আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (আইআইইউসি)-এর ট্রেজারার প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেছেন, যুক্তিবাদী মানসিকতা ছাড়া নেতৃত্বের বিকাশ সম্ভব নয়। বিতর্ক শিক্ষার্থীদের চিন্তা, সংলাপ ও সহনশীলতা শেখায়। তরুণদের মধ্যে যুক্তিনির্ভর চিন্তা, বিশ্লেষণী দৃষ্টিভঙ্গি এবং দায়িত্বশীল মতপ্রকাশের মানসিকতা গড়ে তোলা সময়ের দাবি। বিতর্ক প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের সেই দক্ষতা অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
গতকাল শুক্রবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্স ডিভিশনের আয়োজনে আন্তঃক্লাব বিতর্ক প্রতিযোগিতা ২০২৫ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্স ডিভিশনের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোহাম্মদ মামুনুর রশীদ। পুরো অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডিভিশনের অতিরিক্ত পরিচালক চৌধুরী গোলাম মাওলা। এছাড়াও এতে আরও উপস্থিত ছিলেন আয়োজক কমিটির সদস্যরা।
প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান আরও বলেন, আজ আমরা এমন এক সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি, যেখানে তথ্যের প্রাচুর্য থাকলেও সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করা সহজ নয়। বিতর্ক শিক্ষার্থীদের কেবল বক্তব্য দেওয়ার নয়, বরং তথ্য যাচাই, যুক্তি গঠন এবং ভিন্নমত শ্রবণ ও শ্রদ্ধার মানসিকতা তৈরি করে। এটি একাডেমিক উৎকর্ষের পাশাপাশি তাদের নৈতিক চরিত্র গঠনে ও নেতৃত্বের যোগ্যতা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আজকের তরুণরা কেবল আগামী দিনের কর্মী নয়, তারাই হবে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তনের অগ্রদূত। তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হলো চর্চার ক্ষেত্র। শুধু বই–পুস্তকের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা নয়, বরং এখানে জ্ঞান সৃষ্টি হয়, মনন শানিত হয়, মূল্যবোধ দৃঢ় হয়। সেই ভাবনা থেকেই এই আন্তঃক্লাব বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন অতন্ত সময়োপযোগী। এ ধরনের আয়োজন শিক্ষার্থীদের মাঝে দলগত সমন্বয়, সহনশীলতা ও দায়িত্ববোধের বিকাশ ঘটায়। তারা শেখে কিভাবে যুক্তিকে সম্মান করে মত প্রকাশ করতে হয় এবং মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও কিভাবে একে অপরকে সম্মান জানাতে হয়।
প্রতিযোগিতার প্রথম পর্বে ছাত্রদের ১৪টি ক্লাব এবং ছাত্রীদের ১২টি ক্লাব অংশগ্রহণ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও ছাত্রীদের ক্যাম্পাসে তিন সেটে আয়োজিত এই পর্বে মোট ৩৯টি বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি বিতর্কে যুক্তি, দলগত সমন্বয় এবং উপস্থাপনশৈলী মূল্যায়ন করেন আমন্ত্রিত ২১ সদস্যবিশিষ্ট অভিজ্ঞ বিচারক প্যানেল। প্রতিযোগিতার সেমিফাইনাল ও ফাইনাল রাউন্ড এবং পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান পরবর্তীতে অনুষ্ঠিত হবে। এতে চ্যাম্পিয়ন ও রানার–আপ দলের পাশাপাশি, ফাইনাল ম্যাচের শ্রেষ্ঠ বিতার্কিক, পুরো টুর্নামেন্টের শ্রেষ্ঠ বিতার্কিক এবং ৫ জন ‘রাইজিং স্টার’ বিতার্কিককে পুরস্কৃত করা হবে। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।