রঙে ভরা বৈশাখ বাঙালির জনজীবনে নিয়ে আসে নতুন বারতা, নতুন উদ্দীপনা। পুরনো বছরের সমস্ত না পাওয়া ভুলে নতুনের আগমনে আনন্দময় গতিতে পথচলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে উল্লাসে মেতে উঠি সকলে মিলে। নববর্ষের উৎসব যেন বাঙালির প্রাণের উৎসব। গ্রামের পল্লীবধুরা মেতে উঠে খই, মুড়ি, মুড়কি, নাড়ু আর বাঙালির ঐতিহ্য সংস্কৃতির বিভিন্ন পর্ব নিয়ে। চৈত্রের শেষ দিনে চৈত্র সংক্রান্তি উৎসব পালন করা হয়। নানা পদের সবজি দিয়ে পাঁচন রান্না করা হয়। দোকানে দোকানে হালখাতা খোলা হয় লাল মলাটের খাতা দিয়ে। দোকানিরা ক্রেতাদের মিষ্টি মুখ করান এবং হিসাব হাল নাগাদ করেন। আবহমান বাংলার বর্ষ বরণের রীতির সঙ্গে অঙ্গাঅঙ্গিভাবেই জড়িত এই হালখাতা উৎসবটি। নতুন কাপড়ের সাথে বাহারি রেশমি চুড়ি ,খোঁপায় ফুল আর আলতা পায়ে রমনীরা নিজেকে সাজিয়ে তোলে নতুন করে। ছেলেরা সাজে রঙ বাহারি পাঞ্জাবিতে। শিশুরা মেতে উঠে ভুভুজোলা বাঁশির সুরে। বৈশাখী মেলা থেকে কিনে নেয়া বাহারি মুখোশের আড়ালে নিজেকে খুঁজে পায় নতুন রূপে। এক কথায় সব বয়সী মানুষের মাঝে বিরাজ করে উৎসবের আমেজ। যুগ যুগ ধরে বাংলা নববর্ষ উদযাপনের এই ধারা অব্যাহত রয়েছে বাঙালির জীবনে। আমরা বাঙালি এটাই আমাদের গর্ব। আমরা ভেদাভেদ ভুলে এক হই এই আয়োজনে। বৈশাখের সকালে পান্তা ইলিশ খাওয়ার ধুম পড়ে যায় ঘরে ঘরে। নতুন বছরে নতুন করে যেন জেগে উঠি জীবনের জয়গানে। বৈশাখ তোমার আগমনে মনে জেগেছে আশা,/ তোমার তরে আজি শত বন্দনা/ তোমার প্রেমপরশে ভরিয়ে দাও বিশ্ব, মন খারাপের সূর্য হোক অস্তমিত/ শুভ নববর্ষ, শুভ নববর্ষ ।