তারুণ্যের উৎসব জাতীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা দল। গতকাল নিজেদের মাঠ চট্টগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামে স্বাগতিক চট্টগ্রাম ১–০ গোলে কক্সবাজার জেলা দলকে পরাজিত করে চূড়ান্ত পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। যেখানে সারা দেশ থেকে ১৬ টি দল অংশ গ্রহণ করবে। মোহাম্মদ রোমানের দর্শনীয় এক গোলে কক্সবাজার জেলা দলকে পরাজিত করে দ্বিতীয় রাউন্ডের সেরা হয়ে চড়ুান্ত পর্বে জায়গা করে নেয় চট্টগ্রাম জেলা দল। এই রাউন্ডের অ্যাওয়ে ম্যাচে বান্দরবান জেলা স্টেডিয়ামে পয়েন্ট হারিয়ে এসেছিল চট্টগ্রাম। তাই নিজেদের মাঠে পুরো তিন পয়েণ্ট তুলে নেওয়ার লক্ষ্য ছিল নাজিম উদ্দিনের দলের। শেষ পর্যন্ত রোমানের কাঁধে ভর করে পুরো পয়েন্টই তুলে নিল চট্টগ্রাম। সে সাথে জায়গা করে নিল চূড়ান্ত পর্বে। নিজেদের মাঠে দুর্দান্ত ফুটবল খেলেছে চট্টগ্রাম। দারুণ আক্রমণাত্মক ফুটবল খেললেও একের পর এক সুযোগ মিস করেছে চট্টগ্রামের আক্রমণভাগের খেলোয়াড়রা। যার খেসারত দিতে হয়েছিল বান্দরবানে অ্যাওয়ে ম্যাচে। তবে গতকাল নিজেদের মাঠে দারুণ গুছানো ফুটবল খেলেছে। যার ফলে দারুণ প্রয়োজনীয় জয় তুলে নিতে সক্ষম হয়েছে চট্টগ্রাম। যদিও গোল পেতে স্বাগতিকদের অপেক্ষা করতে হয়েছে ৬৫ মিনিট পর্যন্ত। অবশেষে রোমান স্বস্তি এনে দেন দলকে। খেলার শুরু থেকেই আক্রমনাত্নক ফুটবল খেলতে থাকে চট্টগ্রাম। পুরো মাঠ জুড়ে বলের দখল ছিল স্বাগতিকদের। যদিও নিজেদের অর্ধ থেকে দানা বেধে উঠা আক্রমণ গুলো খেই হারিয়ে ফেলে প্রতিপক্ষের পোস্টের সামনে গিয়ে। তবে প্রথমার্ধের ২০ মিনিটে সবচাইতে সহজ একটি সুযোগ নষ্ট করেন দিদার। ডান প্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে ঢুকে পড়েছিলেন সাকিব। কক্সবাজার দলের ডি বক্সের ভেতর থেকে জোরালো শট নেন সাকিব। কিন্তু বল ফিরিয়ে দেন গোল রক্ষক। ফিরতি বলে পা ছোঁয়াতে পারলেন না দিদার। অথচ সামনে গোলপোস্ট ছাড়া আর কিছুই ছিলনা। ৪০ মিনিটে আরো একবার এগিয়ে যাওয়ার মত সুযোগ পেয়েছিল। এবার রোমান বল নিয়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন। ডিবক্সের সামনে সাকিবের উদ্দেশ্যে বাড়িয়েছিলেন বল। কিন্ত ডি বক্সের সামনে থেকে সাকিব যে শট নেন তা চলে যায় ক্রসবার উচিয়ে। ফলে গোলশূন্যভাবে বিরতিতে যেতে হয় চট্টগ্রামকে। বিরতি থেকে ফিরেই গোল পেতে পারতো চট্টগ্রাম। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের ৯ মিনিটে কক্সবাজারের ডি বক্সের সামনে থেকে তানভীর যে শট নেন তা চলে যায় কীপারের হাতে। ১৪ মিনিটে একেবারে অমার্জনীয় একটি মিস করেন সাকিব এবং জাহেদ দুজনই।
এবার মধ্য মাঠ থেকে বল পেয়ে ডি বক্সে সাকিব এবং জাহেদ দু’জনই শট নিতে পারেনি। ফলে আরো একটি সুযোগ হাত ছাড়া হয়। তবে ২০ মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোল আদায় করে নেয় চট্টগ্রাম। ডান প্রান্ত দিয়ে বল নিয়ে ছুটে যান জাহেদ। ক্রস করেছিলেন কক্সবাজারের ডি বক্সে। কিন্তু এক ফুটবলার বল দখলে নিতে পারেনি। তার পেছনে থাকা রোমান বল ধরে একাধিক খেলোয়াড়কে কাটিয়ে জোরালো শটে বল পাঠিয়ে দেন জালে। ১–০ গোলে এগিয়ে যায় চট্টগ্রাম। আর উল্লাসে মাতে গ্যালারীতে হাজির হাজার পাঁচেক দর্শক। এরপর আরো একাধিক আক্রমণ রচনা করলেও সেগুলো থেকে ব্যবধান বাড়াতে পারেনি চট্টগ্রাম।
৪১ মিনিটে আরো আকেটি সহজ সুযোগ পেয়েছিল চট্টগ্রাম। কিন্তু এবার সে সুযোগ নষ্ট করেন শাহীন গোলরক্ষকের গায়ে মেরে দিয়ে। শেষ পর্যন্ত ১–০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে চট্টগ্রাম জেলা দল। সে সাথে নিজেদের নিয়ে যায় চূড়ান্ত পর্বে। ম্যাচ জয় সূচক একমাত্র গোলটি করা ছাড়াও দুর্দান্ত খেলা রোমান ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন।