজি বা ভ্যানে করে চলে যায় মহাসড়কের হাটে। বিক্রির পর পাইকারদের ট্রাকে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় ও যাচ্ছে এখন মীরসরাইয়্যা কচু বলে খ্যাত এই সবজি পণ্য। মলিয়াইশ গ্রামের মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রতিটি কচু পাইকারি ৩০-৪০ টাকা করে বিক্রয় হচ্ছে। প্রতি বছরের মত এবারো ফলন ভাল হওয়ায় খুশি সবাই।
এই বিষয়ে উপজেলা কৃষি সুপারভাইজার কাজী নুরুল আলম জানান, মীরসরাইয়ের অনেক এলাকা বর্ষাকালীন মৌসুমি কচু চাষের জন্য উপযোগী। সম্প্রতি নানান জাতের কচুর চাষাবাদে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। ইতোমধ্যে স্থানীয় পর্যায়ে দেশি কচুর পাশাপাশি লতিরাজ নামের একটি কচুতে কৃষকরা বেশি সুফল পাচ্ছে। এই কচুতে লতিরও ভাল আবাদ হয় বলে এটি এখন কৃষকবান্ধব বলে অভিহিত। এর আবাদ বৃদ্ধিতে আমরা সবাইকে সবধরনের সহযোগিতা প্রদান করতে প্রস্তুত রয়েছি।
প্রসঙ্গত, দেশে লতিরাজ কচু জনপ্রিয় একটি সবজি। বর্তমানে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে এর লতি। লতিরাজ কচুতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি রয়েছে। উৎপাদনের দিক দিয়ে মুখীকচুর পরই কচুর লতির স্থান।