রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে লবণ উৎপাদন উৎসব

| রবিবার , ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ৭:৪৭ পূর্বাহ্ণ

কল্যাণ বড়ুয়া, বাঁশখালী 

বাঁশখালীর উপকূলীয় ছনুয়া, গন্ডামারা, সরল, পুঁইছড়ি, শেখেরখীল, পশ্চিম মনকিচরসহ উপকূলীয় এলাকায় লবণ উৎপাদনে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। একদিকে লবণের আশানুরূপ দাম, অপরদিকে ভালো আবহাওয়া ও রোদ থাকায় লাভবান হয়েছেন চাষি ও জমির মালিকেরা। বর্তমানে মাঠ পর্যায়ে লবণ ৫০০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে বলে জানান চাষিরা।

লবণ চাষিরা জানান, নভেম্বর মাস থেকে লবণ উৎপাদন শুরু হয়ে এপ্রিলের শেষ সময় পর্যন্ত লবণ উৎপাদন চলে। তার মধ্যে ফেব্রুয়ারি ও মার্চ এ দুই মাস ভাল লবণ উৎপাদন হয়। তবে বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে ক্ষতির মুখে পড়তে হয় চাষিদের। তাছাড়া বর্ষায় উৎপাদিত লবণ মাঠেই গর্ত করে পুঁতে রাখা হয়। ব্যবসায়ীক সুবিধাজনক সময়ে পুনরায় তা উত্তোলন করে দেশের বিভিন্ন স্থান বিশেষ করে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রামসহ বড় বড় লবণ ব্যবসায়ীদের কাছে পাইকারি দামে বিক্রি করা হয়।

আগে লবণ মাঠে সনাতন পদ্ধতিতে লবণ উৎপাদন করা হলেও বর্তমানে আধুনিক ও পলিথিন পদ্ধতিতে লবণ চাষ করা হয় বলে জানান বাদশা, ওসমান গনি, আবুল কালামসহ আরো অনেকে। এসব লবণ মাঠে শিশু থেকে বয়স্ক শ্রমিক হিসেবে যারা কাজ করে তাদের মজুরিতে রয়েছে ভিন্নতা। সেক্ষেত্রে ৩০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা, আবার অভিজ্ঞ শ্রমিকদের ক্ষেত্রে দৈনিক ভিত্তিতে ১ হাজার টাকাও মজুরি হয় বলে জানান চাষিরা।

লবণ চাষি কামাল উদ্দিন বলেন, আমি এক কানি জমিতে পলিথিন পদ্ধতিতে লবণ উৎপাদন শুরু করছি। আশা করছি আগামী ছয় মাসে ৩০০ মণ লবণ উঠাতে পারব। পলিথিন পদ্ধতিতে লবণ উৎপাদন হতে ৪ থেকে ৫ দিন লাগে। যতবেশি রোদ থাকে তত তাড়াতাড়ি লবণ শক্ত ও মজবুত হয়। আর পলিথিন পদ্ধতি ছাড়া লবণ উৎপাদনে সময় লাগে প্রায় এক সপ্তাহ।

লবণ চাষি আবুল কালাম বলেন, এক কানি জমিতে ৫ হাজার টাকার পলিথিন, ৩৫ হাজার টাকার লাগিয়ত, ৫ হাজার টাকা স্কিম ও ৫ হাজার টাকার মজুরিসহ ৫০ হাজার টাকা খরচ করে এক থেকে দেড় লাখ টাকা আয় হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তিনি আরও বলেন, গত বছর ৮ কানি চাষ করে খরচ বাদ দিয়ে প্রায় আড়াই লাখ টাকা লাভ হয়েছিল। তারমধ্যে পাঁচ কানি নিজের এবং তিন কানি লাগিয়ত নেওয়া হয়েছিল। বাঁশখালী উপকূলের লবণ চাষিরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন লবণ মাঠে।

বাঁশখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবু ছালেক বলেন, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে লবণ উৎপাদন হয়। চাষিরা এসব লবণ পাইকারি ও খুচরাভাবে বাজারে পাঠিয়ে থাকেন। অধিকাংশ লবণ চাষি ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রামের বড় বড় ব্যবসায়ী ও আড়তদারদের কাছে তাদের লবণ বিক্রি করে বলে জানান তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমীরসরাইয়ে গাড়ি উল্টে বিমান বাহিনীর ৫ জনসহ আহত ৭
পরবর্তী নিবন্ধবাঁশখালীর কালীপুরে পাহাড় কাটায় এক ব্যক্তিকে জরিমানা