মহেশখালীর মাতারবাড়ীতে মেলায় বেলুন কিনতে এসে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে প্রাণ হারালো ৩ শিশু। এছাড়া এই ঘটনায় আহত হয়েছে আরো ১০ জন। গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় আজিজিয়া মাদ্রাসায় বার্ষিক সভা উপলক্ষে বসা মেলায় এই ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলো- মাতারবাড়ীর মিয়াজীর পাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে আহকাম (১২), বলি পাড়ার বাসিন্দা আজিজুর রহমানের ছেলে এরশাদুর রহমান (১০) ও চকরিয়ার হারবাং ইনানী এলাকার বাসিন্দা বেলুন বিক্রিতার ছেলে আলমগীর (৮)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উপজেলার মাতারবাড়ী আজিজিয়া মাদ্রাসায় দুইদিন ব্যাপী বার্ষিক সভার গতকাল ছিল শেষ দিন। সভা উপলক্ষে পার্শ্ববর্তী মাতারবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মেলা বসে। এতে গ্যাস বেলুন বিক্রি করছিলেন এক বিক্রেতা। এ সময় হঠাৎ বিকট শব্দে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়। এতে আশেপাশে থাকা শিশুরা গুরুতর আহত হয়। এর মধ্যে আহকাম নামের এক শিশু ঘটনাস্থলেই মারা যায়। স্থানীয়রা অন্যান্যদেরকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে প্রেরণ করে। পরে দুই শিশু হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায়। আহতরা হলো, মাতারবাড়ী রাজঘাটের কাইছারুল ইসলামের ছেলে জিহাদুল ইসলাম আব্দুল্লাহ (১২), কালারমারছড়া ইউনিয়নের নুর মোহাম্মদের ছেলে মারুফ (১২), মাতারবাড়ী সিকদার পাড়া ফরিদুল আলমের ছেলে সাদেকুল ইসলাম রাহাত (১৩), একই এলাকার মগডেইলে আব্দুল মান্নানের ছেলে মো. নুরী (১৩), একই এলাকার সিকদার পাড়ার আব্দুল মোনাফ তুহিন (১৪) পশ্চিম সিকদার পাড়ার বদনের ছেলে জয়নাল (১২), একই এলাকার সিকদার পাড়ার জসিমের ছেলে শেকাব উদ্দীন (১৫), শাপলাপুর ষাইটমারার নুরুল হকের ছেলে আক্কাস (১৮) এবং শাপলাপুর জেএমঘাটের কবির আহমদের ছেলে নুরু (১৫)।
এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস। মাতারবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান মাস্টার মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। সহকারী পুলিশ সুপার মহেশখালী সার্কেল জাহিদুল ইসলাম ও মহেশখালী থানার ওসি আব্দুল হাই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী মাতারবাড়ীর ৫নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আব্দুল বারেক জানান, বিস্ফোরণের তোড়ে সিলিন্ডারের আশেপাশে থাকা শিশুরা ৭/৮ হাত দূরে ছিটকে পড়ে। এতে তিন শিশুর হাত-পা এমনকি শরীরের অর্ধেকাংশ ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। নিহত আহকামের মা মুবিন আরা বেগম জানান, তার ছেলে মজিদিয়া হেফজখানায় চার পারা কোরআন হেফজ সম্পন্ন করেছে। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে আহকাম সবার ছোট। তাকে পূর্ণাঙ্গ হাফেজ করাই ছিল তার স্বপ্ন। এখন ছেলে মারা যাওয়ায় তার স্বপ্নই শেষ হয়ে গেল বলে জানান তিনি।