মেরিন একাডেমিতে নৌপরিবহন উপদেষ্টা, বাইরে মেরিন অফিসারদের বিক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার , ৭ অক্টোবর, ২০২৪ at ২:৪৯ অপরাহ্ণ

নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন পরিদর্শনে গেলে বাহিরে বাংলাদেশী মেরিন অফিসারের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ করতে দেখা গেছে।

সোমবার (৭ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় বৈরাগী ইউনিয়নে অবস্থিত বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির গেটে এ বিক্ষোভ করেন অফিসাররা।

এ সময় বিক্ষোভকারীরা বাণিজ্যিক জাহাজ সম্পর্কিত সকল প্রশাসনে বহিরাগতদের হস্তক্ষেপ মুক্ত চান। এ সময় মেরিন অফিসাররা (অবঃ) লিফলেট ধরে রাখতে দেখা যায়। ‘আদার বেপারি জাহাজের খবর, জাহাজি দুনিয়ার রচনা হবে কবর” সহ নানা শ্লোগানে দিতে দেয় তারা।

এ সময় নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) ড. এম সাখাওয়াত হোসেনকে একাডেমির ভারপ্রাপ্ত কমান্ড্যান্ট ক্যাপ্টেন মো. ইবনে কায়সার তৈমুর একাডেমির সার্বিক কার্যক্রম, সমস্যা ও ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন।

নৌপরিবহন উপদেষ্টা বাংলাদেশ মেরিন একাডেমির ক্যাডেটদের প্যারেড পরিদর্শন ও সী-ফেয়ারার্স মেমোরিয়ালের পাশে বৃক্ষরোপণ করেন।

পরে বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘অবকাঠামোগত পুনর্গঠনের মাধ্যমে বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি আধুনিকীকরণ’ শীর্ষক প্রকল্পের চলমান কাজ, লাইব্রেরি ও সিমুলেটর পরিদর্শন শেষে অফিসার্স ক্লাবে মতবিনিময় সভায় যোগ দেন।

এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস এম মুনিরুজ্জামান, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর মাহমুদুল মালেক, নৌবাণিজ্য দপ্তরের প্রিন্সিপাল অফিসার ক্যাপ্টেন সাব্বির মাহমুদ, বাংলাদেশ মাচের্ন্ট মেরিন অফিসার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি ক্যাপ্টেন আনাম চৌধুরী, কে.এস.আর.এম-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক নৌপ্রকৌশলী মেহেরুল করিম, চবক সদস্য ওমর ফারুখ, বিএসসি‘র নির্বাহী পরিচালক প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইউসুফ, নৌবানিজ্য দপ্তরের ক্যাপ্টেন শেখ জালাল উদ্দিন গাজী, বিএসসি‘র জেনারেল ম্যানেজার ক্যাপ্টেন আমীর মো. আবু সুফিয়ান, ক্যাপ্টেন গোলাম সোহরাওয়ার্দী, ক্যাপ্টেন হাবিবুর রহমান, ক্যাপ্টেন জিল্লুর রহমান, নৌ প্রকৌশলী মাহমুদুন নবী, নৌ প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ, বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মিজানুর রহমান প্রমুখ।

বিক্ষোভকারীরা নৌ পরিবহন উপদেষ্টাকে ৪ দফা দাবি জানান। দাবিগুলো হলো- বাণিজ্যিক জাহাজ সম্পর্কিত সকল প্রশাসন নন মেরিনারদের দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে, যারা কেবল রেজিম সরকার এর উদ্দেশ্য সাধনে কাজ করেছে, ফলে চরম অব্যবস্থাপনা, গৃহীত হচ্ছে অবান্তর প্রকল্প, ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে দেশ ও দেশের অর্থনীতি। পূর্বে এই সকল প্রতিষ্ঠান
মেরিনারদের দিয়ে সুষ্ঠভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়েছে, IMO-STCW Convention অনুযায়ী (বাংলাদেশ ১৯৯৫ হতে IMO-STCWএর স্বাক্ষরিত সদস্য) ও বাংলাদেশ শিপিং মন্ত্রনালয় এর প্রজ্ঞাপন ২০১১ থেকে কেবল মাত্র মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স বা ইঞ্জিনিয়ার বৃন্দ মেরিন একাডেমি গুলোর প্রশিক্ষক ও সুপারভাইজার কমান্ড্যান্ট হতে পারবে, সকল একাডেমিতে স্থায়ী প্রশিক্ষক নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে, উল্লেখ্য ২০২২ এর ফেব্রুয়ারী হতে প্রশিক্ষক মেরিনারদের বেতন-ভাতার উদ্দেশ্য প্রনোদিত ভাবে খর্ব করা হয়েছে, যার জন্য স্থায়ী প্রশিক্ষকগন বাধ্য হয়েছে। চাকরি ছাড়তে যা প্রশিক্ষকদের নতুন করে চাকুরীতে যোগদানের ক্ষেত্রে নিয়োজিত করবে, আর উপযুক্ত প্রশিক্ষক থাকাই বাংলাদেশ IMO WHITE LISTED হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করে এবং Australia (AMSA) UK থেকে বাংলাদেশ COC Recognition পেয়েছে। কিন্তু বর্তমানে মেরিন একাডেমি গুলোতে ননমেরিনারদের নিয়োগ হচ্ছে, ক্রমান্বয়ে সেই সংখ্যা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা চলছে ফলে বাংলাদেশ পুনরায় IMO BLACK LISTED ও যোগ্যতা সনদের (COC) অবনমন হওয়ার শঙ্কা তৈরী হয়েছে। ফলে, বাংলাদেশী মেরিনারদের আন্তর্জাতিক বাজার খর্ব ও পাশ্ববর্তী দেশগুলোর সেই সুযোগ গ্রহনের পথ সুগম হচ্ছে।

এ জন্য বর্তমান সরকারের নিকট মেরিন অফিসারদের আবেদন ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের জন্য মেরিটাইম প্রফেশনালদের দিয়ে মেরিটাইম সেক্টরকে ঢেলে সাজিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি ত্বরান্বিত করা এবং বাংলাদেশের মর্যাদা সুপ্রতিষ্ঠিত করার ব্যবস্থা হোক।

পরে মেরিন অফিসারদের সাথে দেখা এসব বিষয় ডিসেম্বরে বিবেচনা করার আশ্বাস প্রদান করেন নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএস আলম পরিবারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
পরবর্তী নিবন্ধচকরিয়ায় বাস-অটোরিকশার সংঘর্ষে শিশু নিহত, আহত ৬