যাওয়ার আগে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ রেখে যাব

চট্টগ্রামে খাদ্য উপদেষ্টা নভেম্বরের শেষ দিকে আমন সংগ্রহ অভিযান অবৈধ মজুদ করলে জানাবেন, ব্যবস্থা নেব

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ৮:৩৯ পূর্বাহ্ণ

খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, আমাদের একটা পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা যতদিন থাকব ততদিন দায়িত্বশীলতার সাথে কাজ করব। দায়িত্ব ছেড়ে যাওয়ার আগে যে পরিমাণ খাদ্য মজুদ থাকা উচিত তার চেয়ে বেশি ছাড়া কম রেখে যাব না। পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ রেখেই আমরা যাব এবং সেইভাবে আমরা পরিকল্পনা সাজাচ্ছি। গতকাল শনিবার নগরীর সার্কিট হাউসের সম্মেলন কক্ষে খাদ্যবান্ধব এবং ওএমএস কর্মসূচি বিষয়ক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে আমাদের প্রায় ১৬ লক্ষ টন চাল মজুদ আছে। গম মজুদ আছে প্রায় ১ লক্ষ টনের মতো। গমবাহী একটি জাহাজ বর্তমানে কুতুবদিয়া বহিঃনোঙরে খালাসের জন্য অপেক্ষমাণ আছে। আমেরিকা এবং রাশিয়া থেকে দুটি জাহাজ আসছে। আমেরিকা থেকে গম কেনার জন্য আরো চুক্তি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, বর্তমানে চালের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ৫০ লাখ থেকে বাড়িয়ে বর্তমানে ৫৫ লাখ পরিবারকে প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল দেয়া হচ্ছে। আগে এই কর্মসূচি শুরু হতো সেপ্টেম্বর থেকে ৫ মাস। এখন শুরু হয়েছে আগস্ট থেকে ৬ মাস। এটার মূল উদ্দেশ্যটা হচ্ছে, এই মানুষগুলো তো বাজারে চাল কিনতে যাবে না। এতে বাজারে সরবরাহটা বাড়ল এবং দামের ওপর প্রভাব পড়বে। আমরা লক্ষ্য করছি সেই প্রভাবটা অলরেডি পড়েছে। দামটা আরো কমলে আমিও খুশি হতাম, আপনারাও খুশি হতেন। কিন্তু যারা চাল উৎপাদন করেন তাদের আক্ষেপ আছে, তারা ন্যায্যমূল্যটা পাচ্ছেন না। সেই দিকটাও আমাদেরকে দেখতে হবে।

আসন্ন নভেম্বরের শেষ দিকে আমন সংগ্রহ অভিযান শুরু হবে জানিয়ে খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, আমরা কিন্তু গত বোরো মৌসুমে দাম আগেরবারের চেয়ে ৪ টাকা বাড়িয়েছি। সামনে আমন মৌসুমেও কৃষককে ইনসেনটিভ দেওয়ার জন্য সরকার কাজ করছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয় যদি না ঘটে এবং ভালো ফলন যদি হয় আমন মৌসুমে আমরা সর্বোচ্চ পরিমাণে ধান, চাল ক্রয় করার চেষ্টা করব। চালটা যাতে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি সংগ্রহ করা যায়, সেজন্য আমাদের নীতিমালায় কোনো বিচ্যুতি আছে কিনা সেটা পুনরায় বিবেচনা করব। উদ্বৃত্ত চালের মজুদ থাকা সত্ত্বেও সিন্ডিকেটের কাছে বাজার জিম্মি কিনাসাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, অবৈধ মজুদ দুই প্রকার হতে পারে, একটা হচ্ছে যদি লাইসেন্স না থাকে, এটাকে ধরা আইনত দায়িত্ব। আরেকটা হচ্ছে লাইসেন্স আছে, কিন্তু তার কতটুকু মজুদ করার ক্ষমতা আছে সেটা নির্ধারণ করা আছে। এর বাইরে যদি মজুদ করে সেটা ধরাও দায়িত্ব। বাজার অস্থিতিশীল করার জন্য কেউ যদি এ ধরনের অবৈধভাবে মজুদ করে আমাদেরকে জানাবেন, আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বাজারে খাদ্য কিনতে মানুষের ৭০ শতাংশ টাকা ব্যয় হচ্ছেসাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, প্রকৃতির সাথে উৎপাদনের একটা সম্পর্ক আছে। এবার দেখেন সবজির দাম বেশি, ৮০ টাকার নিচে কিছু নেই। এটার কারণ হচ্ছে এবারের বৃষ্টিটা কিন্তু অনিয়মিতভাবে হচ্ছে। বৃষ্টি হলে কিন্তু শীতকালীন সবজি সব নষ্ট হয়ে যায়। এরপরও এখানে প্রশাসনের লোকজন আছেন, যাতে বাজার মনিটরিংটা সঠিকভাবে করা হয়, যাতে সিন্ডিকেট বা চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অজুহাতে দাম বাড়াতে না পারে সেদিকে নজর দিতে হবে।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দিনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আবুল হাসনাত হুমায়ুন কবীর।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশারদীয় দুর্গোৎসব শুরু আজ মহাষষ্ঠী
পরবর্তী নিবন্ধচবির ২ কর্মকর্তা বরখাস্ত একজনের ডিমোশন