মীরসরাইয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসে ১১ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস’াপক (জিএম) জাহাঙ্গীর হোসেন আজাদীকে জানান, মীরসরাইয়ে ট্রেন দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। কিভাবে ঘটনাটি ঘটলো তা তদন্তে রেলওয়ের অ্যাডিশনাল চিফ ইঞ্জিনিয়ার আরমান হোসেনকে প্রধান করে ৪ সদস্য বিশিষ্ট এবং বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনছার আলীকে প্রধান করে ৫ সদস্যবিশিষ্ট আলাদা দুটি কমিটি গঠন করেছি। আগামী তিন কার্য দিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা সুষ্ঠুভাবে তদন্তের জন্য গেটম্যান সাদ্দাম হোসেনকে রেলওয়ে পুলিশের হেফাজতে দেওয়া হয়েছে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা আনছার আলীকে প্রধান করে গঠিত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- বিভাগীয় নির্বাহী প্রকৌশলী-১ আবদুল হামিদ, বিভাগীয় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার (লোকো) জাহিদ হাসান, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর কমান্ড্যান্ট রেজানুর রহমান এবং বিভাগীয় মেডিকেল অফিসার (ডিএমও) মো. আনোয়ার হোসেন।
এ ব্যাপারে আনছার আলী আজাদীকে জানান, আমরা ঘটনাস’ল পরিদর্শন করেছি। তদন্ত কাজ শুরু করেছি। ঘটনাটি কীভাবে ঘটেছে, কেন ঘটেছে, কারা দোষি সেই বিষয়ে আমরা তদন্ত করছি। গেটম্যান ওই সময় ঘটনাস’লে ছিল কিনা সেটা তদন্তে বেরিয়ে আসবে। আমরা ২-৩ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেব।
দুর্ঘটনার পর প্রাথমিকভাবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, ট্রেন আসার সিগন্যাল পেয়ে ওই ক্রসিংয়ের গেটম্যান সাদ্দাম বাঁশ ফেলে ব্যারিকেড দিয়েছিলেন। সেই বাঁশ ঠেলে মাইক্রোবাসটি রেললাইনের ওপর উঠে যায়। এমনকি গেটম্যান লাল পতাকা উড়িয়ে মাইক্রোবাস চালককে থামার নির্দেশনাও দিয়েছিলেন। তবে প্রত্যক্ষদর্শী এবং স’ানীয় উদ্ধারকর্মী নোমান, সাইফুলসহ বেশ কয়েকজন জানান, দুর্ঘটনার সময় গেটম্যান সাদ্দাম সেখানে ছিলেন না। তিনি জুমার নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন। বাঁশ ফেলে ক্রসিংয়ে ব্যারিকেড দেয়া হয়নি বলে দাবি তাদের।
ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী মহানগর প্রভাতী ট্রেনের এক যাত্রী জানান, মাইক্রোবাসটি মহাসড়কের দিকে চলে যাচ্ছিল। বৃষ্টিও পড়ছিল। সড়কের লেভেল ক্রসিংয়ে সিগন্যাল ছিল। কিন’ মাইক্রোবাসটি লেভেল ক্রসিংয়ের প্রতিবন্ধকবার ওল্টিয়ে রেললাইনের ওপর উঠে যায়। তখন দুর্ঘটনাটি ঘটে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ট্রেনটি ধাক্কা দেওয়ার পর মাইক্রোবাসটিকে প্রায় এক কিলোমিটার ঠেলে নিয়ে যায়। মাইক্রোবাসে মোট ১৭ আরোহী ছিলেন। তাদের মধ্যে ১১ জন ঘটনাস’লেই নিহত হন। ৬ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। একজন সুস’ আছেন। ট্রেন ধাক্কা দেওয়ার সময় তিনি লাফিয়ে মাটিতে পড়ে যান।












