যে অভিযোগ জানালেন রোগীরা যে আশ্বাস দিলো কর্তৃপক্ষ

জেনারেল হাসপাতালে সনাক-টিআইবির গণশুনানি

আজাদী ডেস্ক | বৃহস্পতিবার , ৫ অক্টোবর, ২০২৩ at ৫:৩৫ পূর্বাহ্ণ

স্বাস্থ্যসেবা খাতে চাই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা’ এই স্লোগানে গতকাল বুধবার দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক সংগঠন সনাকটিআইবি মহানগরের উদ্যোগে স্বাস্থ্যসেবায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি এবং হাসপাতালের সেবার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে গণশুনানি শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে সেবাগ্রহীতাদের নিয়ে এই গণশুনানির আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সেবাগ্রহীতাদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে জেনারেল হাসপাতাল, চট্টগ্রাম কর্তৃপক্ষ সেবার মান উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি সম্ভাব্য সব ধরনের কার্যক্রম বাস্তবায়নের পক্ষে অঙ্গীকার করেন।হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বির সভাপতিত্বে এবং সনাকটিআইবি মহানগরের সদস্য অধ্যাপক সঞ্জয় বিশ্বাসের সঞ্চালনায় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি। কর্মসূচির উদ্দেশ্য শেয়ার করেন টিআইবি চট্টগ্রামের ক্লাস্টার কোঅর্ডিনেটর মো. জসীম উদ্দীন। সম্মানিত অতিথি ছিলেন সনাক চট্টগ্রাম মহানগরের সদস্য ডা. কিউ এম অহিদুল আলম, জেসমিন সুলতানা পারু, সঞ্জয় বিশ্বাস ও এসএম ফরহাদ উল্লাহ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পক্ষে সেবাগ্রহীতাদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন ডা. এ এস এম লুৎফুল কবির, ডা. র্‌ওশন আরা বেগম ও ডা. গোলাম মোস্তফা জামাল।

উপস্থিত ছিলেন সেবা তত্ত্বাবধায়ক রেশমী দাস, নার্স মনোয়ারা বেগম, চায়না শীল প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সেবাগ্রহীতাগণ হাসপাতালে সেবা নিতে এসে যে সব সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন সেসব বিষয় কর্তৃপক্ষকে সরাসরি প্রশ্ন করার মাধ্যমে সমাধান কামনা করেন। রোগীদের উত্থাপিত সমস্যাসমূহ ছিল হাসপাতালে সার্বক্ষণিক পানির সরবরাহ না থাকা ও আইসিইউ রোগীর স্বজনদের জন্য রেষ্ট রুমের ব্যবস্থা করা, বিকেলে ও রাত্রে ডিউটি ডাক্তার না থাকা, ডেঙ্গু রোগীদের জন্য মশারি সহ অন্যান্য ব্যবস্থা থাকলেও রোগীর স্বজনদের ডেঙ্গু প্রতিরোধের জন্য কোন ব্যবস্থা না থাকা, শিশু ওয়ার্ডে পালস, প্রেশার ও নেবুলাইজএর জন্য নার্সদের অসহযোগিতা এবং হাসপাতালের ইনডোরে ফার্মেসীর ব্যবস্থা করা। সেবাগ্রহীতাদের এসব প্রশ্নের জবাবে কর্তৃপক্ষ বলেন, হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীরা আমাদের অতিথি, তাদের উন্নত সেবা প্রদান করা আমাদের কর্তব্য মনে করি। হাসপাতালে অনেক সীমাবদ্ধতার মাঝেও রোগীদের ভালো সেবা দিতে আমরা তৎপর রয়েছি। ২৫০ শয্যার হলেও ১০০ শয্যার লোকবল নিয়ে হাসপাতালে সেবা দিতে নিয়মিত হিমশিম খেতে হচ্ছে। এই হাসপাতালে প্রায় দু’শতাধিক রোগী নিয়মিত ভর্তি থাকে। ফলে আন্তরিকতা থাকা স্বত্বেও রোগীদের চাহিদা অনুযায়ী সেবা দেয়া সবসময় সম্ভব হয়ে উঠছেনা। এছাড়াও বিভিন্ন অবকাঠামোগত সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে ওয়াসা, পিডব্লিউডিসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানে বারবার তাগাদা দেয়া সত্বেও পর্যাপ্ত ও দ্রুত সহযোগিতা পাওয়া যায় না। কর্তৃপক্ষ বলেন, রোগীদের যত্রতত্র ময়লা ফেলা এবং পর্যাপ্ত পরিচ্ছন্নতা কর্মী না থাকায় এতোবড় হাসপাতালের সঠিকভাবে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করা স্বল্প সংখক পরিচ্ছন্নতা কর্মীর পক্ষে সবসময় সম্ভব হয় না।

সভাপতির বক্তব্যে ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, এ হাসপাতালের ডাক্তারসহ সকলেই সবসময় আন্তরিক থাকে রোগীদের ভালো সেবা দেয়ার জন্য। আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতার মাঝেও আমরা সাধ্যের সবটুকু দিয়ে সেবা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। সনাকটিআইবি’র সহযোগিতায় আমরা নিয়মিতভাবে রোগিদের কথা শুনছি এবং সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করছি। তিনি সেবার মান উন্নয়নে নাগরিক সমাজ ও রোগীদের সহযোগিতা কামনা করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতাহের-মনজুর কলেজে ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) মাহফিল
পরবর্তী নিবন্ধবুড়িশ্চর জিয়াউল উলুম কামিল মাদরাসায় দোয়া মাহফিল