চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরীকে এক ট্রাক স্ল্যাব অর্থাৎ ঢাকনি দিয়েছেন সাবেক মেয়র এম মনজুর আলম।
আজ বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকালে নগরীর টাইগার পাসে নগর ভবনের অস্থায়ী কার্যালয়ে ট্রাকভর্তি ঢাকনি নিয়ে হাজির হন তিনি। চট্টগ্রাম নগরীতে খাল-নালায় পড়ে প্রাণহানি ঠেকাতেই তার এই উদ্যোগ। বিডিনিউজ
এরপর তিনি মেয়র রেজাউলের কক্ষে যান। তিনি নগরীতে বিদ্যমান সমস্ত খোলা নালার উপর জরুরিভিত্তিতে ঢাকনি দিতে মেয়রকে অনুরোধ করেন।
মনজুর বলেন, “শহরের নালায় স্ল্যাব নেই। মানুষ পড়ে মারা যাচ্ছে। লোকজন নানা কথা বলছে। শুনলে তো আমারও খারাপ লাগে। তাই গিয়ে সবাইকে বলেছি স্ল্যাব বসাতে ও আলোর ব্যবস্থা করতে।”
বিএনপি থেকে মেয়র নির্বাচিত হওয়া মনজুর বলেন, “মেয়র সাহেবকে বলেছি, আসলে মানুষ চিনে জনপ্রতিনিধিকে। আপনি জনপ্রতিনিধি। জলাবদ্ধতা তো আসলে আপনার কাজ। সিডিএ বা সেনাবাহিনী জলাবদ্ধতা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ঠেলাঠেলি করে লাভ কী? প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের উন্নয়নে হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। সবাইকে তো মিলেমিশে কাজ করতে হবে।”
নিজের কাছে থাকা ১০-১৫ ফুট লম্বা ও তিন ফুট চওড়া ফাইবারের তৈরি এক ট্রাক স্ল্যাব দিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “আপাতত যা আছে, তা বিছিয়ে দিতে বলেছি খোলা নালা-নর্দমায় যাতে মানুষ নিরাপদে হাঁটতে পারে। মেয়র সাহেব আমাকে ধন্যবাদ দিয়েছেন। বলেছেন আমি এগিয়ে আসাতে তিনি খুশি হয়েছেন। তিনি অফিস থেকে আমাকে নিচে পর্যন্ত নিজে এসে এগিয়ে দিয়ে গেছেন।”
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী সেহেরীন মাহবুব সাদিয়া যেখানে নালায় পড়ে মারা যান সেখানে আলো না থাকার বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, “(বৈঠকে) প্রধান প্রকৌশলী এবং বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন ছিলেন, তাদের বলেছি আলোর ব্যবস্থা করতে। একসময় আমিও মেয়র ছিলাম। উনারা সবাই আমার সাথে কাজ করছেন। তাই বলেছি।”
প্রসঙ্গত, গত সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে নগরীর আগ্রাবাদে নবী টাওয়ারের কাছে নাছির ছড়া খালে পড়ে মারা যান সাদিয়া। আগেও এমন কয়েকটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় একে অন্যকে দুষছে নগরের দুই সেবা সংস্থা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (সিসিসি) ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।
২০১০ সালে এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে প্রায় এক লাখ ভোটে হারিয়ে মেয়র হয়েছিলেন মনজুর। আগে তিনি আওয়ামী লীগের হয়ে কাউন্সিলর নির্বাচিত হলেও মেয়র হন বিএনপিতে যোগ দিয়ে।
২০১৫ সালের নির্বাচনে আবার আওয়ামী লীগের আ জ ম নাছিরের কাছেই হারেন তিনি। এরপর তিনি আবার পুরনো দল আওয়ামী লীগে ফিরে যান। গত সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মেয়র প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন মনজুর। তবে মনোনয়ন পান রেজাউল।