রাজধানীর মৌচাকে সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের বেজমেন্ট পার্কিংয়ে একটি গাড়ির ভেতর থেকে দুই জনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে মেডিকেল কলেজের নিরাপত্তারক্ষীরা গাড়ির ভেতর দুজনের মরদেহ দেখে রমনা থানায় খবর দেয়। পরে পুলিশ সেখানে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে বলে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপ–কমিশনার মাসুদ আলম জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা দুজনের লাশ পেয়েছি। একজনের নাম জাকির হোসেন (৪০), আরেকজন মিজান (৪২)। এর মধ্যে জাকিরের লাশ ছিল চালকের আসনে। পাশের আসনে ছিল মিজানের লাশ।’ খবর বিডিনউজের।
সিসিটিভি ফুটেজ ও পারিপার্শিক ঘটনা ‘বিশ্লেষণ’ করে তাদের হাসপাতালে যাওয়ার কারণ জানা গেলেও কীভাবে মৃত্যু হলো, সেটির উত্তর জানতে ‘একটু’ অপেক্ষা করার কথা বলছে পুলিশ।
উপকমিশনার মো. মাসুদ আলম বলেছেন, ৩০ ঘণ্টার বেশি সময় বেজমেন্টে গাড়ির মধ্যে তীব্র গরমে লাশ ‘ডি কম্পোজড’ হয়ে এমন অবস্থা হয়েছে, তাদের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন রয়েছে কিনা, তা প্রাথমিক অনুসন্ধানে বোঝা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘অনেক জিজ্ঞাসা আছে, এসবের উত্তর পেতে দুয়ে–দুয়ে চার মেলাতে একটু সময় লাগবে।’ নিহতদের পরিচয় জানতে প্রথমে গাড়ির নম্বর ‘ঢাকা মেট্রো গ ৩৬–৩৭৪৫’ ধরে খোঁজ চালায় পুলিশ। পরে জানা যায়, গাড়ির মালিক জোবায়ের আহমেদ সৌরভ, যিনি নোয়াখালীর চাটখিলের বাসিন্দা। পরে সৌরভের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, মারা যাওয়া দুজনের একজন জাকির হোসেন, যিনি গাড়িটির চালক। আরেকজনের নাম মিজান। তাদের বাড়িও নোয়াখালীর চাটখিলে। তারা রোববার ভোরে হাসপাতালটিতে এসেছিলেন সেখানে চিকিৎসাধীন এলাকার একজনকে বাড়ি নিয়ে যেতে।
রোগীর স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করার আগেই রোববার ভোরে তারা গাড়িসহ পার্কিংয়ে চলে আসেন। পরের দিন দুপুরে গাড়ির ভেতরে লাশ মেলে তাদের। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও গাড়ি মালিকের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ বলছে, চালক জাকিরের প্রতিবেশী ও চাচাতো ভাই ছিলেন মিজান। দুজনের বয়সই ৪০ থেকে ৪২ বছরের মধ্যে।
পুলিশ বলছে, গাড়িটি ভাড়ায় যাত্রী আনা–নেওয়া করে। হাসপাতালে গাড়ির মালিক সৌরভের এলাকার চিকিৎসাধীন শিশু জোবায়েরকে বাড়ি নিয়ে যেতে যোগাযোগ করা হয়েছিল। এরমধ্যে গাড়ির মালিক সৌরভেরও বিমানবন্দরে কাজ ছিল, তাই সৌরভসহ তিনজন রোববার ভোর ৫টা ৩২ মিনিটে হাসপাতালের সামনে এসে পৌঁছান। এরপর জাকির গাড়ি নিয়ে হাসপাতালের পার্কিংয়ে চলে যান। সৌরভ ও মিজান হাসপাতালের রিসিপশনে এসে কথা বলেন। কথাবার্তা বলে মিজান চলে যান গাড়ির কাছে, আর সৌরভ সেখান থেকে বিদায় নেয়। সিসিটিভি ফুটেজে মিজানের পায়ে হেঁটে গাড়ির কাছে যেতেও দেখা গেছে। সিসিটিভি ফুটেজে মিজানকে গাড়ির কাছে পর্যন্ত যেতে দেখা গেলেও শেষ পর্যন্ত গাড়িতে উঠতে দেখা যায়নি। পিলারের আড়ালে থাকায় সেই অংশটি ক্যামেরায় আসেনি।