ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভাষ্য অনুযায়ী, ১১ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে ভূখণ্ডটিতে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলায় মোট ৯৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আর এ সময় আহত হয়েছেন আরও ৩২৪ জন, মন্ত্রণালয়টির বরাত দিয়ে জানিয়েছে আল জাজিরা। গত ৪৮ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত ১৯ জনের লাশ গাজার হাসপাতালগুলোতে নিয়ে আসা হয়েছে। এসব নিহতের সঙ্গে সাতজন আহতকেও হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়েছে।
যুদ্ধবিরতির মধ্যেই ১৯ অক্টোবর গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফা শহরে এক হামলায় দুই ইসরায়েলি সেনা নিহত হওয়ার পর ফিলিস্তিনি ছিটমহলটিতে একের পর এক বিমান হামলা চালিয়ে ২৬ জনকে হত্যা করে ইসরায়েলি বাহিনী। ওই সময় ইসরায়েল জানিয়েছিল, তারা গাজাজুড়ে হামাসের ফিল্ড কমান্ডার, বন্দুকধারী, একটি টানেল ও অস্ত্র গুদামসহ বিভিন্ন লক্ষ্যস্থলে আঘাত হেনেছে। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে এটি ফিলিস্তিনি ছিটমহলটিতে হওয়া সবচেয়ে প্রাণঘাতী সহিংসতার ঘটনা ছিল। এর আগে ১৭ অক্টোবর গাজার জেতুন এলাকায় এক ফিলিস্তিনি পরিবারকে বহনকারী মাইক্রোবাসে ইসরায়েলি বাহিনীর ট্যাংকের গোলা আঘাত হানলে ওই পরিবারের ১১ জন সদস্য নিহত হন। এর এক সপ্তাহ আগে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে একটি ছিল একক হামলায় একসঙ্গে সবচেয়ে বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার ঘটনা। খবর বিডিনিউজের।
ভূখণ্ডটির চিকিৎসা সূত্রগুলো আল জাজিরাকে জানায়, যুদ্ধবিরতির ১৫তম দিনে ২৫ অক্টোবর, শনিবার সকাল থেকে গাজার বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ছয়জন আহত হন। এদিন ইসরায়েলের নৌবাহিনী গাজা সিটির উপকূলে তিন ফিলিস্তিনি জেলের সব উপকরণ ধ্বংস করার পর তাদের গ্রেপ্তার করেছে বলে ওয়াফা নিউজ জানিয়েছে। ৭ অক্টোবর, ২০২৩ থেকে ইসরায়েল ফিলিস্তিনি জেলেদের সাগরে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এরপরও এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যারা সাগরে মাছ ধরে গেছে তাদের অনেককে গুলি করে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। অন্যদের গ্রেপ্তার বা নির্যাতন করেছে আর তাদের নৌকাগুলো হয় জব্দ করেছে নয়তো ধ্বংস করে দিয়েছে। ওই দিন ইসরায়েলে গাজার শাসক গোষ্ঠী হামাসের আক্রমণের জবাবে ফিলিস্তিনি ছিটমহলটিতে ভয়াবহ হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। হামাসকে নির্মূল করার নামে গাজা ভূখণ্ড ধ্বংস করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয় তারা।
এনজিও হিউম্যানিটি অ্যান্ড ইনক্লুশন এর নিক ওর আল জাজিরাকে বলেছেন, গাজায় ধ্বংসের মাত্রা এত বিশাল যে সেখানে ধ্বংসস্তূপের আনাচে কানাচে কতো মারণাস্ত্র পড়ে আছে তার সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করা অত্যন্ত কঠিন এবং তা করতে ২০ থেকে ৩০ বছর লেগে যেতে পারে। ইরায়েলি বাহিনীর ফেলে যাওয়া স্থল বোমাগুলো অপসারণে আরও উপকরণ দরকার বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলের দুই বছর ধরে চালানো গণহত্যার যুদ্ধে নিহতের সংখ্যা বেড়ে এখন ৬৮ হাজার ৫১৯ জনে দাঁড়িয়েছে, আহত হয়েছেন আরও এক লাখ ৭০ হাজার ৩৮২ জন।












