ময়মনসিংহ শহরে পুরোনো যে ভবন ভাঙা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, সেটি কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষদের না হওয়ার কথা বলছে সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষের বাড়ি, অর্থাৎ তার পিতামহ উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরীর বাড়ি ভেঙে ফেলা হচ্ছে দাবি করে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর সরকারের নজরে এসেছে। আর্কাইভের রেকর্ড পর্যালোচনা করে পুনঃনিশ্চিত হওয়া গেছে, এই বাড়ির সঙ্গে সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষদের কোনো সম্পর্ক নেই।
ইতোমধ্যে ভবনটি অনেকাংশ ভেঙে ফেলার পর এ নিয়ে সমালোচনার মুখে শহরের হরিকিশোর রোডে অবস্থিত একতলা জরাজীর্ণ এ ভবন ভাঙার বাকি কাজ স্থগিত রাখে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসন। এখন সেটির সঙ্গে সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষদের যোগ না থাকায় বৃহস্পতিবার দেওয়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তা ভাঙার কাজ পুনরায় শুরুর ইঙ্গিত পাওয়া যায়। বাড়িটি নিয়ে সরকারি রেকর্ড পর্যালোচনার পাশাপাশি স্থানীয় প্রত্নতাত্মিক গবেষক, সাহিত্যিক ও গণমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে মঙ্গলবার জেলা প্রশাসনের বৈঠকের কথাও তুলে ধরা হয় এ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে। খবর বিডিনিউজের।
বাড়িটির মালিকানার বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কর্মচারীদের থাকার জন্য নিজের ‘শশী লজ’ বাংলোর কাছে এই বাড়িটি নির্মাণ করেছিলেন স্থানীয় জমিদার শশীকান্ত আচার্য চৌধুরী। জমিদারি ব্যবস্থা উঠে যাওয়ার পর এই বাড়ির মালিকানা সরকারের হাতে চলে আসে। সরকার এটাকে বাংলাদেশ শিশু একাডেমির জন্য বরাদ্দ দিয়েছে। তখন থেকে এটি জেলা শিশু একাডেমির কার্যালয় হিসাবে ব্যবহার হয়ে আসছে।
শহরের হরিকিশোর রায় সড়কে অবস্থিত জেলা শিশু একাডেমির অধীনে থাকা পুরাতন একটি ভবন ভাঙা শুরুর পর সংবাদমাধ্যমে খবর আসে, এটি সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষদের বাড়ি। ২০০ বছরের পুরোনো একতলা ভবনটি ভাঙায় সমালোচনার মুখে পড়ে শিশু একাডেমি।
ওই সব খবরে বলা হয়, ময়মনসিংহে কিংবদন্তি চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরষদের একতলা প্রাচীন বাড়িটি শিশু একাডেমি ব্যবহার করত। সরকারি প্রতিষ্ঠানটি গত কয়েক দিন ধরে বাড়িটি ভাঙার কাজ করছে। ভবনটি নগরীর বিএনপির কার্যালয়ের পাশে অবস্থিত। ১৯৮৯ সাল থেকে শিশু একাডেমি ভবনটি ব্যবহার শুরু করে। পরিত্যক্ত ও জীর্ণ ভবনটি একাডেমি কর্তৃপক্ষ ২০১০ সালের পর আর ব্যবহার করেনি। সেই থেকে এটি পড়ে রয়েছে। বাড়িটির সামনে একটি ছোট মাঠ রয়েছে।