লংকানদের পাঁচ উইকেট তুলে নিয়েও অস্বস্তিতে বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক | রবিবার , ২৪ মার্চ, ২০২৪ at ১০:১৩ পূর্বাহ্ণ

সিলেট টেস্টের দ্বিতীয় দিনে খুব ভালো কিছু হয়নি বাংলাদেশের। প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং ব্যর্থতায় তাইজুল ইসলামের পর শরিফুল ইসলাম, খালেদ আহমেদের ব্যাটে শ্রীলংকার লিডটা কমানো গিয়েছিল। এরপর নাহিদ রানাশরিফুলতাইজুলদের বোলিংয়ে একটু স্বস্তি নিয়ে দিনটা শেষ করেছে বাংলাদেশ। তবে আশংকা প্রথম ইনিংসে বড় ব্যবধানে পিছিয়ে পড়া ভোগাবে বাংলাদেশকে। দলকে লড়াইয়ে ফেরাতে দ্বিতীয় ইনিংসে বেশ চেষ্টা করছেন বোলাররা। ৫ উইকেটে ১১৯ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে লংকানরা। তাদের লিড ২১১ রানের। ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ২৩ আর নাইটওয়াচম্যান বিশ্ব ফার্নান্ডো ২ রানে অপরাজিত আছেন। প্রথম ইনিংসে ৯২ রানের বড় ব্যবধানে পিছিয়ে থাকার পর দ্বিতীয় ইনিংসে লংকানদের চেপে ধরে বাংলাদেশ। ৬৪ রানের মধ্যে তাদের ৪ ব্যাটারকে সাজঘরে ফেরায় টাইগাররা। এর মধ্যে দুটি উইকেট নাহিদ রানার। গতির রাজা হিসেবে চিহ্নিত নাহিদ রানা জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েই গতিতে রাজত্ব করেছেন সিলেটের মাঠে। প্রথম ইনিংসে তিনি নিয়েছিলেন ৩ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসেও আগুনে বোলিং অব্যাহত রেখেছেন নাহিদ রানা। শ্রীলংকার দ্বিতীয় ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে প্রথম বল করতে আসেন নাহিদ। এই ওভারের চতুর্থ বলে তেমন এক ডেলিভারিতে ব্যাটের কানায় লাগিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন লংকান ওপেনার নিশান মাধুশঙ্কা। শ্রীলংকার রান এ সময় ছিল ১৯। ২০ বলে ১০ রান করে আউট হন মাধুশঙ্কা। এরপর রানার দারুণ ডেলিভারিতে উইকেটরক্ষককে ক্যাচ দেন কুশল মেন্ডিস ()। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস অনেকটাই সেট হয়ে গিয়েছিলেন। অবশেষে বল হাতে নিয়েই লংকান এই অভিজ্ঞ ব্যাটারকে ঘূর্ণিজাদুতে পরাস্ত করেন তাইজুল ইসলাম। তাইজুলের টার্নিং ডেলিভারিতে ব্যাট ছুঁইয়ে উইকেটরক্ষক লিটনকে ক্যাচ দেন ম্যাথিউস (২২)। এরপর দিনেশ চান্দিমালকে দাঁড়াতেই দেননি মেহেদী হাসান মিরাজ। এলবিডব্লিউয়ের আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দেননি। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তের বলে রিভিউ নেন মিরাজ। তাতেই কাজ হয়। আম্পায়ারকে সিদ্ধান্ত বদলাতে হয়। রিপ্লেতে দেখা যায়, লেগ স্টাম্পে আঘাত করতো বল। দ্বিতীয় ইনিংসে নিজের প্রথম বলেই উইকেট পান মিরাজ। তবে ধনঞ্জয়া ডি সিলভাকে নিয়ে পঞ্চম উইকেটে ৪৯ রানের জুটি গড়ে তোলেন দিমুথ করুনারত্নে। সাবেক লংকান অধিনায়ক হাফ সেঞ্চুরিও তুলে নেন। অবশেষে তাকে সাজঘরে ফেরান শরিফুল ইসলাম। তার শর্ট ডেলিভারিতে ব্যাট চালিয়ে ফাইন লেগে নাহিদ রানার ক্যাচ হন করুনারত্নে। ১০১ বলে ৫২ রানের ধৈর্যশীল ইনিংসে ৭টি চার আর একটি ছক্কা হাঁকান করুনারত্নে।

এর আগে শ্রীলংকার প্রথম ইনিংসে ২৮০ রানের জবাবে বাংলাদেশ অলআউট হয়ে যায় ১৮৮ রানে। প্রথম দিন শেষে ৩ উইকেটে ৩২ রান করেছিলো টাইগাররা। মাহমুদুল হাসান জয় ৯ ও নাইটওয়াচম্যান তাইজুল ইসলাম শূন্য হাতে অপরাজিত ছিলেন। গতকাল দ্বিতীয় দিন প্রথম ব্যাটার হিসেবে আউট হন জয়। শ্রীলংকার পেসার লাহিরু কুমারার বলে তৃতীয় স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ১২ রানে আউট হন জয়। ৩টি চারে ইনিংস শুরু করেও বেশি দূর যেতে পারেননি শাহাদাত হোসেন। কুমারার দ্বিতীয় শিকার হয়ে ১৮ রানে থামেন শাহাদাত। শাহাদাতের বিদায়ে ক্রিজে এসে ৪টি চারে বড় ইনিংসের আভাস দিয়েছিলেন উইকেটরক্ষক লিটন দাস। কিন্তু কুমারার হালকা ইনসুইংয়ের ডেলিভারি সামলাতে না পেরে বোল্ড হন ২৫ রান করা লিটন। দলীয় ১২৪ রানে লিটন ফিরলেও টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম হাফসেঞ্চুরির পথে ছিলেন তাইজুল। কিন্তু ৩ রান দূরে থাকতে কাসুন রাজিথার শিকার হন তিনি। ৮০ বল খেলে ৬টি চারে ক্যারিয়ার সেরা ৪৭ রান করেন তাইজুল। তাইজুলের পর মেহেদি হাসান মিরাজকেও ১১ রানে থামিয়ে দেন রাজিথা। মিরাজ আউটে হলে দেড়শর নিচে গুটিয়ে যাবার শঙ্কায় পড়ে বাংলাদেশ। কিন্তু নবম উইকেটে শ্রীলংকার বোলারদের উপর চড়াও হন দুই টেলএন্ডার শরিফুল ইসলাম ও খালেদ আহমেদ। স্পিনার প্রবাথ জয়সুরিয়ার করা ৪৭তম ওভারে শরিফুল ২টি ও খালেদ ১টি ছক্কায় ১৯ রান তোলেন। শরিফুলখালেদের জুটিতে দুইশোর পথে এগিয়ে যেতে থাকে বাংলাদেশ। কিন্তু শরিফুল ও খালেদকে আউট করে দিয়ে ১৮৮ রানেই বাংলাদেশ ইনিংসের সমাপ্তি টানে শ্রীলংকা। শরিফুল ১৫ ও খালেদ ২২ রান করেন। শ্রীলংকার তিন পেসার ফার্নান্দো ৪টি, কুমারারাজিথা ৩টি করে উইকেট নেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনগরের খাল থেকে মাটি উত্তোলনে অগ্রগতি নেই : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধপাহাড়ি সন্ত্রাসীসহ ৪ জনকে ধরে মেম্বারের জিম্মায় দিল জনতা