রোজার মাহাত্ম্য অর্জনে নিয়ম-কানুন জেনে নিতে হবে

আ ব ম খোরশিদ আলম খান | শুক্রবার , ৭ মার্চ, ২০২৫ at ৯:৪৩ পূর্বাহ্ণ

সঠিক নিয়ম পদ্ধতি মেনে সিয়াম সাধনার মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাকের নৈকট্য অর্জন করতে হবে। মাহে রমজানে রোজা রাখা যেমন ফরজ, তেমনি কীভাবে কোন পদ্ধতিতে রোজা রাখতে হবে তা জানাও ফরজ বা আবশ্যক। রোজার মাসয়ালা মাসায়িল তথা রোজার নিয়ম পদ্ধতি জানা না থাকলে রোজার মাহাত্ম্য ও ফজিলত অর্জন থেকে বঞ্চিত হতে হবে। তাই প্রত্যেক রোজাদারকে নির্দিষ্ট নিয়ম পদ্ধতি মেনে রোজা রেখে রোজার মাহাত্ম্য অর্জনে মনোনিবেশ করতে হবে। দুঃখজনক যে, অনেকেই রোজা রাখেন, কিন্তু রোজার জন্য প্রয়োজনীয় মাসয়ালা মাসায়িল জানার ক্ষেত্রে উদাসীন থাকেন। ফলে অনেকের রোজাই নিজেদের অজান্তে অন্তঃসারশূন্য উপবাসে পরিণত হয়। রমজান মাসে দিনের বেলায় কেউ স্বেচ্ছায় পানাহার করলে, ইচ্ছাকৃতভাবে বমি করলে রোজা ভেঙে যাবে। তখন তাকে কাজা ও কাফফারা উভয় আদায় করতে হবে। তবে ভুলে পানাহার করলে রোজা ভাঙবে না। ইচ্ছাকৃত বমি প্রসঙ্গে নবী করিম (.) বলেন, কেউ যদি অনিচ্ছাকৃত বমি করে তাহলে তার রোজা ভাঙবে না অর্থাৎ রোজা কাজা করতে হবে না। আর যদি কেউ ইচ্ছাকৃত বমি করে তাহলে (অল্প হোক বা বেশি হোক) তাকে কাজা করতে হবে। (জামে আত তিরমিজি, হাদিস : ৭২০)। বিড়ি সিগারেট হুক্কা টানলেও রোজা ভেঙে যাবে এবং কাজা ও কাফকারা উভয়টি জরুরি হবে। ইবনু আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘শরীর থেকে কোনো কিছু বের হলে অজু করতে হয়, প্রবেশ করলে নয়। অন্যদিকে রোজা এর উল্টো। রোজার ক্ষেত্রে কোনো কিছু শরীরে প্রবেশ করলে রোজা ভেঙে যায়, বের হলে নয়,’ (সুনানু কুবরা, বায়হাকি ৪/২৬১)। পেটের এমন ক্ষতে ওষুধ লাগালে রোজা ভেঙে যাবে, যা দিয়ে ওষুধ পেটের ভেতর চলে যায়। বিশেষ প্রয়োজনে এমন ক্ষতে ওষুধ লাগালে পরে রোজার কাজা করে নিতে হবে। নাকে ওষুধ বা পানি দিলে যদি খাদ্যনালিতে চলে যায়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে এবং কাজা করতে হবে। মাথার এমন জখমে ওষুধ লাগালে রোজা ভেঙে যাবে, যা দিয়ে ওষুধ মস্তিষ্কে চলে যায়। বিশেষ প্রয়োজনে এমন স্থানে ওষুধ লাগাতে হলে পরে রোজা কাজা করে নিতে হবে। কেউ ইফতারের সময় হয়েছে ভেবে আগেই ইফতার করলে তার রোজাও ভেঙে যাবে। তখন একটি রোজা কাজা করতে হবে। মুসান্নাফে ইবনু আবি শাইবাতে রয়েছে, হযরত আউন রাহিমাহুল্লাহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মুহাম্মদ ইবনু সিরিন একবার রাত বাকি আছে ভেবে সাহরি খেলেন। তারপর জানতে পারলেন, তিনি সুবহে সাদিকের পর সাহরি খেয়েছেন, তখন তিনি বললেন, ‘আমি রোজাদার নই’। (অর্থাৎ আমাকে এ রোজার কাজা করতে হবে)। রোজা রাখা অবস্থায় ইনজেকশন বা ইনসুলিন নিলে রোজা ভাঙবে কি ভাঙবে না তা নিয়ে উলামা ও ফকিহদের মধ্যে নানা মতদ্বিমত আছে। তবে সাহরি ও ইফতারের সময় সমন্বয় করে ইনজেকশন বা ইনসুলিন নেয়া যায়। তখন রোজার ক্ষতি হবে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভোট করবে কি না সিদ্ধান্ত আ. লীগকেই নিতে হবে
পরবর্তী নিবন্ধসাতকানিয়ায় গণপিটুনি : উদ্ধার হওয়া অস্ত্রটি কোতোয়ালী থানার