যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের দ্বিধাবিভক্ত নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে সরকারের ঋণসীমা বাড়ানোর প্রস্তাব পাস হয়েছে। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ওয়াশিংটনের ঋণসীমা অস্থায়ীভাবে স্থগিত রাখা হবে। কট্টর রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের তীব্র বাধা সত্ত্বেও ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠদের ভোটে বুধবার বিলটি পাস হয়। রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত হাউজে ৩১৪–১১৭ ভোটে পাস হওয়া বিলটি এখন সেনেটে পাঠানো হবে, যেখানে ডেমোক্র্যাটরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। সেনেটে পাস হওয়ার পর অনুমোদনের জন্য সেটি পাঠানো হবে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের টেবিলে। এবং এসব কাজই হতে হবে আগামী ৫ জুন সোমবারের আগে। না হলে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশটির সরকারকে দেউলিয়া হতে হবে। নিজেদের বিল মেটানোর মত কোনো অর্থ সরকারের হাতে থাকবে না। খবর বিডিনিউজের।
নিম্নকক্ষে বিল পাস হওয়ার পর বাইডেন বলেন, এই ব্যবস্থা আমেরিকার জনগণ এবং আমেরিকার অর্থনীতির জন্য সুখবর। আমি সেনেটকে যত দ্রুত সম্ভব এই বিল পাস করার আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে আমি সই করে এটি আইনে পরিণত করতে পারি। উত্থাপিত বিল অনুযায়ী, ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ঋণ সীমা স্থগিত থাকবে। আগামী দুই বছরের বাজেটে ব্যয় কমানো, কোভিড তহবিলে থাকা অব্যবহৃত অর্থ অন্য খাতে ব্যবহার, জ্বালানিখাতে ব্যয় বৃদ্ধি এবং দরিদ্রদের জন্য খাদ্য সহায়তার বিষয়ে বলা হয়েছে বিলটিতে।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের ঋণ সীমা বাড়াতে গত শনিবার সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্ট বাইডেন এবং রিপাবলিকান নেতা হাউজ স্পিকার কেভিন ম্যাকার্থি সমঝোতার মাধ্যমে বিলটি তৈরি করেন। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী জেনেট ইয়েলেন সমপ্রতি দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ঋণ সীমা বাড়ানো না হলে আগামী ৫ জুন যুক্তরাষ্ট্র সরকার দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে। এমন হলে বাইডেন প্রশাসনের ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
গত মঙ্গলবার কংগ্রেসের বাজেট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিলটির মাধ্যমে আগামী ১০ বছরে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যয় কমবে প্রায় দেড় ট্রিলিয়ন ডলার। সেনেটে উভয় দলের নেতারাই বলেছেন, তারা আশা করছেন সাপ্তাহিক ছুটি শুরুর আগেই তারা বিলটি নিয়ে কাজ শেষ করতে পারবেন। কিন্তু সংশোধনী ভোটের ক্ষেত্রে একটি সম্ভাব্য বিলম্ব বিষয়গুলিকে জটিল করে তুলতে পারে। রিপাবলিকান নেতারা বলেছেন, সেনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা চাক শুমার এবং সেনেটের সংখ্যালঘু নেতা মিচ ম্যাককনেলকে দ্রুত পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে রিপাবলিকান সংশোধনীতে ভোটের অনুমতি দিতে হবে। যদিও শুমার বুধবার বিলটি সংশোধনী ভোটের জন্য পাঠানোর বিষয়টিকে উড়িয়ে দিয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, আমরা কোনো কিছুই হাউজে পুনরায় ফেরত পাঠাতে পারবো না, সহজ এবং সরল কথা। আমাদেরকে অবশ্যই দেউলিয়া হওয়া আটকাতে হবে। বিলটি নিয়ে সেনেটে বিতর্ক এবং ভোটদান কার্যক্রম শেষ হতে আগামী সপ্তাহ শুরু হয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে যদি ১০০ জন সেনেটরের মধ্যে কেউ ধীর গতিতে পাস করার চেষ্টা করেন।