মোহামেডান এখন নখ দন্তহীন সার্কাসের বাঘ

ক্রীড়া প্রতিবেদক | মঙ্গলবার , ২১ মে, ২০২৪ at ৯:০১ পূর্বাহ্ণ

একটা সময় ছিল চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনে মোহামেডান ছিল সমীহ জাগানো এক নাম। কি ফুটবল আর কি ক্রিকেট মোহামেডান মানে দুর্দান্ড প্রতাপশালী এক দল। কিন্তু সেই মোহামেডান এখন নখ দন্তহীন সার্কাসের বাঘে পরিনত হয়েছে। কি ফুটবল আর কি ক্রিকেট মোহামেডান যেন এখণ কেবলই নিচের দিকে চলে যাওয়া এক দল। তাই মোহামেডানের সাথে খেলা পড়লে অন্য দলগুলো আর মোটেও চিন্তা করেনা। এই ম্যাচতো হেসে খেলেই জেতা যাবে। তবে প্রতাপশালী মোহামেডান এখন যেন হাসির খোরাক চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনে। যে মোহামেডান ব্লুজ ছিল চট্টগ্রামের ক্রিকেটের প্রান সে মোহামেডান ব্লুজ এখন কোন লেবেলে খেলে সেটা বোধহয় কর্মকর্তারাও জানেনা। আর মোহামেডান গত পাঁচ বছরে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার নেমে গেল প্রথম বিভাগে। তিন বছর আগে প্রথম বিভাগ থেকে প্রিমিয়ারে উঠে এসেছিল। সে বছরই নেমে যেতে পারতো। কিন্তু ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে এফএমসি স্পোর্টস বহিষ্কার হয়ে গেলে সেবার বেঁচে যায় মোহামেডান। গতবারও কোনরকমে বেঁচে যায় প্রথম বিভাগে অবনমন থেকে। তবে এবারে আর শেষ রক্ষা হলোনা। নেমে যেতে হলো মোহামেডানকে।

গতকাল সিটি কর্পোরেশন একাদশ জিতে যাওয়ায় তারা টিকে গেল প্রিমিয়ারে। আর মোহামেডান নেমে গেল প্রথম বিভাগে। দলের কেন এমন অবস্থা সে প্রতিক্রিয়া জানার জণ্যও কাউকে পাওয়া যায়নি স্টেডিয়াম এলাকায়। অথচ দলটির কর্মকর্তারা চট্টগ্রামের ক্রীড়াঙ্গনতো বটেই দেশের ক্রীড়াঙ্গনেরও বড় বড় কর্তা। অথচ সে দলটি কিনা নেমে গেল প্রথম বিভাগে। ক্লাবটির যারা খুব বড় ভক্ত আর যারা ক্লাবটির হয়ে খেলেছেন তেমন অনেকেই গতকাল বলেছেন এবারের লিগে মোহামেডান খেলেছে দত্নক নেওয়া সন্তানের মত। কোথায় দল অনুশীলন করছে, কোন কোন খেলোয়াড় খেলছে, ঢাকার ক্রিকেটার কারা আসছেতা জানতেননা কর্মকর্তারা। অথচ তারা প্রতিনিয়তই স্টেডিয়ামে থাকতেন, আড্ডা দিতেন, সময় কাটাতেন। যদিও ক্লাবটির সাধারন সম্পাদক বলেছিলেন প্রায় ১৪/১৫ লক্ষ টাকার মত তারা খরচ করেছে। কোন কর্মকর্তা টাকা দেয়না। তিনি একা কত টানবেন। আবার লিগে ক্লাবটি যিনি পরিচালনা করেছেন সেই ফিরোজ খান বলেছেন তাকে টাকা না দিলে তিনি ভাল খেলোয়াড় আনবেন কি করে। তিনি নিজে নাকি টাকা খরচ করেছেন ক্লাবের জন্য। এই যখন অবস্থা তখন বুঝতে বাকি থাকেনা কোন পর্যায়ে গিয়ে পৌচেছে ঐতিহ্যবাহি ক্লাবটির বর্তমান পরিস্থিতি। মোাহমেডান ক্লাব পরিচালনার জণ্য বা মোহামেডান ক্লাবে অর্থায়ন করার জণ্য এখন আর মানুষ পাওয়া যায়না। যারা আসেন তারা নাকি মাঝপথে পালিয়ে যান। যদিও তার সঠিক কোন কারন খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে একটা বিষয় এখানে পরিষ্কার, তা হচ্ছে মোহামেডান ক্লাবের কর্মকর্তাদের কাছে এখন ক্লাব যতটানা আপন তার চাইতে বেশি আপন তাদের পদ পদবী। সেটা আকড়ে ধরেন থাকতে পারলেই যেন সব শেষ। ক্লাব জাহান্নামে যাক। মোাহমেডান প্রিমিয়ার থাকলেও যেমন তাদের পদবী থাকবে তেমনি প্রথম বিভাগে গেলেও থাকবে। তাই দলের কি দরকার। কাউন্সিলরতো আছে। আর এভাবে চলতে থাকলে হয়তো এক সময় মুছে যাবে ঐতিহ্যবাহি ক্লাবটির নাম। এমনিতেই এখন মোহামেডান নখ দন্তহীন সার্কাসের বাঘে পরিনত হয়েছে। কে জানে ভবিষ্যতে কোথায় ঠিকানা হয় ক্লাবটির।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে প্রথমবারের মত বসতে যাচ্ছে মহিলা ফুটসাল ফুটবলের আসর
পরবর্তী নিবন্ধরেগু ইভেন্টের সেমিফাইনালে বাংলাদেশ