রাঙামাটির ১১ বেইলি সেতু ঝুঁকিপূর্ণ

| শনিবার , ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ at ১০:১০ পূর্বাহ্ণ

বিজয় ধর, রাঙামাটি

পার্বত্য জেলা রাঙামাটিতে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে ১১টি বেইলি সেতু। রাঙামাটি সড়ক বিভাগের অধীনে ১৮টি বেইলি সেতু রয়েছে। এর মধ্যে ৭টি বেইলি সেতু অপসারণ করে কংক্রিটের সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে। অবশিষ্ট ১১টি বেইলি সেতুকে যদি কংক্রিটের সেতু নির্মাণ করা যায় তাহলে রাঙামাটিকে বেইলি সেতুমুক্ত জেলা ঘোষণা করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগ।

রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটি সড়ক বিভাগের অধীনে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুগুলো হলো রানীর হাটকাউখালী সড়কের ২টি, ঘাগড়াবড়ইছড়িবাঙালহালিয়াবান্দরবান সড়কে ১টি, মানিকছড়িবগাছড়িলংগদু সড়কে ৬টি, বাঙ্গালহালিয়ারাজস্থলী সড়কে ২টিসহ মোট ১১টি বেইলি সেতু ঝুঁকির্পণ অবস্থায় আছে। বাকী ৭ টি সেতু নির্মাণাধীন রয়েছে।

সরেজমিনে নানিয়ারচর ও কাউখালী উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, অনেকগুলো বেইলি সেতুতে নেই সেতুর পাটাতন। আবার কোনো কোনো সেতুর নীচ থেকে মাটি সরে গেছে এবং অনেক পুরোনো একেবারেই জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন যানবাহনসহ পথচারী যাতায়াত করছেন। এই ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি সেতু পরিবর্তন করে কংক্রিটের বা পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানান স্থানীয় এলাকাবাসী।

রাঙামাটির নানিয়ারচরের বাসিন্দা ও উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক রিপন দাশ বলেন, নানিয়ারচর উপজেলায় মোট ৬টি বেইলি সেতু রয়েছে। এরমধ্যে ৪টিই খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এগুলো যদি পরিবর্তন করে গার্ডার বা পাকা সেতু নির্মাণ করা হলে নানিয়ারচরবাসী খুবই উপকৃত হবে।

নানিয়ারচর উপজেলার সাবেক্ষ্যং ইউনিয়নের বাসিন্দা সতীশচন্দ্র চাকমা জানান, তাদের ইউনিয়নে যে বেইলি সেতুটি রয়েছে সেটির পাটাতন ভেঙে গেছে। অনেক যানবাহনের দুর্ঘটনাও ঘটেছে, মানুষও আহত হয়েছে এবং বর্ষাকাল আসলে সেতুটি পানিতে তলিয়ে যায়। এলাকার মানুষের যাতায়াত করতে খুবই কষ্ট হয়।

সাবেক্ষ্যং এলাকার বাসিন্দা প্রদীপ কিশোর চাকমা বলেন, এখানকার ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি সেতুগুলো সরিয়ে নতুনভাবে পাকা সেতু নির্মাণ করলে তাদের যাতায়াতসহ মালামাল নিয়ে যেতে সুবিধা হবে। তাই বর্তমান সরকারের কাছে নতুন সেতু নির্মাণের দাবি জানান তিনি।

এদিকে, রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার বাসিন্দা ও গাড়ির চালক আবদুল্লাহ আল নোমান, বেইলি সেতুগুলো অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মালমাল পরিবহন করতে হয়। কারণ যেকোনো সময় দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।

রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী রবিউল আওয়াল জানান, রাঙামাটি একটি পাহাড়ি অঞ্চল। এখানে অনেক ছড়া রয়েছে। তাই বেইলি সেতুর সংখ্যাও বেশি। চট্টগ্রামের জোনের আওয়তায় যে কয়েকটি বেইলি সেতু আছে, তা একসাথে বেইলিমুক্ত করার জন্য ডিপিপি করা হচ্ছে। রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা জানান, রাঙামাটি সড়ক বিভাগের অধীনে ৬টি সড়ক রয়েছে। এই সড়কের দৈর্ঘ্য প্রায় ২৩২ কিলোমিটার। এরমধ্যে বর্তমানে ১৮টি বেইলি সেতু রয়েছে। বর্তমান সরকারের উদ্যোগে ১৮টির মধ্যে ৭টি বেইলি সেতু নির্মাণাধীন রয়েছে এবং বাকী ১১টি বেইলি সেতুকে পাকা করার জন্য ডিপিপি তৈরি করা হচ্ছে। তিনি আরো জানান, এই বেইলি সেতুগুলো পাকা সেতুতে উন্নীত হলে এখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে এবং আত্মকর্মসংস্থান ও পর্যটন শিল্পের বিকাশ বৃদ্ধি পাবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমিয়ানমারে ফিরে যেতে রোহিঙ্গাদের সমাবেশ
পরবর্তী নিবন্ধসাজেকে আগুনে পুড়েছে রিসোর্ট ও বসতঘর