আমাদের সবাইকেই যে অনার্স মাস্টার্স পাস করে জ্ঞানীর পরিচয় দিতে হবে এমন নয়। তাহলে আমরা জ্ঞান চর্চার পর যে কাজটি করব তা হলো শ্রম বাজারে প্রবেশ। বৈশ্বিক শ্রমবাজারের পরিধি বিশাল। এখানে সুযোগ পাওয়া দক্ষতা থাকলে কঠিন নয়। আমাদের তারজন্য গৎবাঁধা নিয়ম থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। একটি যুগোপযোগী শিক্ষা কারিকুলাম তৈরির দিকে এগোতে হবে। ক্লাস না করে শ্রেণিকর্ম না করে কেবলই পরীক্ষার আগের রাতে পড়ে পাস করে যে শিক্ষার্থীরা শ্রমবাজারে প্রবেশ করবে নিজেকে জ্ঞানী বলে সে কি সত্যি জ্ঞানী! চাকরি পাবার মতন দক্ষতা কি তকর অর্জন হয়েছে? এই দায় কার! জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজগুলোর প্রতিটি বিভাগে গড় শিক্ষক থাকেন চার-পাঁচ জন। এই চার-পাঁচ জন শিক্ষক অনার্স মাস্টার্স পাস কোর্স ইন্টারমিডিয়েট সহ সকল শ্রেণির পাঠদান করতে হয়। তাদের পক্ষে কি এটা সম্ভব! তারাও তো মানুষ। ফলে সদিচ্ছা থাকলেই তাদের পক্ষে সকল শিক্ষার্থীকে সেভাবে সময় দেবার সুযোগ হই না। তার পর রয়েছে শ্রেণি কক্ষের অপ্রতুলতা একটা বা দুইটা শ্রেণি কক্ষে অনার্স চারটি বর্ষ মাস্টার্স পাঁচটি গ্রুপকে কি করে ক্লাস নেবেন? শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন না করে কেবলই সার্টিফিকেটের জ্ঞানী যতদিন বের হবে ততদিন শিক্ষার সাথে চাকরির সাথে মিল পাবেন না। তারপরে শিক্ষার বিষয়গুলোকে যুগোপযোগী করতে হবে। যে বিষয় পড়ে আমার চাকরির বাজারে কোন কাজেই আসবে না সে জ্ঞান দিয়ে কি হবে! মৌলিক পাঠ্যের পাশাপাশি যদি চাকরির বাজার ফলো করে ৫০/৪০% ও বইপত্র সংযোজন করা যায় এই শিক্ষার্থীরা অন্তত বের হয়ে কোন একটি প্রতিষ্ঠানকে সার্ভিস দিতে পারবে। আমাদের কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে এত অর্থ খরচ করার পরও সে শিক্ষার্থীদের যাঁরা চাকরি নামের হীরক খণ্ড পেয়ে যান তাদের দক্ষ করতে গিয়ে কোম্পানিগুলোর কত শত শত কোটি টাকা খরচ হয়তা কি জানা আছে! ফলে অনেক কোম্পানি বাইরের দেশ থেকে ওয়ার্কার নিয়ে আসেন। অথচ আমাদের তরুণরা চাকরির খুঁজে পাগল প্রায়। শিক্ষা কারিকুলামের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রতি অনুরোধ আপনারা বিষয়গুলো নিয়ে ভাবুন। ভাবনার জন্য প্রয়োজনে বড় বড় কোম্পানির কর্তাদের ডাকুন তাদের কি ধরনের গ্রাজুয়েট দরকার সে ধরনের ফর্মুলা তৈরি করুন। অন্যতায় বাংলাদেশের তরুণদের ভবিষ্যত আরো আরো তমিরাচ্ছন্ন হবে।
সিরাজুল মুস্তফা, চট্টগ্রাম।