পুরাতন বছর বিদায় ও নতুন বছরকে বরণে মারমা সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় সামাজিক উৎসব সাংগ্রাই। গতকাল শুক্রবার বিকেলে জেলা সদরের আপার পেরাছড়া এলাকায় সাংগ্রাই উপলক্ষে মৈত্রী পানি বর্ষণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদ। সাংগ্রাইয়ের সবচেয়ে বড় আনুষ্ঠানিকতা মৈত্রী পানি বর্ষণ বা জলকেলির উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা ম্রাসাথোয়ায় মারমা। বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে মৈত্রী পানি বর্ষণে অংশ নিয়েছে তরুণ–তরুণীরা।
উৎসবে অংশ নেয়া তরুণী ডলিপ্রু মারমা ও মেমাচিং মারমা বলেন, আমরা সারা বছর এই উৎসবের অপেক্ষায় থাকি। এ বছর আমরা বেশ কালারফুল সাংগ্রাই উদযাপন করেছি। কয়েকদিন আগে শোভাযাত্রা হয়েছে। ঐতিহ্যবাহী খেলাধুলায় অংশ নিয়েছি। আজকে আমাদের পানি খেলা (জলকেলি) ছিল। বন্ধুরা মিলে অংশ নিয়েছি। প্রতিবছরই এভাবেই আমরা সাংগ্রাই উদযাপন করতে চাই।
এ সময় মারমাদের নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী গান পরিবেশন করেন মারমা শিল্পীরা। মারমা ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক রুমেল মারমা বলেন, আমরা এখানে বেশ বর্ণাঢ্যভাবে সাংগ্রাই আয়োজন করেছি। প্রায় দুই সপ্তাহব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আজকে কর্নসাট ও মৈত্রী পানি বর্ষণের মধ্য দিয়ে সাংগ্রাইয়ের সমাপ্তি হয়েছে।
বাংলাদেশ মারমা ঐক্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা ম্রাসাথোয়ায় মারমা বলেন, প্রতিবছরের মতো এবার ১৩৮৭ মঘাব্দ (মারমাদে নিজস্ব পঞ্জিকা অনুযায়ী) উপলক্ষ্যে প্রতিবছরের মতো এবার মারমা জনগোষ্ঠী তাদের প্রধান সামাজিক উৎসব সাংগ্রাই উদযাপন করছে। আজকের এই দিনে মৈত্রী পানিবর্ষণ ও ওপেন কর্নসাট অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া গত কয়েকদিন ধরে চলা ঐতিহ্যবাহী ‘দ’খেলা ও ‘আলারি’ খেলায় বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার দেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, মৈত্রী পানি বর্ষণের মাধ্যমে আমরা আজকের এই দিনে আমাদের পার্বত্য জনপদের সকল সম্প্রদায়ের মৈত্রী সুসম্পন্ন হোক। একই সাথে সারা বাংলাদেশের মানুষের মাঝে সম্প্রীতি এবং প্রীতি আরো জোরালো হোক এই প্রত্যাশা রইল। উৎসবের মধ্য দিয়ে নিজেদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের স্বকীয়তা রক্ষার পাশাপাশি পাহাড়ে শান্তি সমপ্রীতির বন্ধন আরো সুদৃঢ় হবে।