রেললাইনে উঠে গেল মাইক্রোবাস, অতঃপর…

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ৭ মে, ২০২৩ at ৫:১৮ পূর্বাহ্ণ

একটি ট্রেন সিগন্যাল অতিক্রম করতেই একটি মাইক্রোবাস উঠে যায় রেল লাইনে। কিন্তু চোখের পলকে আরেকটি ট্রেন এসে পড়ে। মাইক্রোবাসটিকে ধাক্কা দিয়ে নিয়ে যায় কিছুদূর। আকস্মিক এ ঘটনায় মাইক্রোবাসটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা লাগার আগেই মাইক্রোবাস চালক লাফ দিয়ে বের হয়ে যেতে সক্ষম হন। তবে ট্রেনের গতি কম থাকায় বড় ধরনের বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে নগরীর আমবাগান এলাকায় রেললাইনের উপর এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনাস্থলের পাশে রেলসেতুর সংস্কারকাজ চলার কারণে ট্রেনটি ধীরে চলছিল।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, ওই সময় আমবাগান এলাকায় দুটি ট্রেন পার হচ্ছিল। এক লেনে ছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চট্টগ্রাম স্টেশনমুখী শাটল ট্রেন এবং আরেকটি ছিল চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে নাজিরহাটগামী লোকাল ট্রেন। নাজিরহাটগামী ট্রেন প্রথমে চলে যায়। পরে শাটল ট্রেনের সঙ্গে মাইক্রোবাসটির সংঘর্ষ হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের কেউ কেউ বলেছেন, ট্রেন যাওয়ার সময় লেভেল ক্রসিং প্রতিবন্ধক ফেলা হয়নি। এ জন্য মাইক্রোবাসচালক গাড়ি চালিয়ে যান। তবে রেলওয়ের গেটম্যান আকলিমা ও অপর কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী দাবি করেছেন, ট্রেন যাওয়ার সময় প্রতিবন্ধক ফেলা ছিল। কিন্তু কেউ একজন তা তুলে মাইক্রোবাসটি যাওয়ার সুযোগ করে দেন। এতেই দুর্ঘটনা ঘটে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুর্ঘটনার শিকার মাইক্রোবাসটি একটি বায়িং হাউসের ভাড়া করা গাড়ি। ওই গাড়ি দিয়ে প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের আনানেওয়া করা হয়। তবে গাড়ির মূল চালক এদিন দায়িত্বে ছিলেন না। তার পরিবর্তে একজন বদলি গাড়িচালক ছিলেন বলে জানান বায়িং হাউসের এক কর্মকর্তা।

প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন বলেন, একটি ট্রেন চলে যাওয়ায় আর কোনো ট্রেন নেই মনে করে গাড়িচালক রেল লাইনের ওপর উঠে যান। তখনই স্টেশনমুখী শাটল ট্রেন মাইক্রোবাসটিতে ধাক্কা দিয়ে কিছু দূর নিয়ে যায়।

মো. ওয়াসিম উদ্দিন নামের আরেক প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিকদের বলেন, লেভেল ক্রসিংয়ের দুই পাশেই প্রতিবন্ধক ফেলা হয়েছিল। একটি ট্রেন যাওয়ার পর আরেকটি ট্রেন লেভেল ক্রসিং পার হতে কিছুটা সময় নেয়। এতে দেরি দেখে কেউ একজন একটি প্রতিবন্ধক ওপরে তুলে দেন। এর মধ্যে মাইক্রোবাসের চালক গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তখনই দুর্ঘটনা ঘটে।

গেটম্যান আকলিমা দাবি করেছেন, তিনি দুটি প্রতিবন্ধক ফেলেছিলেন। এ ছাড়া ট্রেন যাওয়ার ঘণ্টাও বাজানো হচ্ছিল। আর পতাকা দিয়ে সংকেত দেখাচ্ছিলেন। এরপরও প্রতিবন্ধক তুলে যাওয়ার চেষ্টা করলে দুর্ঘটনা ঘটে।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম রেলস্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার রতন কুমার চৌধুরী আজাদীকে বলেন, মাইক্রোবাসচালক সংকেত অমান্য করে প্রতিবন্ধক তুলে পার হওয়ার চেষ্টা করায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। গাড়িটি জব্দ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ
পরবর্তী নিবন্ধআসকার দীঘির পাড় এলাকায় গৃহবধূর আত্মহত্যা