রমজান আসার আগেই বাড়তে শুরু করেছে ছোলা ও চিনির বাজার। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে চিনির দাম বেড়েছে মণপ্রতি ৮০ টাকা। একই সময়ের ব্যবধানে ছোলা মণপ্রতি ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। রমজানের আগে ছোলা ও চিনির বাজার ফের বৃদ্ধির কারণে ভোক্তাদের কপালে ভাঁজ পড়তে শুরু করেছে। গতকাল খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে পাইকারিতে প্রতি মণ (৩৭ দশমিক ৩২ কেজি) চিনি বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৯৪০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে যা ছিল ৩ হাজার ৮৬০ টাকা। এছাড়া এক সপ্তাহ আগে ছোলা বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৭০০ টাকায়। বর্তমানে মণে ১০০ টাকা বেড়ে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৮০০ টাকায়।
খাতুনগঞ্জের একজন চিনি ব্যবসায়ী বলেন, বর্তমানে চিনির বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে দেশের শীর্ষ দুই ব্যবসায়ী গ্রুপ। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়েছে এটি যেমন ঠিক, আবার চিনির বাজারে সরকারের তেমন নিয়ন্ত্রণ নেই–এটিও ঠিক। চিনির বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের উচিত হবে রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলগুলোকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে গড়ে তোলা। অপরদিকে ছোলার বাজারও রয়েছে গুটিকয়েক ব্যবসায়ীর হাতে। তাই রমজানের চাহিদাকে কাজে লাগিয়ে এখন থেকে দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করছেন তারা।
খাতুনগঞ্জের কয়েকজন চিনি ব্যবসায়ী জানান, খাতুনগঞ্জের বাজারে পণ্য বেচাকেনা ও লেনদেনে যুগ যুগ ধরে কিছু প্রথা চালু আছে। নিজেদের সুবিধার অনেক প্রথা আছে যেগুলো আবার আইনগতভাবে স্বীকৃত নয়। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) স্লিপ। চিনি বা অন্য কোনো পণ্য কেনাবেচায় ডিও বেচাকেনার মাধ্যমে বিভিন্ন আগাম লেনদেন হচ্ছে। দেখা যায়, পণ্য হাতে না পেলেও ওই স্লিপটি বেচাকেনা হচ্ছে। কোনো কোম্পানি বাজার থেকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্যের ডিও কিনে নেয়। যে দরে ডিও কেনা হয়, তার বাজারদর যদি বেড়ে যায় তখন পণ্যটি ডেলিভারি দিতে তারা গড়িমসি করে। আবার দেখা যায়, কোম্পানির পণ্যই আসেনি, কিন্তু ডিও কিনে রেখেছেন অনেক বেশি। এর ফলেও কোম্পানি বাজারে পণ্য ডেলিভারি দিতে পারে না। ফলে এসব পণ্যের দামও নিয়ন্ত্রণে থাকে না। এক্ষেত্রে চিনির ডিও বেচাকেনা বেশি হয়।
চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন আজাদীকে বলেন, বাজারে চিনির সরবরাহ ঘাটতির কারণে দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। সরবরাহ স্বাভাবিক হলে দাম কমে যাবে। এছাড়া এখন কেবল অস্ট্রেলিয়ার ছোলা রয়েছে। সামনে মিয়ানমারসহ আরো বিভিন্ন দেশ থেকে ছোলা আসবে। তখন দাম উল্টো কমে যাবে।