তীরে এসে তরী ডুবালো চট্টগ্রাম। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতল খুলনা। ফাইনালে তারা চট্টগ্রামকে হারিয়েছে ৫ রানে। শেষ ওভারে পেসার শহীদুল ইসলামের চমকে শিরোপা জিতে নেয় খুলনা। চট্টগ্রামের বোলাররা ভালো করলেও ব্যাটসম্যানরা পারেনি তাদের কাজটা করতে। ফলে শিরোপা জেতা হলোনা চট্টগ্রামের। লিগ পর্বে দুইবারই চট্টগ্রামের কাছে হারা খুলনা নক আউট পর্বে দুবারই হারিয়েছে চট্টগ্রামকে। প্রতিশোধ নেওয়ার পাশাপাশি করোনাকালে সবচাইতে বড় টুর্নামেন্টের শিরোপা গেল খুলনার ঘরে। মাহমুদউল্লাহ, মাশরাফি, ইমরুলদের নিয়ে গড়া খুলনা ঠিকই বাজিমাত করল খুলনা। টুর্নামেন্টে সবচাইতে ধারাবাহিক চট্টগ্রাম রাঙাতে পারলনা শেষটা। লিটন, সৌম্য, মোস্তাফিজরা পারলনা শেষ হাসি হাসতে। ফলে পুরো টুর্নামেন্ট দারুণ খেলেও চট্টগ্রামের জেতা হলোনা শিরোপা।
টসে হেরে ব্যাট করতে নামা খুলনা প্রথম বলেই উইকেট হারায়। ফিরেন জহিরুল ইসলাম অমি। ৮ রান করে ফিরেন ইমরুল কায়েস। এরপর তরুণ জাকির হোসেনকে নিয়ে হাল ধরেছিলেন আরিফুল ইসলাম। দলীয় ৪৩ রানের মাথায় জাকির ২০ বলে ২৫ রান করে ফিরলে ভাঙে এই জুটি। তারপর খুলনার হয়ে বলতে গেলে একাই লড়াই করে যান দলটির অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। মূলত মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে চড়েই দেড়শ পার করতে পেরেছে খুলনা। মাঝখানে আরিফুল এবং শুভাগত হোম কিছুটা সঙ্গ দিতে পেরেছিল মাহমুদউল্লাহকে। তবে দলকে একাই টেনে নিয়ে গেছেন অধিনায়ক। শেষ পর্যন্ত ৪৮ বল খেলে ৮টি চার আর ২টি ছক্কার সাহায্যে ৭০ রানে অপরাজিত ছিলেন মাহমুদউল্লাহ।
এছাড়া আরিফুল হক ২১ এবং শুভাগত হোম করেছেন ১৫। আর তাতেই নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৫৫ রান সংগ্রহ করে খুলনা। নাহিদুল ইসলাম ১৯ ও শরিফুল ইসলাম ৩৩ রান দিয়ে দুটি করে উইকেট লাভ করেন। মোস্তাফিজুর রহমান চার ওভারে ২৪ রান খরচায় নিয়েছেন ১ উইকেট। জবাব দিতে নেমে শুরুটা ভাল হয়নি চট্টগ্রামেরও। ২৬ রানের মাথায় ফিরেন সৌম্য সরকার। ১২ রান করেন এই ওপেনার। অধিনায়ক মিথুন ফিরেছেন দুই অংকের ঘরে যাওয়ার আগেই। টুর্নামেন্টের সবচাইতে সফল ব্যাটসম্যান লিটন দাশও পারেননি দলকে টেনে নিতে। ফিরেছেন ২৩ বলে ২৩ রান করে। এরপর দলের হাল ধরেন সৈকত আলি এবং শামসুর রহমান শুভ। কিন্তু ৪৫ রানের জুটিটা ভাঙে শামসুর রহমান ফিরলে। ২১ বলে ২৩ রান করে ফিরেন শামসুর রহমান। মোসাদ্দেক এবং সৈকত আলি মিলে দলকে টেনে নেওয়ার চেষ্টা করলেও শেষ ওভারে গিয়ে পথ হারায় চট্টগ্রাম। শেষ ওভারে জয়ের জন্য চট্টগ্রামের দরকার ছিল ১৬ রান। তরুণ পেসার শহীদুল ইসলামের প্রথম বল থেকে আসে এক রান। দ্বিতীয় বল থেকে আসে দুই রান। তৃতীয় বলে ছক্কা মারতে গিয়ে আউট হন মোসাদ্দেক। পরের বলে চট্টগ্রারে সম্ভাবনা। শেষ বলে ছক্কা মাররেও তা কোন কাজে আসেনি। ফলে চট্টগ্রামকে বিদায় নিতে হয়েছে হতাশা নিয়ে। ৪৫ বলে ৪টি ছক্কার সাহায্যে ৫৩ রান করেও দলকে জেতাতে পারেননি সৈকত আলি। খুলনার সফল বোলার শহীদুল ইসলাম নিয়েছেন ২টি উইকেট।
এদিকে খুলনা ঘরে শিরোপা গেলেও টুর্নামেন্ট সেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হয়েছেন চট্টগ্রামের পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। চট্টগ্রামের এই বাঁহাতি পেসার সর্বোচ্চ ২২টি উইকেট নিয়েছেন। দারুণ বোলিংয়ে মাঠ কাপিয়েছেন তিনি। তার বোলিং গড় ১১.৪ এবং ইকোনমি রেট ৬.২৫। ফলে টুর্নামেন্টের সেরা বোলারের পুরস্কারটাও জিতে নিয়েছেন জাতীয় দলের এই বাঁহাতি পেসার। ফাইনালের ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন খুলনার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।