বিএনপি নালিশ জানাতে বিদেশিদের দুয়ারে ধরনা দেয়–আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকের এই বক্তব্য উড়িয়ে দিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপি মহাসচিব দাবি করেছেন, দেশের পরিস্থিতি জানতে বিদেশিরাই তাদের ডাকেন।
গতকাল সকালে ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপি দাওয়াত ছাড়াই বিদেশিদের কাছে যায়, নালিশ করতে। এরপর গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদেরকে বলে যে আমরা নাকি বিদেশিদের কাছে যাই। আমরা বিদেশিদের কাছে যাই না। মাঝে মধ্যে বিদেশিরা আমাদের ডাকেন। জানতে চান যে, দেশে কী হচ্ছে? তোমরা কী করছ? এটা স্বাভাবিক যে কোনো দেশ তারা এগুলো জানতে চাইবে আর যারা গণতন্ত্রের বিশ্বাস করে তারা জানতে চাইবে। খবর বিডিনিউজের।
দুপুরে ওই কার্যালয়ে ‘চির ভাস্বর শহীদ জিয়া, জ্যোতির্ময় খালেদা জিয়া, দীপ্তিমান তারেক রহমান’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন মির্জা ফখরুল। অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা নীতির প্রসঙ্গ টেনে সরকারের সমলোচনা করে জনগণের কাছে সরকারে জবাবদিহিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ফখরুল। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ওবায়দুল কাদের সাহেব বলছেন যে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা নীতি করেছে, করুক, আমাদের কিছু যায় আসে না। ভিসা নীতি আমরাও করতে পারি। উত্তর কী দেব বলেন? এখন আপনারাও ভিসা নীতি করেন না দেখি। প্রশ্নটা সেটা না। এটা ভিসা নীতিরও প্রশ্ন না। প্রশ্ন হচ্ছে যে, আপনার বিবেকের প্রশ্ন, জাতির বিবেকের প্রশ্ন, আই একাউন্টেবল টু ইউএসএ না, আই একাউন্টেবল টু মাই পিপল। আমার জনগণের কাছে একাউন্টেবল কি না বলেন… এটাই যথেষ্ট।
গণতন্ত্র নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান তুলে ধরে ফখরুল বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ঘোষিত নীতি হচ্ছে যে, পৃথিবীতে তিনি গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করতে চান। সুতরাং তারা তাদের কাজ করছে। যেখানে গণতন্ত্র নাই, সে কথা বলে দেন, তাদেরকে গণতন্ত্রের সম্মেলনে ডাকেন না, তাদের স্যাংশন–ট্যাংশন কীসব দেন।
বিএনপি মহাসচিবের ভাষ্যে, জনগণ কী বলছে? আমি ভোট দিতে পারছি না। আমার উপর অত্যাচার হচ্ছে, নির্যাতন হচ্ছে, অন্যায়ভাবে আমার কাছ থেকে ট্যাঙ আরোপ করে টাকা নিয়ে চলে যাচ্ছে, কোর্টে গেলে আমি ন্যায়বিচার পাই না। এ বিষয়গুলো আমাদের আজকে বড় সমস্যা করছে।
‘আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাসী কোনো দল নয়’ দাবি করে তিনি বলেন, এরা কী করে গণতন্ত্র দেবে? মানুষ বিশ্বাসই করে না যে এই দলটি নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারে। বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, আমরা মনে করি যে, এখানে জনগণের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, এখানে ভোটের অধিকার দেওয়া হচ্ছে না, মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে।
চট্টগ্রামে ‘তারুণ্যের সমাবেশ’ থেকে ফেরার পথে ছাত্রলীগ–যুবলীগ এবং পুলিশের হাতে ছাত্রদলের এক নারীকর্মী হেনস্তার অভিযোগও করেন বিএনপি মহাসচিব।