বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তরুণ উদ্যোক্তা ফাহিম সালেহকে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যানহটনের অ্যাপার্টমেন্টে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় তার সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী টাইরিস ডেভন হসপিলকে ৪০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। গত মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কের সুপ্রিম কোর্ট জুরি ২৫ বছর বয়সী হসপিলের এই সাজার আদেশ দেয় বলে ম্যানহটনের ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির অফিস জানিয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
বাংলাদেশের রাইড শেয়ারিং কোম্পানি পাঠাওয়ের সহ–প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম জোবাইক ও নাইজেরিয়া মোটরবাইক রাইড সেবা গোকাডারও প্রতিষ্ঠাতা। ২০২০ সালের ১৩ জুলাই ম্যানহটনের লোয়্যার ইস্ট সাইডে নিজের বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টে নৃশংসভাবে খুন হন তিনি। হত্যার পর তার লাশ টুকরো টুকরো করে ব্যাগে ভরা হয়।
ওই ঘটনায় তার সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী হসপিলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলার বিচারে নিজেকে নির্দোষ দাবি করলেও হসপিলকে গত ২৪ জুন দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। ম্যানহটন ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির অফিস বলছে, হসপিলকে ২০১৮ সালের মে মাসে সহকারী হিসেবে নিয়োগ করেছিলেন ফাহিম। তার আর্থিক বিষয়গুলো দেখভালের দায়িত্ব পেয়েছিলেন হসপিল। আর্থিক নথিপত্রগুলো নিয়েও তিনি কাজ করছিলেন।
কী হয়েছিল সেদিন : ফাহিম সালেহর জন্ম ১৯৮৬ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবে। সে সময় সেখানেই থাকতেন তার বাবা আহমেদ সালেহ। পরে তারা যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। নিউ ইয়র্ক সিটির অদূরে পোকিপসিতে থাকতে শুরু করেন। তরুণ ফাহিম ২০১৮ সালে মোটর সাইকেলকে ট্যাঙির বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে নাইজেরিয়ায় ‘গোকাডা’, মালয়েশিয়ায় ‘জোবাইক’ এবং ঢাকায় ‘পাঠাও’ রাইড সার্ভিস চালু করেন। ম্যানহাটানভিত্তিক ভেঞ্চার ক্যাপিটল ফার্ম ‘অ্যাডভেঞ্চার ক্যাপিটল’ এর প্রতিষ্ঠাতা–অংশীদার ছিলেন তিনি। প্রতিভাবান এই তরুণ উদ্যোক্তা ২০১৯ সালে ২২ লাখ ডলারে ইস্ট হিউস্টন স্ট্রিটের ওই বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট কেনেন। পরের বছরের ১৩ জুলাই সেই অ্যাপার্টমেন্টেই নৃশংসভাবে খুন হন। সেদিন তার খণ্ড–বিখণ্ড লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পুরো একদিন ফাহিমের কোনো সাড়া না পেয়ে সেদিন ওই অ্যাপার্টমেন্টে গিয়েছিলেন তার বোন। ভেতরে ঢুকে তিনি ভয়ঙ্কর এক দৃশ্য দেখতে পান।