হেলপারের চালানো নিয়ন্ত্রণ হারা কন্টেনারমুভার নগরীর পতেঙ্গা এলাকায় পুকুরে পড়ে যাওয়ার ঘটনায় স্বামীর পর স্ত্রীও মারা গেলেন। খুলনার বাগেরহাটের মোড়লগঞ্জ থেকে নববধূকে সাথে নিয়ে চট্টগ্রামে বেড়াতে আসার দিন ঘাতক লরিতে চাপা পড়ে স্বামী। একদিন পর মারা যান স্ত্রী। তাদের ভাগ্নে শিশু সাকিবের লাশ উদ্ধার হয় দুর্ঘটনার ৪ ঘণ্টা পর। বিয়ের তিন মাসের মাথায় হাতের মেহেদির রং মোছার আগে তাদেরকে কাফনে মোড়াতে হলো। লরিটি চালাচ্ছিলেন গাড়িটির হেলপার কামাল হোসেন। তার কাছে কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্সও নেই।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্র জানায়, শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর পতেঙ্গা শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন বাটারফ্লাই পার্কের সন্নিকটে একটি লরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে পুকুরে পড়ে যায়। পুকুরে পড়ার সময় ৬ পথচারী নারী–পুরুষ ও শিশুকে চাপা দেয়। এদের মধ্যে পাঁচজনকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হলেও একজন শিশু নিখোঁজ থাকে। ঘটনার প্রায় চার ঘণ্টা পর রাত ১২টা নাগাদ নাজমুস সাকিব নামের ৮ বছর বয়সী ওই শিশুর লাশ লরির নিচে চাপা পড়া অবস্থায় পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়। চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীনদের মধ্যে রাত দেড়টা নাগাদ মারা যান আসাদুজ্জামান সানি। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শনিবার দুপুরে মারা যান আসাদুজ্জামান সানির স্ত্রী তাসফিয়া (২০)। এছাড়া তাসফিয়ার বড় বোন ও নাজমুস সাকিবের মা নুসরাত জাহান (৩৫), মোহাম্মদ ইমরান (৮) ও নুরুল আমিন (২১) নামে তিনজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পতেঙ্গা থানার ওসি কবিরুল ইসলাম বলেন, সানি ও তাসফিয়ার বাড়ি খুলনার বাগেরহাটের মোড়লগঞ্জে। সম্পর্কে তারা স্বামী–স্ত্রী। কিছুদিন আগে তাদের বিয়ে হয়। শুক্রবার সকালে তারা তাসফিয়ার বোন নুসরাতের পতেঙ্গার নাজিরপাড়ার ভাড়া বাসায় বেড়াতে আসেন। বিকালে সানি ও তাসফিয়া এবং ছেলে নাজমুস সাকিবকে সাথে নিয়ে নুসরাত নেভালে বেড়াতে যান। সড়কের পাশ দিয়ে হাঁটার সময় নিয়ন্ত্রণ হারানো লরির ধাক্কায় তারাসহ মোট ৬ জন আহত হন। তাদের মধ্যে তিনজন মারা গেছেন। ঘটনার ব্যাপারে মামলা হয়েছে। লরির হেলপার কামাল হোসেনকে আটক করা হয়েছে। ময়না তদন্তের পর লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয় বলে গত রাতে পুলিশ জানিয়েছে।