রাঙ্গুনিয়ায় শেখ রাসেল এভিয়ারি পার্কের জায়গায় অবৈধভাবে নির্মিত বসতঘর উচ্ছেদ অভিযানে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছেন বনবিভাগের লোকজন।
এতে উপজেলা রেঞ্জ কর্মকর্তা ও এক বিটকর্মকর্তাসহ ১৪ জন বনকর্মী আহত হয়েছেন।
আজ সোমবার (৩১ মে) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার হোছনাবাদ ইউনিয়নের শেখ রাসেল এভিয়ারি এন্ড ইকো পার্ক সীমানার জঙ্গল নিশ্চিন্তাপুর এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, ঘটনায় আহতরা হলেন উপজেলা রেঞ্জ কর্মকর্তা মাসুম কবির (৫২), রাঙ্গুনিয়া রেঞ্জের সিরিঙা বিট কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইসমাঈল হোসেন (৩৫), শেখ রাসেল এভিয়ারী পার্কের বাগান মালি জ্যৌতিময় বড়ুয়া (২৯), আনোয়ার হোসেন (৫০), আব্দুল হাই (৪০), মোহাম্মদ কায়ছার (৪০), মো. মাসুদ (২৮), মো. জাহিদ (২৭), অন্তর শীল (২৮), ইমাজন ত্রীপুরা (৩০), মো. আজিজ (২৯), মো. সাইফুদ্দিন (২৬), ইকবাল হোসেন বাবলু (২৭), রূপায়ন সুশীল (২৮)।
তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে রেঞ্জ কর্মকর্তা মাসুম কবির ও বিট কর্মকর্তা ইসমাঈল হোসেনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
তারা বর্তমানে মেডিকেলের ২৮ নম্বর নিউরো সার্জারি বিভাগ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে বিট কর্মকর্তা ইসমাঈলের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা গেছে।
এই ঘটনায় কোদালা বিট কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান বাদী হয়ে ২০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১৫/২০ জনকে আসামী করে রাঙ্গুনিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলায় এখন পর্যন্ত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলো মোহাম্মদ রহিম (২৬), জায়তুন নূর বেগম (৪৫), মো. আরফাত (১৮), রিকু আক্তার (২৪) ও মো. শফিউল আলম (২৬)।
পার্কের সহকারী পরিচালক হাসিবুর রহমান বলেন, “শেখ রাসেল এভিয়ারি এন্ড ইকো পার্কের উত্তর-পশ্চিম দিকে জঙ্গল নিশ্চিন্তাপুর এলাকার কাছাকাছি পার্কের সীমানা প্রাচীরের ভেতরে তিন দিন আগে অবৈধভাবে ঘর নির্মাণ করে স্থানীয় সেলিম এবং জসিম গং। বিষয়টি জানতে পেরে বনবিভাগ প্রাথমিকভাবে ঘর নির্মাণ করতে বাধা দেয় কিন্তু তারা বাধা উপেক্ষা করে রাতারাতি অবৈধভাবে বনবিভাগের জায়গায় ৪/৫টি বসতঘর নির্মাণ করে। খবর পেয়ে সোমবার সকালে এসব ঘর উচ্ছেদে যায় বনবিভাগের লোকজন। উচ্ছেদ অভিযান শেষে ফেরার পথে বনবিভাগের লোকজনের উপর দেশীয় অস্ত্র হাতে অতর্কিত হামলা চালায় সেলিম এবং জসিম গং-এর নেতৃত্বে ২০/৩০ জন নারী-পুরুষ।”
তিনি আরো বলেন, “হামলায় ধারালো কিরিচের কোপে গুরুতর আহত হয়েছেন রেঞ্জ কর্মকর্তা মাসুম কবির, বিট কর্মকর্তা ইসমাঈল হোসেন, বাগান মালী জ্যৌতিময় বড়ুয়াসহ ১৪ বনকর্মী। পরে আহত অবস্থায় তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়।”
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক রেহনুমা আকতার বলেন, “আহত বেশ কয়েকজনকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।”
রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুব মিল্কী বলেন, “হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। জড়িত ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। বাকীদেরও গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”