রাঙ্গুনিয়ায় জরিনা বেগম (২৪) নামে এক গৃহবধূকে বালিশ চাপা দিয়ে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) ভোররাতে উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের ঠান্ডাছড়ি নতুন পাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে নিহতের ভাই আব্দুল খালেক বাদী হয়ে রাঙ্গুনিয়া থানায় হত্যা মামলা দিলে পুলিশ অভিযুক্ত স্বামী মো. হাসান ওরফে শাহ আলমকে (৩০) গ্রেফতার করে।
তাদের দু’জনের নিজ বাড়ি রাঙ্গামাটি জেলার লংগদুর মাইনি এলাকায় হলেও বর্তমানে তারা রাঙ্গুনিয়ার রাজানগর ইউনিয়নের ঠান্ডাছড়ি নতুন পাড়ায় ভাড়া বাসায় থাকতেন বলে জানা যায়। স্বামী মো. হাসান লংগদুর মাইনি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড সোনাই গ্রামের মৃত দ্বীন ইসলামের ছেলে।
তাদের প্রতিবেশীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রাতে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ঝগড়া হয়েছিল। এর পেক্ষিতে হাসান তার স্ত্রীকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে বাইরে থেকে ঘরের তালা মেরে দেয়। পরে ঘরের ভিতরে থাকা তাদের ছোট ছেলে কান্না করলে পাশ্ববর্তী ভাড়াটিয়ারা এসে তালা ভেঙে জরিনার মৃতদেহ দেখতে পায়।
পরে তার স্বামী হাসানকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন স্থানীয়রা। মামলার বাদী ও নিহতের ভাই আব্দুল খালেক বলেন, আমার বোনকে ১১ বছর পূর্বে পারিবারিকভাবে হাসানের সাথে বিয়ে দিয়েছিলাম। বিয়ের পর হইতে সে আমার বোনকে শারিরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো।
প্রায় সময় অহেতুক কারণে আমার বোনকে মারধর করতো সে। এই নিয়ে একাধিকবার সালিশ-বৈঠক করা হয়। কিন্তু সে এসবের তোয়াক্কা করতো না। এরই ধারাবাহিকতায় ঘটনার দিন গত ১৪ জানুয়ারি রাত অনুমান ৯টা থেকে ২৫ জানুয়ারি রাত ৩টার মধ্যে যে কোন সময় পরিকল্পিতভাবে আমার বোন জরিনা বেগমকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে বাইরের থেকে তালা মেরে চলে যায়। যা স্থানীয় সাক্ষী সহ আশেপাশের লোকজনের মাধ্যমে জানতে পারি।
ঘটনার সময় রাত ৩টার দিকে ঘরের ভেতর আমার বোনের ছোট ছেলে জাহিদুল ইসলাম (৩ বছর) কান্নাকাটি করলে আশপাশে ভাড়াটিয়ারা ঘুম থেকে উঠে দেখে ঘরের বাহিরে তালা মারা অবস্থায় রয়েছে। বসতঘরের ভিতরে ছোট বাচ্চা কান্নাকাটি করছে।
আশপাশের ভাড়াটিয়ারা আমার বোন এবং তার বড় ছেলে মোজাহিদুলকে (৭ বছর) ডাকাডাকি করলে সে জোরে কান্নাকাটি করে।
একপর্যায়ে আশেপাশের ভাড়াটিয়ারা বসতঘরের বাহিরের তালা ভেঙে আমার বোনের ছেলেদেরকে কোলে নেয় এবং আমার বোন জরিনা বেগমকে মৃত অবস্থায় মাটিতে পড়ে থাকতে দেখে। একপর্যায়ে থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ থানায় নিয়ে যান।
এ ব্যাপারে রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি সাব্বির মোহাম্মদ সেলিম জানান, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয় এবং মময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে৷ উদ্ধারের সময় নিহত জরিনা বেগমের নাক দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিলো। এ বিষয়ে থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। একমাত্র আসামি মো. হাসান ওরফে শাহ আলমকে গ্রেফতার করা হয়।