পূর্বাঞ্চল রেলে ইঞ্জিন সংকট দীর্ঘদিনের। প্রতিদিনের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ১০০টি লোকোমোটিভ (ইঞ্জিন) প্রয়োজন হয় পরিবহন বিভাগের। কিন্তু প্রতিদিন পাওয়া যায় ৭৮ থেকে ৮০টি। স্বাভাবিক দিনগুলোর চেয়ে ঈদের সময় ইঞ্জিনের প্রয়োজন অনেক বেড়ে যায়। এবারও আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরে পূর্বাঞ্চলের নির্বিঘ্নে যাত্রী পরিবহনে ১১৯টি ইঞ্জিনের প্রয়োজন বলে জানান রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চিফ পাওয়ার কন্ট্রোলার প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম। তিনি আজাদীকে বলেন, ঈদ উপলক্ষে স্পেশাল ট্রেন চলবে। এই জন্য বাড়তি ইঞ্জিনের প্রয়োজন হয়। কিন্তু আমরা ইচ্ছে করলে ইঞ্জিন বাড়াতে বা কমাতে পারি না। মেকানিক্যাল বিভাগ থেকে যে পরিমাণ ইঞ্জিন সরবরাহ করা হয়–তা দিয়ে আমাদের ট্রেন পরিচালনা করতে হয়।
পূর্বাঞ্চলের চিফ পাওয়ার কন্ট্রোলার নজরুল ইসলাম বলেন, গত বছর ঈদে ১০৭টি পেয়েছিলাম। এবার তাও পাবো না। এবার ইঞ্জিনের সংকট প্রকট। এবার ১শ’ও পাবো না মনে হয়। প্রতিদিন ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ১০০ ইঞ্জিন দরকার। কিন্তু এখন প্রতিদিন গড়ে ৭৮ থেকে ৮০টি ইঞ্জিন পাওয়া যায়। তবে ঈদকে সামনে রেখে পাহাড়তলী ডিজেলশপে পুরোনো ইঞ্জিনগুলো মেরামতের কাজ চলছে বলে জানা গেছে। তবে দক্ষ জনবল সংকট এবং ইঞ্জিন মেরামতের জন্য যে মানের যন্ত্রাংশ দরকার সেই মানের যন্ত্রাংশের অভাব রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চিফ পাওয়ার কন্ট্রোলার নজরুল ইসলাম বলেন, ডিজেলশপে দক্ষ লোকবল না থাকায় নতুন লোকবল দিয়ে ইঞ্জিন মেরামত করে আজকে দেয়ার পর সেটি আবার পরের দিন মেরামতের জন্য ডিজেলশপে ঢুকাতে হয়। ইঞ্জিন মেরামতে যে মানের যন্ত্রাংশের প্রয়োজন হয় সেই মানের যন্ত্রাংশের অভাব রয়েছে। অপরদিকে ডিজেলশপে ইঞ্জিন মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক লোকবল নেই। তিনি বলেন, প্রয়োজনীয় ইঞ্জিন পাওয়া গেলে ট্রেন পরিচালনায় কোনো সমস্যা হবে না।
আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে প্রতি বছরের মতো এবারও আগেভাগে পাহাড়তলী ওয়ার্কশপে শুরু হয়েছে ঈদের কোচ মেরামতের কাজ। এবার পাহাড়তলী কারখানায় ৯০টি অতিরিক্ত কোচ মেরামত করা হচ্ছে। এরমধ্যে ৩০টি কোচের মেরামত কাজ শেষ হয়েছে বলে জানান পাহাড়তলী কারখানার কর্ম ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সৈয়দ মোহাম্মদ আমীর উদ্দিন। তিনি আজাদীকে বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারের পবিত্র ঈদুল ফিতরেও পূর্বাঞ্চলের প্রতিটি যাত্রীবাহী ট্রেনে অতিরিক্ত বগি যুক্ত হবে। ফেব্রুয়ারির ১ তারিখ থেকে পাহাড়তলী কারখানায় আমরা ঈদের কাজ (অতিরিক্ত বগি মেরামত) শুরু করেছি। ইতোমধ্যে মেরামতকৃত কোচগুলো আমরা পরিবহন বিভাগকে বুঝিয়ে দিয়েছি। অবশিষ্ট বগিগুলো আগামী ২৫ তারিখের মধ্যে বুঝিয়ে দেবো। তিনি বলেন, ঈদে প্রতিটি ট্রেনে ৩ থেকে ৪টি করে অতিরিক্ত কোচ যুক্ত হবে। এছাড়াও স্পেশাল ট্রেন চলবে। এবার মেট্টো ট্রেনের আদলে দুটি স্ট্যান্ডিং টিকিটের ট্রেন চলবে। যারা ঈদের অগ্রিম টিকিট পাবেন না তারা তাৎক্ষণিকভাবে টিকিট কেটে দাঁড়িয়ে যেতে পারবেন।