রাঙ্গুনিয়ায় বাঁশের বেড়ার তৈরি একমাত্র স্কুল ছিলো লালানগর ইউনিয়নের কালা গাজীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টিতে দীর্ঘদিন ধরে নানা প্রতিবন্ধকতা নিয়ে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করে আসছিল। অবশেষে বেড়ার তৈরি স্কুলটি এবার পাকা হচ্ছে। শুধু স্কুল ভবন হিসেবেই নয়, নির্মাণাধীন তিন তলা বিশিষ্ট ভবনটি ব্যবহৃত হবে দুর্যোগকালীন সাইক্লোন শেল্টার হিসেবেও। এটি ছাড়াও আরও তিনটি সাইক্লোন শেল্টারের নির্মাণ কাজ চলছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের বিশেষ উদ্যোগে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) বহুমূখী দুর্যোগ আশ্রয় কেন্দ্র প্রকল্পের আওতায় এই চারটি সাইক্লোন শেল্টার নির্মিত হচ্ছে।
জানা যায়, ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত কালা গাজীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে দেড়শো শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিদ্যালয়টিতে এখনো বেড়ার তৈরি শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করা হচ্ছে। নেই কোন শৌচাগার ব্যবস্থা। বৃষ্টি এলেই পাঠদান বন্ধের উপক্রম হয়। অবশেষে নতুন পাকা ভবন হতে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের আর জীর্ণশীর্ণ শ্রেণিকক্ষে পাঠ নিতে হবে না। ভবন নির্মাণ কাজ চলায় খুশি শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, ইতোমধ্যেই ভবনটির প্রথম তলার কাজ শেষ হয়েছে। এদিন ছাদ ঢালাইয়ের কাজ করা হয়েছে। এসময় কাজ পরিদর্শনে আসেন উপজেলা প্রকৌশলী মো. দিদারুল আলম, বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি প্রকৌশলী কাজী শাহাদাত হোসেন, বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ সভাপতি জসিম উদ্দিন তালুকদার, স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. কুতুব শাহা প্রমুখ।
উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, কালা গাজীপাড়া স্কুল ছাড়াও রাঙ্গুনিয়ায় আধুনিক মানের আরও ৩টি পৃথক সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণ করা হচ্ছে। তিনটি ইমাম আবু হানিফা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ব্রহ্মোত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং সদর আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাথে এই সাইক্লোন শেল্টারগুলোর নির্মাণ কাজ চলছে। প্রতিটি সাড়ে ৪ কোটিরও অধিক টাকা ব্যয়ে ৩৫৭৯ বর্গমিটার আয়তনের ৩ তলা বিশিষ্ট এই ভবনগুলো করা হচ্ছে। দুর্যোগকালীন সময়ে প্রতি সাইক্লোন শেল্টারের ৩য় তলায় আশ্রয় নিতে পারবে অন্তত ১৩শ মানুষ এবং দ্বিতীয় তলায় রাখা যাবে দুই শতাধিক গবাদিপশু। এছাড়া ভবনটির নিচতলায় সারাবছরই সামাজিক যেকোন বিয়েসহ নানা আচার–অনুষ্ঠান উদযাপন করা যাবে, এজন্য থাকবে একটি স্টেজ এবং স্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য নিয়মিত শ্রেণি কার্যক্রম চালাতে শ্রেণিকক্ষও থাকবে। এছাড়া ভবনে সোলার সিস্টেম ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ব্যবস্থা, ভবন নিরাপদ রাখতে বজ্রপাত প্রতিরোধক ব্যবস্থা এবং থাকবে উন্নতমানের আসবাবপত্র।
উপজেলা প্রকৌশলী মো. দিদারুল আলম জানান, ভবনগুলোর নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। যথাযথ গুণগত মান বজায় রেখে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ভবনগুলোর নির্মাণ কাজ সম্পাদন করা হবে বলে জানান তিনি।