রোগীর নাম দেখিয়ে সরানো হচ্ছে সরকারি ওষুধ

চমেক হাসপাতালে দুদকের অভিযান ।। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রে ওষুধের নাম নেই, লেখা আছে নার্সের খাতায়

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ১২ জানুয়ারি, ২০২৪ at ৪:৩৯ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ওয়ার্ডের রেজিস্ট্রার খাতায় দামি ওষুধের নাম লিখে স্টোর থেকে ওষুধ তুলে নেয়া হচ্ছে। অথচ চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রে উল্লেখ থাকছে না সেই ওষুধের নাম। এমন অপকর্ম করছে খোদ হাসপাতালের নার্সরাই! দুদকের হট লাইন ১০৬ নম্বরে পাওয়া অভিযোগের প্রেক্ষিতে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে অভিযানে নামে দুদক সমন্বিত কার্যালয় চট্টগ্রাম১। অভিযানে নেতৃত্ব দেন সহকারী পরিচালক এনামুল হকের নেতৃত্বে চার সদস্যের টিম। দুদক টিম হাসপাতালের নার্স, স্টোর অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। জিজ্ঞাসাবাদে ওষুধ সরানোর অভিযোগের সত্যতাও মিলে।

জানা গেছে, চমেক হাসপাতালে ছদ্মবেশে দুদকের চালানো অভিযানে নানা অসঙ্গতি ধরা পড়ে। রোগীর ব্যবস্থাপত্রে ওষুধের নাম উল্লেখ নেই। অথচ সেটা লেখা রয়েছে নার্সের রেজিস্ট্রার খাতায়। এ নিয়ে ১৩ নম্বর মেডিসিন ওয়ার্ডের নার্স ইনচার্জ মিনতি বড়ুয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি কোনো বিষয়ের ব্যাখা দিতে পারেননি। এছাড়া ওই ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স ফাতেমা খাতুনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক তদন্ত টিম। তিনিও কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। অভিযানের সময় সঙ্গে ছিলেন হাসপাতালের সিনিয়র স্টোর অফিসার ডা. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির। মেডিসিন ওয়ার্ড ছাড়াও ইমারজেন্সি কেয়ার ইউনিটেও রোগীকে ওষুধ না দিয়ে নার্সের রেজিস্ট্রার খাতায় লিপিবদ্ধ দেখতে পান দুদক টিমের সদস্যরা। এমনকি শয্যায় রোগী ভর্তি না থাকা সত্ত্বেও রোগীর নাম দেখিয়ে ওষুধ সরিয়ে নেওয়ার প্রমাণ মিলেছে।

অভিযানের বিষয়ে দুদক সমন্বিত কার্যালয় চট্টগ্রাম১ এর সহকারী পরিচালক এনামুল হক সাংবাদিকদের বলেন, আমরা হট লাইনে অভিযোগ পাওয়ার পর হাসপাতালে ছদ্মবেশে অভিযান চালাই। এতে ওষুধ নিয়ে নয় ছয়ের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এসব ওষুধের অনিয়মের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন নার্সরাই। আমাদের অভিযানের সময় হাসপাতালের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাও সঙ্গে ছিলেন। তিনি দেখেছেন ওষুধ নিয়ে অনিয়ম হচ্ছে হাসপাতালে। আমরা বিষয়টি হাসপাতালের পরিচালককে অভিহিত করেছি। তিনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান সাংবাদিকদের বলেন, দুদকের অভিযানে যে অনিয়ম পাওয়া গেছে তা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে। আমরা কোনো অনিয়মকে প্রশ্রয় দিই না। দুইদিন আগে এক দালালকে আটক করে পুলিশ। যেই অপরাধ করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচবির কাছে দ্বিতীয়বারের মতো ব্যাখ্যা তলব ইউজিসির
পরবর্তী নিবন্ধতথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন এ আরাফাত