যেভাবে ইরানের ক্ষমতাসীনদের জবাব দিলেন নোবেলজয়ী নার্গিস

| শনিবার , ৭ অক্টোবর, ২০২৩ at ১১:০২ পূর্বাহ্ণ

ইরানের কারাবন্দি মানবাধিকারকর্মী ও আইনজীবী নার্গিস মোহাম্মাদি নোবেল জয়কে দেশটির কট্টর ইসলামপন্থী শাসকগোষ্ঠীর জন্য উপযুক্ত জবাব এবং সরকারবিরোধী আন্দোলনকারীদের প্রেরণা হিসেবে দেখছেন আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষকরা। ইরানের ক্ষমতাসীনরা যে তার নোবেলজয়ে বিন্দুমাত্র খুশি নয়, তাও ইতোমধ্যে স্পষ্ট।

শান্তিতে নোবেল দেওয়া শুরু হয়েছে ১৯০১ সাল থেকে। শুরু থেকেই নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি এই পুরস্কার প্রদান করে আসছে। ১৯০১ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত শান্তি ও মানবতা সংক্রান্ত বিভিন্ন খাতে অবদানের জন্য নোবেল জয় করেছেন মোট ১০৪ জন। চলতি বছর ১০৫ তম ব্যক্তি এবং ১৯তম নারী হিসেবে শান্তিতে নোবেল পেলেন নার্গিস। ইরানের মানবাধিকার রক্ষার সংগ্রামে বছরের পর বছর ধরে আপসহীন অবস্থান ধরে রাখার স্বীকৃতি হিসেবে নার্গিস মোহাম্মাদি ২০২৩ সালের নোবেলের জন্য মনোনীত করেছে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি। গতকাল শুক্রবার সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে চলতি বছরের নোবেলজয়ীর নাম ঘোষণার সময় নার্গিসকে ইরানের সামপ্রতিক সরকারবিরোধী আন্দোলনের ‘অবিসংবাদিত নেতা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন নোবেল কমিটির প্রধান বেরিত রেইসঅ্যান্ডারসেন। তাকে অবিলম্বে কারাগার থেকে মুক্তি দিতে ইরানের ক্ষমতাসীন শাসকগোষ্ঠীকে আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। বেরিত রেইস অ্যান্ডারসেন বলেন, গত বছর ‘নারীজীবনস্বাধীনতা নামে যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন নার্গিস, তা ইতোমধ্যে ইরানে বৈষম্য ও নিপীড়নের শিকার লাখ লাখ নারীর প্রতিবাদের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠেছে। এ পুরস্কার সেই আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা নার্গিস মোহাম্মাদি সংগ্রামী জীবনের সর্বপ্রথম আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। যদি ইরানের সরকার সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়, সেক্ষেত্রে তারা নার্গিসকে মুক্তি দেবে এবং তিনি যেন এই পুরস্কার গ্রহণ করতে এখানে আসতে পারেন সেজন্য সহযোগিতা করবে। তবে ইরানের ক্ষমতাসীন কট্টর ইসলামপন্থী সরকার যে নার্গিসের নোবেলজয়ে সন্তুষ্ট নয়, তা বলাই বাহুল্য। শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে ইরানের কোনো সংবাদমাধ্যম নার্গিস মোহাম্মাদির নোবেল জয়ের সংবাদ প্রকাশ করেনি। বেশ কিছুক্ষণ পর দেশটির আধা সরকারি সংবাদমাধ্যম ফার্স এক প্রতিবাদেনে জানিয়েছে, ‘ইরানের জাতীয় নিরাপত্তাবিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য পশ্চিমাদের কাছ থেকে পুরস্কার পেলেন নার্গিস মোহাম্মাদি।’ পেশায় আইনজীবী নার্গিস মোহাম্মদি ইরানের মানবাধিকার সংস্থা দ্য ডিফেন্ডার্স অব হিউম্যান রাইটস সেন্টারের উপপ্রধান। এই সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধানের নাম শিরিন এবাদি, তিনিও শান্তিতে নোবেল পেয়েছিলেন। সামপ্রতিক সরকারবিরোধী আন্দোলনে সংশ্লিষ্টতার জন্য নার্গিসকে ১২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে ইরানের বিচার বিভাগ। বর্তমানে দেশটির এভিন কারাগারে বন্দি আছেন তিনি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধস্ত্রীর নোবেল জয়ের পর যা বললেন স্বামী
পরবর্তী নিবন্ধআনারকলির স্বামী জাহাঙ্গীর ঢাকায় গ্রেপ্তার, পতেঙ্গায় মুণ্ডর খোঁজে অভিযান