গত বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত এবং নিউজিল্যান্ড। চার বছর পর আবার দুই দল সেমিফাইনালে মুখোমুখি। আগের আসরে জিতেছিল নিউজিল্যান্ড। তাই এবারে ম্যাচের পরিণতি কি একই হবে নাকি জ্বলে উঠবে প্রতিশোধের বারুদ। তা জানা যাবে আজ। তার আগে চোখ বুলানো যাক দু’দলের পরিসংখ্যানে। ওয়ানডেতে এখন পর্যন্ত ১১৭বার মুখোমুখি হয়েছে ভারত এবং নিউজিল্যান্ড। এর মধ্যে ভারত জিতেছে ৫৯টিতে আর নিউজিল্যান্ডের জয় ৫০টিতে। তবে বিশ্বকাপের মঞ্চে জয়ের পাল্লা ভারী নিউজিল্যান্ডের দিকেই। ৯ ম্যাচের মধ্যে পাঁচটিতেই জিতেছে তারা। বিপরীতে হেরেছে চার ম্যাচে। তাই আজ মুম্বাইয়ে নিউজিল্যান্ডের চোখ থাকবে ব্যবধান আরো বাড়ানোর দিকে। আর ভারত চাইবে ব্যবধান সমান করতে।
বিশ্বকাপে ভারত–নিউজিল্যান্ড লড়াইগুলো কেমন ছিল।
১৯৭৫ সালে বিশ্বকাপের প্রথম আসরেই মুখোমুখি হয়েছিল ভারত এবং নিউজিল্যান্ড। তবে তখন নিউজিল্যান্ডের তুলনায় অনেকটাই দুর্বল দল ছিল ভারত। ম্যানচেস্টারে অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচে ৪ উইকেটের জয় পায় কিউইরা। ১৭৭ বলে অপরাজিত ১১৪ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেছিলেন গ্লেন টার্নার।
১৯৭৯ আবারো আবারও কিউইদের দাপট। ভারতের ব্যাটিং লাইনআপ দাঁড়াতেই পারেনি রিচার্ড হ্যাডলি–ক্রিস কেয়ার্নসদের সামনে। হেডিংলিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ১৮২ রানেই গুটিয়ে গিয়েছিল ভারত। জবাবে সেই রান ৮ উইকেট ও ৩ ওভার হাতে রেখেই পাড়ি দেয় নিউজিল্যান্ড।
১৯৮৭ সালের আসরে দুইবার মুখোমুখি হয় তারা। দুটিতেই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে স্বাগতিক ভারত। প্রথম ম্যাচে বেঙ্গালুরুতে ১৬ রানের জয় পায় তারা। দ্বিতীয় ম্যাচে উড়িয়ে দিয়েছিল নিউজিল্যান্ডকে। আগে ব্যাট করতে নেমে ২২১ রান তোলে কিউইরা। সুনীল গাভাস্কারের সেঞ্চুরিতে ৯ উইকেটের দাপুটে জয় তুলে নেয় ভারত। এই ম্যাচেই বিশ্বকাপ ইতিহাসের প্রথম হ্যাটট্রিক করার গৌরব অর্জন করেছিল ভারতীয় পেসার চেতন শর্মা।
১৯৯২ বিশ্বকাপে ডানেডিনে মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন ও শচীন টেন্ডুলকারের হাফসেঞ্চুরিতে ২৩০ রান সংগ্রহ করেছিল ভারত। কিন্তু মার্ক গ্রেটব্যাচ ও অ্যান্ড্রু জোনসের হাফসেঞ্চুরিতে সেই রান ৪ উইকেট হাতে রেখেই পাড়ি দেয় নিউজিল্যান্ড।
১৯৯৯ বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের জন্য লড়াইটি ছিল বাঁচা–মরার। না জিতলে সেমিফাইনালের দরজা বন্ধ হয়ে যাবে। অজয় জাদেজার ৭৬ রানে তাদের ওপর ২৫২ রানের লক্ষ্য দাঁড় করায় ভারত। কিন্তু ট্রেন্টবিজে সেই রান তাড়া করতে কোনো বেগ পেতে হয়নি কিউইদের। ৫ উইকেটের দাপুটে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে তারা।
২০০৩ বিশ্বকাপে পরপর দুই বিশ্বকাপে হারের পর এবার ঘুরে দাঁড়ায় ভারত। জহির খানের বোলিং তোপে পড়ে মাত্র ১৪৬ রানেই গুটিয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। সহজ লক্ষ্য ৭ উইকেট হাতে রেখেই পাড়ি দেয় ভারত।
২০১৯ বিশ্বকাপে তিন আসর পর আবারও মুখোমুখি হয় ভারত–নিউজিল্যান্ড। গ্রুপ পর্বের ম্যাচ পরিত্যক্ত হলেও সেমিফাইনালে ফের দেখা হয় তাদের। রিজার্ভ ডে‘তে গড়ানো এই ম্যাচ ১৮ রানে জিতে ভারতীয়দের হৃদয় ভাঙে কিউইরা। এবার ২০২৩ বিশ্বকাপের পালা। সেমির আগে গ্রুপ পর্বেই একে অপরের বিরুদ্ধে লড়েছে ভারত–নিউজিল্যান্ড। তবে লড়াইয়ের আগে দুই দল নিজেদের প্রথম চার ম্যাচে ছিল অপরাজিত। ধর্মশালায় কিউইদের জয়রথ থামিয়ে ৪ উইকেটের জয় তুলে নেয় ভারত। গ্রুপপর্বের ৯ ম্যাচের ৯ টিতেই জয় পায় তারা। আজকের সেমিফাইনালেও কি সেই ধারা বজায় থাকবে নাকি ২০১৯ এর স্মৃতি ফিরে আসবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।