জ্বালানি তেল সরবরাহ নিয়ে বিপাকে পড়ে যানবাহন ব্যবহার না করতে অনুরোধ জানিয়েছে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ। চারতলা বিশিষ্ট জেলা পরিষদের নিচতলায় পরিষদের যানবাহন রেখে সেগুলোকে ফিতা দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। এতে নোটিশ টাঙানো হয়েছে– জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ থাকায় সকলকে পরিষদের যানবাহন ব্যবহার হতে বিরত থাকতে অনুরোধ করা হলো।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, পরিষদের চেয়ারম্যান, মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী কর্মকর্তা, নির্বাহী প্রকৌশলীর গাড়ি, ছোট–বড় পিকআপ, অ্যাম্বুলেন্সসহ মিলে মোট ১১টি গাড়ি রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। এছাড়া রয়েছে স্পিডবোটও। গত জুলাই থেকে যে দুইটি পাম্প থেকে জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হয়; সেখানে চার মাসের জ্বালানি তেলের টাকা বকেয়া পড়েছে। এতে করে জ্বালানি তেল সরবরাহে অস্বীকৃতি জানায় তারা। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির পর দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন আসে। ৫ আগস্ট থেকেই পার্বত্য তিন জেলা পরিষদের বেশিরভাগ চেয়ারম্যান–সদস্যরা এখনো রয়েছেন আত্মগোপনে। শেখ হাসিনা সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির পর আর্থিক কার্যসম্পাদনের ক্ষমতা রাখায় তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ। তবে দেশের ৬১ জেলায় জেলা পরিষদে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হলেও পাহাড়ের তিনটিতে দেয়া হয়নি। পরবর্তীতে চলতি (অক্টোবর) মাসে কর্মচারীদের বেতন–ভাতা পরিশোধ ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তাকে ক্ষমতা দেয়া হলেও আর্থিক ক্ষমতা দেয়া হয়নি।
জেলা পরিষদ সূত্রে আরও জানা গেছে, ৫ আগস্ট বিগত সরকার ক্ষমতাচ্যুত হলেও গত জুলাই মাস থেকে জেলা পরিষদের জ্বালানি তেল সরবরাহ বিল বকেয়া আছে। জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত বকেয়ার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১২ লাখ টাকা। অন্যান্য সময়ে মাসিক প্রায় ৫ লাখ টাকা করে জ্বালানি বাবদ খরচ হলেও বিগত চার মাসে পরিষদের কার্যক্রম সীমিত থাকায় খরচ কিছুটা কম হয়েছে। আর্থিক ক্ষমতা না থাকায় চার মাসের জ্বালানি বিলের বকেয়া আটকে তেল সরবরাহে অস্বীকৃতি জানিয়েছে পাম্প। এ অবস্থায় ১ নভেম্বর (শুক্রবার) থেকে পরিষদের যানবাহন ব্যবহার না করতে ৩১ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) এ অনুরোধ জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা খোন্দকার মোহাম্মদ রিজাউল করিম বলেন, জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত জেলা পরিষদের জ্বালানি তেল সরবরাহ বাবদ ১২ লাখ টাকা বিল বকেয়া রয়েছে। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বকেয়া পরিশোধ না করায় জ্বালানি সরবরাহে অপারগতা প্রকাশ করেছে। তাই ১ নভেম্বর থেকে পরিষদের যানবাহন ব্যবহার না করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। আজ (বৃহস্পতিবার) এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পরিষদের নিজস্ব ১১টি যানবাহন রয়েছে।