রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কক্সবাজারের অস্থায়ী ক্যাম্প থেকে দুর্গম ভাসানচরে স্থানান্তর অবিলম্বে বন্ধ করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দুই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) এবং অ্যামেনস্টি ইন্টারন্যাশনাল। গতকাল বৃহস্পতিবার সংস্থা দুইটি তাদের ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত বিবৃতি প্রকাশ করেছে।
বিবৃতিতে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, ভাসানচরে স্থানান্তরের জন্য চার হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীর তালিকা তৈরি করেছে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ। ৩ ডিসেম্বর থেকে স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভাসানচরে স্থানান্তর অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত। এদিকে বাংলাদেশের উচিত একটি স্বচ্ছ স্থানান্তর প্রক্রিয়ার ব্যাপারে অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়া। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পূর্ণ সম্মতি থাকতে হবে বলে উল্লেখ করেছে এইচআরডব্লিউ। পাশাপাশি, ভাসানচরের ভেতরে-বাইরে রোহিঙ্গাদের চলাচলের স্বাধীনতা থাকতে হবে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ভাসানচরে স্থানান্তরের আগে স্বাধীন কারিগরি ও সুরক্ষাগত যে মূল্যায়নের আহ্বান জাতিসংঘ জানিয়েছে সে ব্যাপারে বাংলাদেশকে মনোযোগী হতে হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
এ ব্যাপারে এইচআরডব্লিউর এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেছেন, মানবিক বিশেষজ্ঞদের সবুজ সংকেতের আগে কোনো রোহিঙ্গা শরণার্থীকে ভাসানচরে স্থানান্তর না করার বিষয়ে জাতিসংঘের কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি থেকে বাংলাদেশ সরকার সক্রিয়ভাবে সরে যাচ্ছে। সরকার যদি দ্বীপটির বসবাসযোগ্যতা সম্পর্কে সত্যিই আত্মবিশ্বাসী হয়, তাহলে এ ব্যাপারে তাদের স্বচ্ছ হওয়া উচিত।
অন্যদিকে, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ক্যাম্পেইনার সাদ হামাদি বলেছেন, বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের অবিলম্বে ভাসানচরে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্থানান্তর বন্ধ করা উচিত। যারা ইতোমধ্যেই সেখানে আছে, তাদের মূল ভূখণ্ডে ফিরিয়ে আনা উচিত। এছাড়াও স্থানান্তরের যে কোনো পরিকল্পনায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পূর্ণ ও অর্থবহ অংশগ্রহণসহ যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণের আহ্বান জানিয়েছেন সাদ হামাদি। এ প্রসঙ্গে অ্যামনেস্টির দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ক্যাম্পেইনার বলেছেন, রোহিঙ্গাদের সম্পূর্ণ ও অবহিতপূর্বক সম্মতি ছাড়া তাদের ভাসানচর বা অন্য কোনো জায়গায় স্থানান্তরের কোনো পরিকল্পনা নেওয়া যাবে না।