বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ
আপনার জয়েন্টে, হাতে-পায়ে বা কোমরে কোনও ব্যাথা, নখ ভেঙে যায়, দাঁতের সামগ্রিক স্বাস্থ্য সমস্যা হলে বুঝতে হবে হাড়ে ক্ষয় শুরু হয়ে গিয়েছে। বেশি দেরি না করে এখনই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। নিয়ম মেনে চললে রোগ প্রতিরোধ সম্ভব। চিকিৎসার পাশাপাশি প্রতিদিনের খাদ্যতালিকার মাধ্যমে অন্তত ৭০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম শরীরে যাওয়া দরকার। দুধ, দই, পনির, ডিম, বাঁধাকপি, ঢেঁড়শ, ব্রকোলি, বাদাম ইত্যাদি খাদ্য তালিকায় রাখতে পারলে খুব ভালো হয়।
ভিটামিন ডি-র জন্য আপনার কোনও বিশেষ সাপ্লিমেন্টের দরকার আছে কিনা, সেটা ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে জেনে নেবেন। অবশ্যই ২০ মিনিট গায়ে রোদ লাগাবেন।
নারীদের হাড়ের স্বাস্থ্য খারাপ হতে আরম্ভ করে ৪০ পেরনোর পর থেকেই। ঠিক কী করলে হাড় সুস্থ থাকবে?
মহিলা-পুরুষ নির্বিশেষে সব মানুষেরই হাড়ের গঠন শুরু হয় গর্ভাবস্থা থেকে। সেই সময়ে মা কী খাবার খেয়েছেন তা কতটা পুষ্টিকর ছিল, কতটা ক্যালসিয়াম ও ভিটামিনের দেয়া হয়েছে শরীরে, তিনি নিয়মিত ব্যায়াম করেছেন কিনা ইত্যাদি নানা বিষয়ের উপর নির্ভর করে সন্তানের হাড়ের গঠন কেমন হবে। গর্ভাবস্থায় মা সুস্থ থাকলে বাচ্চার স্কেলিটনের গঠনও ভালো হয়, পরবর্তীকালে শিশুটি মজবুত হাড়ের মালিক হয়। এই খাবারগুলো হাড় ক্ষয় প্রতিরোধ করে। সাধারণত চল্লিশের পর অস্টিওপরোসিস বা হাড় ক্ষয়রোগ শুরু হয়। এই রোগের নারীদের বেশি ভুগতে দেখা যায়। নারীদের মেনোপজের পর এই সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ অবস্থায় হাড় দুর্বল ও ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। হাড় শক্তিশালী বা মজবুত হলে অস্টিওপরোসিস প্রতিরোধ করা যায়।
১. দই- দই ভিটামিন-ডি’র ভালো উৎস। প্রতিদিন এক কাপ দই শরীরের ক্যালসিয়ামের চাহিদার অনেকটাই পূরণ করে; হাড়কে শক্তিশালী করে। ২. দুধ- ক্যালসিয়ামের একটি চমৎকার উৎস দুধ। নিয়মিত দুধ খেলে হাড়ের ঘনত্ব কমে যাওয়ার আশঙ্কা কমে। দুধ খেলে শরীরে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিনের চাহিদার অনেকটাই পূরণ হয়। ৩. কাঠবাদাম- প্রতিদিন আধা কাপ কাঠবাদাম খেলে দৈনিক ক্যালসিয়ামের ১৮ ভাগ পূরণ করে। এটি কেবল হাড় মজবুতই করে না, এটি ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং হার্টকে ভালোও রাখে। ৪. ব্রকলি- ব্রকলির মধ্যে উচ্চ পরিমান ভিটামিন-কে ও ক্যালসিয়াম রয়েছে।
এটি হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ব্রকলি রাখলো হাড় ক্ষয় প্রতিরোধ করা যায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। ৫. কমলার রস- কমলার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন-সি। এতে হাড় শক্তিশালী করার উপাদান ক্যালসিয়ামও রয়েছে। এটি হাড়ের গঠনে কাজ করে। দৈনিক ক্যালসিয়ামের চাহিদার ৬ ভাগ পূরণ করতে পারে একটি কমলা।