রোহিঙ্গা নাগরিকের ভোটার হওয়ার চেষ্টা

গৃহবধূর ফরমে ইউএনও’র স্বাক্ষর জাল

আনোয়ারা প্রতিনিধি | শুক্রবার , ২৪ জুন, ২০২২ at ৬:১০ পূর্বাহ্ণ

আনোয়ারার রায়পুর ইউনিয়নে তথ্য গোপন করে ভোটার হতে যাওয়া মো. হাবিবুর রহমান নামে এক রোহিঙ্গা নাগরিককে শনাক্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে বৈরাগ ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডে এক গৃহবধূ ভোটার হতে ইউএনওর স্বাক্ষর জাল করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাচন অফিসার আবু জাফর সালেহ ভোটার হালনাগাদকরণের তথ্য যাচাই বাছাইকালে দুটি বিষয় তার নজরে আসে বলে জানান। আবু জাফর সালেহ জানান, রায়পুর ইউনিয়নে অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান তার ভোটার আবেদনে নিজেকে উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের সরেঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা মৃত আমীর হামজার পুত্র বলে উল্লেখ করেন। এ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্যও তিনি আবেদনে সংযুক্ত করেন।

ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিন শরীফ জানান, আমি স্থানীয়ভাবে জানতে পারি অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান একজন রোহিঙ্গা নাগরিক। ১৯৯১ সালের আগে মিয়ানমার থেকে এসেছেন, রায়পুরের সরেঙ্গা থেকে বিয়ে করে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। বর্তমানে তার স্ত্রী পুত্র-কন্যারাও ভোটার হয়েছেন। নিজ নামে জমিও কিনেছেন। পূর্ববর্তী চেয়ারম্যানের দেওয়া জন্ম নিবন্ধন সনদের ধারাবাহিকতায় আমিও দিয়েছি। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

উপজেলা নির্বাচন অফিসার আবু জাফর সালেহ বলেন, ভোটার হালনাগাদের তথ্য যাচাই বাছাইকালে ওই ব্যক্তির আবেদন ত্রুটিপূর্ণ মনে হওয়ায় অধিকতর যাচাই বাছাই করি। পরে নিশ্চিত হই আবেদনকারী হাবিবুর রহমান একজন রোহিঙ্গা নাগরিক। অনেকদিন ধরে বিভিন্ন মাধ্যমে ভোটার হওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এই ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বিশেষ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ জোবায়ের আহমেদের কাছে পাঠিয়েছি।

অন্যদিকে তথ্য সংগ্রহকারী বৈরাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ঝুমা রানী দেবনাথ বলেন, ভাবীর ভোটার ফরম দেখার জন্য মির হাসান নামের এক যুবক আমার কাছ থেকে বৈরাগ ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. মনির আহমদের স্ত্রী নাছরিন আকতার নামে এক ভোটারের আবেদন ফরমটি নেন। পরে তিনি ইউএনওর স্বাক্ষর কেমনে জাল করেছে আমি তা জানি না। ফরমটি আমি যথা নিয়মে জমা করেছি। তবে নাছরিন আকতারের ফরম কেন ওই যুবকের হাতে দেয়া হয়েছে সে প্রশ্নের উত্তর তিনি দিতে পারেননি।

অভিযুক্ত মির হাসান ইউএনওর স্বাক্ষর জাল করার কথা স্বীকার করে বলেন, অন্য ভোটারের ফরমে ইউএনওর স্বাক্ষর থাকলেও আমার ভাবীর ফরমে ইউএনওর স্বাক্ষর না দেখে আমি তা করে দিয়েছি।

অভিযুক্ত নাছরিন আকতার জানান, আমি কোরিয়ান ইপিজেড এর কেএসআইয়ের পোশাক কারখানায় কাজ করি। মির হাসান আমার প্রতিবেশী দেবর। সে কেন এ কাজ করেছে আমি জানি না। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবু জাফর ছালেহ বলেন, তথ্য সংগ্রহকারীর কাছ থেকে আবেদন ফরম নিয়ে এক যুবকের মাধ্যমে কৌশলে ইউএনওর স্বাক্ষর জাল করেন নাছরিক আকতার। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শেখ জোবায়ের আহমদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআনোয়ারায় ২০ দিনে আটটিরও বেশি চুরির ঘটনা
পরবর্তী নিবন্ধকুড়িগ্রামে ৬ জেএমবি সদস্যের ফাঁসি