চট্টগ্রামের আদালতগুলোতে সম্প্রতি ১৭৭ জন আইনজীবীকে সরকারি কৌঁসুলি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে শেখ অহিদুল নবী ও কানু রাম শর্মা নামে দুই আইনজীবী প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে নিয়োগ পেয়েছেন। প্যানেল আইনজীবী (সরকারি কৌঁসুলি) হিসেবে নিয়োগ পাওয়া এ দুজনের মধ্যে শেখ অহিদুল নবীর নিয়োগ পাওয়া নিয়ে আদালত পাড়ায় চলছে বিতর্ক। কেননা তিনি ২০২১ সালের ২০ মে মারা গেছেন। মৃত্যুর দেড় বছর পর কীভাবে তিনি সরকারি কৌঁসুলি হলেন তা বুঝতে পারছেন না সাধারণ আইনজীবীরা।
সাবেক মহানগর পিপি ফখরুদ্দিন চৌধুরী আজাদীকে বলেন, কীভাবে মৃত ব্যক্তিকে কৌঁসুলি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, সেটি আমারও প্রশ্ন।
শেখ অহিদুল নবীর ভাই মোহাম্মদুন্নবী শিমুলও চট্টগ্রাম আদালতের একজন আইনজীবী। তিনি বলেন, পুরনো তালিকা অনুসরণ করে হয়তো শেখ অহিদুল নবীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমার ভাই শেখ অহিদুল নবী ২০০৯ সালে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে ছিলেন। সেখান থেকে দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি) হিসেবে নিয়োগ পান। সম্প্রতি যে ১৭৭ জনকে বিভিন্ন আদালতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, সেখানেও তার নাম রয়েছে। অথচ তিনি দেড় বছর আগে মৃত্যুবরণ করেছেন। মৃত্যুর বিষয়টি হয়তো সংশ্লিষ্টরা মন্ত্রণালয়কে
অবহিত করেননি।এ বিষয়ে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এএইচএম জিয়াউদ্দিন আজাদীকে বলেন, গত মে মাসে সর্বশেষ আমরা মন্ত্রণালয়ে তালিকা পাঠিয়েছি। যেখানে শেখ অহিদুল নবীর নাম ছিল না। ১৭৭ জনের মধ্যে শেখ অহিদুল নবীর নাম দেখার পর আমরা বারের পক্ষ থেকে বিষয়টি মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি। আশা করছি, মন্ত্রণালয় তার জায়গায় অন্য আরেকজনকে নিয়োগ দেবে।
পাবলিক প্রসিকিউটর নিয়োগে সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন থাকা প্রয়োজন উল্লেখ করে সাবেক মহানগর পিপি ফখরুদ্দিন চৌধুরী বলেন, দক্ষ–অদক্ষ সবাই কৌঁসুলি হচ্ছেন। প্রভাবশালীরা এ নিয়োগে প্রভাব রাখছেন। তাদের সুপারিশ অনুযায়ীই সবকিছু হচ্ছে। মৃত লোকও ঢুকে পড়ছে। গাইডলাইন থাকলে এটা হতো না।
প্রসঙ্গত, ১৮ ডিসেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল, সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনাল, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল, প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন আদালতে ১৭৭ জন আইনজীবীকে সরকারি কৌঁসুলি হিসেবে নিয়োগ দেয় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।